সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
(ইংরেজি অনুবাদ: RAVEN AND THE SEALS. Tsimshian Folk Tales)
(আলাস্কার সিমশিয়ান উপজাতির লোকগল্প)
উড়তে উড়তে দাঁড়কাক একেবারে জলের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা একটা বাড়িতে এসে পৌঁছল যেখানে একজন মানুষ বাস করত।
দাঁড়কাক তাকে বলল, “আমি তোমার বন্ধু হবো।”
লোকটি বলল, “সে তো ভালই।”
এদিকে বাড়িটার সামনের সমুদ্র সৈকত সীল মাছে ভর্তি ছিল। দাঁড়কাক দুই রাত্তিরেই সেগুলোকে সব সাবাড় করে ফেলল। বাড়ির সামনে যত সীল ছিল সেগুলোকেও সব খেয়ে ফেলল। তারপর তার আবার খিদে পেয়ে গেল। দাঁড়কাক লোকটাকে মেরে ফেলল। তারপরে সে তার ক্যানো (শালতি, ডিঙি নৌকা) আর হার্পুনটা নিয়ে মাছ ধরতে বেরল। সে চারটে সীল মাছকে গেঁথে ফেলল। তারপরে সে তীরে ফিরে এল। সেখানে সীল মাছগুলোকে ক্যানো থেকে নামাল আর কাঠ কাটতে শুরু করল। তারপর সে এক জায়গায় আগুন ধরাল আর তার মধ্যে কিছু পাথর ফেলে দিল সেগুলোকে গরম করার জন্য। এরপর সে গরম পাথরের পাঁজার ওপর সীল মাছগুলোকে রাখল। চারটে সীল মাছকে সে ঝলসে নিল আর সেগুলোকে মানকচুর পাতা দিয়ে ঢেকে রাখল।
তারপর দাঁড়কাক পাতার ঢাকা তুলে একটা সীল বের করে আনল। সেটাকে খেল। তারপরে সে হাত বাড়িয়ে আর একটা সীল মাছকে তুলে নিল।
ওর পাশেই একটা কাটা গাছের গুঁড়ি থেবড়ি গেদে বসেছিল। দাঁড়কাক সীল মাছটাকে হাতে তুলে গুঁড়িটাকে দেখিয়ে দেখিয়ে বলল, “গুঁড়িবাবু, খুব হিংসে হচ্ছে আমাকে, না?” তারপরে সে জঙ্গলে উড়ে গেল। নিমেষের মধ্যে গুঁড়ি উঠে পড়ল আর যে গর্তটায় সীল মাছগুলো ভাপে রান্না হচ্ছিল সেই গর্তটার কাছে গিয়ে সটান হাজির হয়ে গেল। গুঁড়ির ঠিক নীচেই ছিল সীল মাছগুলো। তখনই একরাশ কচুপাতা নিয়ে দাঁড়কাক উড়ে ফিরে এল। তার সীল মাছগুলোর কাছে গুঁড়িকে দেখেই সে কা কা করে চীৎকার করে উঠল। তার ভীষণ কষ্ট হলো কারণ তার খুব খিদে পেয়েছিল। তারপরে সে একটা ডাল নিয়ে মাটি খুঁড়তে লাগল। যতক্ষণ সে মাটি খুঁড়ছিল সারাক্ষণ সে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কাঁদতে লাগল। মাংসের একটা কুচি খুঁজে পেয়ে সেটাই সে খেয়ে নিল। কিন্তু সে আর কিছুই করতে পারল না। তারপর থেকে দাঁড়কাক কেবলি কা কা করে কেঁদে বেড়ায় কারণ সে সারাক্ষণ ভুখা থাকে।
(www.theoffnews.com Tsimshian folk tales)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours