সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
লিলি দিদিমণি একদিন তাঁর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নিজের গ্রামে গেলেন। সেখানে তাঁর পরিবারের একটি আমবাগান আর একটি গোলাপের নার্শারী ছিল।
ছাত্রছাত্রীরা সবাই খুব মজা করে আমবাগানের দারুণ সুস্বাদু আম আস্বাদন করল আর ফুটন্ত গোলাপের সঙ্গে সেলফি তুলল।
বাগান থেকে বিদায় নেবার সময় দিদিমণি বললেন, “বাচ্চারা, আমাদের জীবনে ভাল ভাল মানুষজন এবং তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকাটা খুব জরুরী। তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে।”
একজন ছাত্র প্রশ্ন করল, “কিন্তু কে ভাল আর কে মন্দ আমরা বুঝব কী করে?”
দিদিমণি বললেন, “সেটা বোঝার জন্য এসো আমরা একটা ছোট্ট খেলা খেলি। তুমি আবার ওই আমবাগানে যাও আর সব থেকে বড় যে আমটা তুমি পাবে সেটা আমার জন্যে নিয়ে এসো। কিন্তু মনে রাখবে, একবার এগিয়ে গেলে আর পিছিয়ে আসতে পারবে না”।
বাচ্চাটি আমবাগানে গেল আর গভীর মনোযোগের সঙ্গে প্রতিটি আম পরীক্ষা করে দেখতে লাগল। প্রতিটা আম দেখার পরেই তার মনে হতে লাগল “আগে নিশ্চয় আরও বড় আম আছে।”
সেইজন্য সে একের পর এক আম বাতিল করে এগিয়েই যেতে লাগল। যখন সে আমবাগানের শেষ প্রান্তে পৌঁছল সে বুঝতে পারল যে সব থেকে বড় আমটা ছিল প্রথম গাছেই যেটা সে পেরিয়ে চলে এসেছে।
মন খারাপ করে বাচ্চাটা খালি হাতে ফিরে এসে দিদিমণিকে তার অভিজ্ঞতা জানাল।
দিদিমণি হাসলেন আর বললেন, “এই ভুল আমরা আমাদের জীবনে প্রায়ই করে থাকি। আরও ভাল খুঁজতে গিয়ে আমাদের চোখের সামনেই যা আছে তাকে আমরা পাত্তা দিই না, ফলে ভাল ভাল জিনিসকে হারিয়ে ফেলি।”
তিনি বাচ্চাটিকে আর একটি কাজ দিলেন। তিনি বললেন, “আচ্ছা এবার নার্শারীতে যাও আর আমাকে সবচেয়ে বড় গোলাপটা তুলে এনে দাও।”
এবারে বাচ্চাটি আর একই ভুল করল না।
সে নার্শারীতে ঢুকে প্রথমেই যে বড় গোলাপটা দেখতে পেল সেটাই সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিল। বিনা সংশয়ে সে সেটা দিদিমণির হাতে তুলে দিল।
দিদিমণি বললেন, “দেখলে তো, এবারে তুমি নিজের ওপর আস্থা রেখেছিলে আর বিশ্বাস করেছিলে যে যেটা তুমি প্রথম দেখেছ সেটাই সেরা। প্রায়শই ভাল জিনিস আমাদের থেকে অনেক দূরে থাকে না, এটা সবসময় আমাদের মধ্যে আর আমাদের চারপাশেই থাকে।”
(www.theoffnews.com fine nice well)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours