সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:

রাশিয়ার নীতিগল্প 

মূল লেখক: সের্গেই মিখালকভ

বনে বাদাড়ে ঘুরে ঘুরে এলক্ বড়ই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল, পাগুলোও টনটন করছিল, একটু কোথাও জিরিয়ে নেওয়ার জন্য মনটা ভীষণ আঁকুপাঁকু করছিল। বনের একটা ফাঁকা জায়গায় সে শরীরটা এলিয়ে দিয়ে খরগোশকে অনুরোধ করল, “আমার একটা উপকার করবে, প্লিজ? আধঘন্টা পরে আমাকে তুলে দিও!”

খরগোশ তো নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিল না - এলক্ নিজের মুখে তার কাছে একটা সাহায্য চেয়েছে! বাপরে, বাপ! ...সে তো একেবারে ব্যস্তসমস্ত হয়ে পড়ল...।

“ঘুমোও, ঘুমোও! নিশ্চয়ই তুলে দেব, সে আর বলতে!” – খরগোশ আন্তরিক ভাবে কথা দিল।

এলক্ হাতপা টানটান করে আরাম করে শুলো আর চোখদুটো বন্ধ করল।

খরগোশ তার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলল, “খানিকটা খড় বিছিয়ে দিলে মনে হয় তোমার শোয়াটা আরও আরামের হ’ত!” এই বলে কোত্থেকে কে জানে একগোছা খড় সে জোগাড় করে আনল আর এলকের পেটের নীচে সেটা গুঁজে দিতে শুরু করে দিল।

এলক্ ঘুম জড়ানো গলায় বলল, “ঠিক আছে ভাই, অত চাপ নিও না!”

“চাপ নিও না, কী বলছ কী? নরম খড়ের ওপর শুলে তোমার বেশি আরাম হবে!”

“ঠিক আছে, ঠিক আছে...আমার ঘুম পেয়ে গেছে...আমাকে ঘুমোতে দাও...।”

“ঘুমিয়ে পড়ার আগে একটু গলাটা ভিজিয়ে নিলে ভাল হতো না? কাছেই একটা ঝর্ণা আছে। ঝটাকসে নিয়ে আসব!”

“না,না, অত ঝামেলা করো না...আমার ভীষণ ঘুম পেয়েছে...।”

“ঘুমোও, ঘুমোও! তোমাকে কি একটা ঘুমপাড়ানি গপ্পো শোনাব? তাহলে তোমার এক চুটকিতে ঘুম এসে যাবে!” উপকারী খরগোশ তার উপকার করার চেষ্টা জারি রেখে বলল।

“না,না...ধন্যবাদ...ও সব কিচ্ছু লাগবে না...আমার এম্নি এম্নি ঘুম এসে যাবে...।”

“তোমার শিংটা বোধ হয় তোমাকে জ্বালাচ্ছে!” 

এলক্ ধড়মড় করে চারপায়ে ভর দিয়ে উঠে পড়ল আর কিচ্ছুটি না বলে হাই তুলতে তুলতে সেখান থেকে কেটে পড়ল।

খরগোশ তো আকাশ থেকে পড়ল, “আরে, আরে, চললে কোথায়? এখনও তো বিশ মিনিটও হয়নি!”

(www.theoffnews.com rabbit elk)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours