দেবর্ষি মজুমদার, সিনিয়র জার্নালিস্ট, বীরভূম:
প্রচার সর্বস্ব যুগে ভারত খ্যাত হওয়ার হাজার ফিকির ও ভঙ্গি। এমন রেকর্ড কিসে না হয়! কেউ দীর্ঘ কেশ রেখে দেশ বিখ্যাত, তো কেউ বা ঘুমিয়ে রেকর্ড করেন। তবে, আঙুল ফুটিয়ে দেশীয় রেকর্ড গড়া খুব একটা শোনা যায় না। আমরা সকলেই জীবনের কোনও না কোনও সময় আঙুল ফুটিয়েছি। রাত্রে আঙুল ফোটালে ঠাকুমারা বলতেন আঙুলে ফু দে। তারপর আর আঙুল ফোটাতে মানা করতেন।
সেই আঙুল ফুটিয়ে এক ভার্সিটি গবেষিকা বিশ্ব রেকর্ড করায় তাজ্জব বনে গেছেন অনেকেই। ১ মিনিটে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ১১৬ বার ফোটাতে পারায় 'ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড' -এ নাম উঠল চৈতালী গড়াইয়ের৷ গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলায় গবেষিকা ছাত্রী সে। বাড়ি বীরভূমে৷ ছোট থেকেই তাঁর এই অভিনব বিষয়টি নজর কেড়েছিল সহপাঠী থেকে শুরু করে পরিজনের৷ তবে চৈতালী জানায়, সে কখনও ভাবেনি এটার জন্য কোনও রেকর্ড হতে পারে৷ মজার ছলে ভিডিও করে ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডের সাইটে পাঠিয়ে দেয় সে৷ আর সেটি মনোনীতও হয়ে যায়৷ ইতিমধ্যে চৈতালীকে একটি স্মারক, শংসাপত্র, কলম, আইকার্ড, মেডেল প্রভৃতি পাঠিয়েছে 'ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড'।
বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার বাসাসপুরের বনগ্রামের বাসিন্দা চৈতালী গড়াই। বিশ্বভারতী থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছে সে৷ বর্তমানে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নিয়ে গবেষণা করছেন। বোলপুরে দিদি বর্ণালী গড়াইয়ের বাড়ি থেকেই পড়াশোনা করেন৷ চৈতালীর কাছ থেকে ও তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সে তাঁর বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুলটি নিজের ইচ্ছে মত ফুটাতে পারেন৷ মিনিটে বেশ কয়েকবার এই কাজ করায় রীতিমতো পারদর্শী চৈতালী। যা আর পাঁচজন মানুষ সচারাচর পারেন না৷ তাঁর এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় সময় মজা, চর্চা, উপভোগ করত সহপাঠীরা ও পরিজন৷ হঠাৎ মজার ছলে চৈতালী ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর সামনে স্টপ ওয়াচ রেখে একটি ভিডিও তৈরি করেন৷ এই ভিডিও তে দেখা যায় সে মাত্র ১ মিনিট ১১৬ বার নিজের বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুলটি ফুটাতে পারছেন৷ এই ভিডিও চৈতালী ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড এর সাইটে নিজের বিবরণ দিয়ে পাঠিয়ে দেন৷ কিন্তু, কেউ কল্পনাও করেননি যে এই বিষয়টি রেকর্ড হতে পারে৷ সমস্ত দিক বিবেচনা করে সদ্য, 'ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড' তাঁর এই বিষয়টি নথিভুক্ত করেছে। যা দেশের মধ্যে একটি অভিনব রেকর্ড৷ বাংলার ছাত্রীকে ১৬ জানুয়ারি 'ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড' -এর তরফ থেকে এই বিষয়ে স্বীকৃতি দেয়। অর্থাৎ, নিজের পায়ের বুড়ো আঙ্গুলটি নিজের ইচ্ছানুসারে ফুটিয়ে অনন্য রেকর্ড গড়লেন চৈতালী৷
চৈতালী বলেন, "আমি কল্পনাও করিনি এটা কোনও রেকর্ড হতে পারে৷ আমি ছোট থেকেই ইচ্ছামত পায়ের আঙ্গুলটি ফুটাতে পারি৷ সবাই মজা পেত এটি দেখে৷ তবে স্যোসাল সাইট ঘাটতে ঘাটতে আমি জানতে পারি বিভিন্ন অভিনব বিষয়ে রেকর্ড হয়৷ আমি মজার ছলেই একটা ভিডিও বানিয়ে ওদের সাইটে আপলোড করে দিই৷ তারপরেই দেখলাম বিষয়টি ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডে নথিভুক্ত হলো৷ আমাকে যাবতীয় মেডেল, সার্টিফিকেট পাঠিয়েছে। খুব আনন্দ হচ্ছে। বাড়ির সকলে, বন্ধুরাও খুব আনন্দিত।"
চৈতালীর দিদি বর্ণালী গড়াই বলেন, "বোনের এই বিষয় আমরা সবাই ওর ছোট অবস্থা থেকেই জানি৷ ও নিজের পড়তে পড়তে নিজের পায়ের আঙ্গুল ফুটাতে থাকতো৷ তারপর একদিন সেটাকে ভিডিও রেকর্ড করে পাঠায়৷ ওর এই বিষয়টি ইণ্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড হয়৷ আমরাও ভাবিনি এটি একটা রেকর্ড হতে পারে৷ তবে খুবই ভালো লাগছে। সবাই খুশি।"
(www.theoffnews.com Birbhum record)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours