সুকন্যা পাল, ম্যানেজিং এডিটর, দ্য অফনিউজ, কলকাতা:
রাজ্য সরকার কি ভাবছে তা নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। আপনি চাইলে নিজের উদ্যোগেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে নথিভুক্ত হতে পারেন। এখানে কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হবে না আপনাকে। এমন আশার কথাই শোনালেন পেনশন ফান্ড রেগুলেটরি এন্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি'র প্রাক্তন চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার শ্রীনিবাস ভুসারাপু।
"আয়ুষ্মান ভারত" প্রকল্প, যা সারা দেশে "মোদী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা" নামেও পরিচিত। এটি একটি জাতীয় স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো, দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবনযাপনকারী ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করা। এটি ভারতের বৃহত্তম স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প হিসেবে এখনও পর্যন্ত বিবেচিত হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো বলতে, ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বছরে স্বাস্থ্য সেবা, যেটি একটি পরিবারের জন্য প্রযোজ্য হবে। তাছাড়া আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় সকল সরকারি ও সমস্ত প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হলো, এই প্রকল্পটির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল জনগণের জন্য এই স্বাস্থ্য পরিষেবাটি সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ীও। এই প্রকল্পটি আদতে বিশেষভাবে গরীব ও প্রান্তিক জনগণের জন্য ভীষণ উপকারী, অন্তত যাঁরা সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা খরচ বহন করতে সক্ষম নন, তাঁদের জন্য এটি খুব উপকারী প্রকল্প।
এদিকে রাজ্য সরকার রাজ্যবাসীর জন্য একটি পৃথক স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প চালু করেছে। যার নাম স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প। একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ ঘোষণা, 'পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে চালু রয়েছে। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বীমা যা রাজ্যবাসী স্বেচ্ছায় আপন করে নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের প্রয়োজন নেই এই রাজ্যে।'
মুখ্যমন্ত্রীর এমন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এই বাংলা জুড়ে বিতর্কের আবহ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে রাজ্য সরকার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে। সুতরাং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে এই স্বাস্থ্য বীমা সংক্রান্ত ট্যাগ অফ ওয়ারে পরিস্থিতি এতোটাই জটিল হয়ে উঠছে যে এই রাজ্যের বেশিরভাগই বাসিন্দারা কার্যত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ধন্দেও পড়েছেন অনেকে এই ভেবে যে কি করবেন তাঁরা এমন জটিল বিতর্কিত পরিবেশে।
এই ধন্দ উপশমেই সদর্থক কথা শোনালেন শ্রীনিবাস ভুসারাপু। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, 'এটি একটি সর্বভারতীয় স্তরের সমস্ত নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকার এর উদ্ভাবক। এটা দেশের মধ্যে সব প্রদেশে অবশ্যই আইনুসারে বলবৎ রয়েছে। আপনি এখানে নথিভুক্ত হতে চাইলে কারও ক্ষমতা নেই এটা আটকাবে। তিনি জানান, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ওয়েবসাইট সাইটে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আপনার আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে ওটিপির সাহায্যে আপনি খুব সহজেই এখানে নথিভুক্ত হতে পারবেন কারও সাহায্য ছাড়াই। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "ইতিমধ্যে সারা দেশের পঞ্চাশ কোটি নাগরিক এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে। এই রাজ্যে এমন নথিভুক্তের সংখ্যা এগারো কোটি। আপনি আর অপেক্ষা করবেন না। আজই নিজের প্রচেষ্টায় এই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করুন ছোট্ট একটি নথিভুক্তকরণের মাধ্যমে।"
গত বৃহস্পতিবার ভারত চেম্বার অফ কমার্সের উদ্যোগে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠানের কলকাতা স্থিত দফতরে। সেখানে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বিষয়ে মন্তব্য করেন শ্রীনিবাসবাবু। 'পরিবেশ পরিবর্তনে ও ডিজিটাল রূপান্তকরণে শিল্পভিত্তিক সুরক্ষা সম্ভাবনা' শীর্ষক এই আলোচনায় এই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বিষয়টি উপস্থিত শ্রোতাদের সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে। এছাড়াও এই সভায় অন্যান্য গণমান্যেরা তাঁদের বক্তব্য পেশ করেন।
(www.theoffnews.com Bharat Chamber Of Commerce Ayushman Bharat)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours