সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
একটি শহরের অন্যতম বড় ব্যাঙ্কে একদিন জনৈকা কৌশলা নামে একজন বয়স্কা মহিলা এসে বললেন যে তিনি এই ব্যাঙ্কে কিছু টাকা গচ্ছিত রাখতে চান।
কর্মচারীরা যখন জিজ্ঞেস করলো কী পরিমাণ টাকা তখন তিনি তাদেরকে বললেন যে তিনি দশ লাখের মতো টাকা জমা দিতে চান কিন্তু তার আগে তিনি ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করতে চান।
ম্যানেজার কুশল তৎক্ষণাৎ তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সব প্রশ্নের জবাব দিতে চাইলেন। কথা প্রসঙ্গে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “দশ লাখ তো প্রচুর পরিমাণ টাকা। আপনি কী করেন?”
কৌশলা বললেন, “বিশেষ কিছু না, আমি খালি বাজি রাখি।”
অবাক হয়ে ম্যানেজার বললেন, “বাজি রেখে আপনি এতো টাকা রোজগার করেছেন! অবিশ্বাস্য!”
বৃদ্ধা উত্তরে বললেন, “ওটা এমন কিছু ব্যাপার নয়। এইতো এই মুহূর্তে আমি ১ লাখ টাকা বাজি রাখতে পারি যে আপনি মাথায় একটা পরচুলো পড়ে আছেন।”
ম্যানেজার হো হো করে হেসে ওঠে আর বলে, “না, না, আমি এখনও জোয়ান ছোকরা আর আমি পরচুলো পরি না।”
সঙ্গে সঙ্গে কৌশলা বলে উঠলেন, “তাহলে বাজি রাখতে আপত্তি কিসের?”
ম্যানেজার কুশল ভাবল যে বুড়ির মাথাটা গেছে কারণ সে ১ লাখ টাকা বাজি রাখতে চাইছে আর সে ডাঁহা হারবে কারণ জানি যে আমি পরচুলো পরি না। আমি তাকে সে কথা বলেওছি কিন্তু তা সত্বেও তিনি বেট লড়তে চাইছেন, আর আমি সেই সুযোগটা নেব না কেন…খুব সহজেই টাকাটা পাওয়া যাবে।
ম্যানেজার ১ লাখ টাকা বাজি রাখতে রাজী হয়ে গেল।
কৌশলা তাকে জানালেন, “যেহেতু এটা ১ লক্ষ টাকার মামলা সেইজন্য আমি কাল সকালে ঘড়ি ধরে ঠিক ১০টার সময় আমার উকিলকে সঙ্গে করে নিয়ে আসব আর তার সামনেই বাজির ফলাফল ঠিক করা হবে।”
ম্যানেজার বাধ্য ছেলের মত ঘাড় নেড়ে বলে, “আপনি যেমন ভালো বুঝবেন, ম্যাডাম।”
কৌশলা ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সারা রাত ঘুম এলো না, বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতে সে শুধু ১ লক্ষ টাকা আর বুড়িটার কথা ভাবতে লাগল।
পরদিন সকালে ঠিক দশটার সময় উকিলকে বগলদাবা করে বুড়ি ম্যানেজারের ঘরে ঢুকে তাকে শুধোলেন, “আপনি রেডি তো?”
ম্যানেজার বলল, “একদম…”
কৌশলা বললেন, “এতটা বড় টাকার অঙ্ক আর যেহেতু উকিলও এখানে হাজির আছে তাই আমি নিজে নিশ্চিত হতে চাই যে আপনি সত্যিই কোনও পরচুলো পরে নেই। আমি নিজের হাতে আপনার চুল পরীক্ষা করে দেখব।”
ম্যানেজার এক সেকেন্ডের মধ্যে ভেবে বললেন, “বেশ, তাই করুন…যতই হোক ১ লক্ষ টাকার ব্যাপার।”
মহিলা ম্যানেজারের কাছে এসে তার চুলের মুঠি ধরে কষে টানতে লাগলেন…সেই সময়েই তাঁর সঙ্গে আসা উকিল মশাই দেওয়ালে তার মাথা ঠুকতে লাগল…।
সেই দৃশ্য দেখে কুশল বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করল, “উকিলবাবু ওরকম করছেন কেন?”
কৌশলা নির্বিকার ভাবে উত্তর দিলেন, “সেরকম কিছুই না। ও এইমাত্র বাজিতে হেরে গেল। কাল আমি ওর সঙ্গে ৫ লাখ টাকার বেট লাগিয়েছিলাম যে আজ সকাল দশটায় বোকারো শহরের একটা বড় ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের মাথার চুল মুঠো করে ধরে কষে টান মারব।”
(www.theoffnews.com story)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours