সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
রাশিয়ান নীতিগল্প
মূল লেখক: সের্গেই মিখালকভ
ঘটনাচক্রে একবার শেয়াল, বীভার আর বুনো শুয়োর এই তিনজনে মিলে ঠিক করল, নতুন নতুন জায়গা দেখতে নদনদী পেরিয়ে, বনজঙ্গল ভেদ করে, পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে তারা যাবে বহুদূর! বহুদূর!
তৈরি টৈরি হয়ে তারা দীর্ঘ সফরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল। তারপর তারা চলে চলে চলে চলে, বহুক্ষণ পরে তারা একটা নদীতে পৌঁছাল। নদীর ওপর দিয়ে সরু ফিতের মত একটা সাঁকো চলে গেছে যেটা তাদের তিনজনের ওজন একসঙ্গে নিতে পারবে না। তাদেরকে এক এক করে পেরতে হবে।
বুনো শুয়োর বীভারকে বলল – “তুমি প্রথম যাও। তুমি সবার বড়, তোমার এই সম্মানটা পাওয়া উচিৎ।”
শেয়াল একমত হয়ে বলল, “একদম ঠিক কথা বলেছ। বীভারই আগে যাক।”
বীভার সাঁকো্র ওপর দিয়ে চলতে শুরু করল। হঠাৎ তার চাপে সাঁকোটা মচাৎ করে ভেঙে গেল আর বীভার ধপাস করে জলে পড়ে গেল।
শেয়াল হুক্কা হুয়া করে চেঁচাতে লাগল - “বাঁচাও, বাঁচাও! শুয়োর, জলে ঝাঁপিয়ে পড়ো, বীভারকে বাঁচাও! আমাদের বীভার জলে ডুবে মরে যাবে! আমরা আমাদের বীভারকে চিরকালের মত হারাব! জলদি! জলদি!”
শুয়োর ঘোঁত ঘোঁত করে বলল, "জ্যাঠামো না করে নিজে ঝাঁপাও আর ওকে বাঁচাও। বাঁচাতে পারলে তো আমারও ভালো লাগতো কিন্তু তুমি তো জানো আমার সর্দ্দির ধাত, এই ঠান্ডা জলটা গায়ে লাগলে আমার ভয় হচ্ছে যে নিউমোনিয়া না হয়ে যায়!"
"ধন্যবাদ, বন্ধুরা। আমি কোনও রকমে সালটে নেব। তোমরা তো জানো আমি সাঁতার জানি" - সাঁকোর তলা থেকে বীভারের গলা শোনা গেল।
বীভার হাঁচোড় পাঁচোড় করে পাড়ে উঠে এলো, খক্ খক্ করে কাশলো আর গা ঝাড়া দিল।
"আরে এতো অসাধারণ ব্যাপার!" শেয়াল আর শুয়োর আনন্দে চীৎকার করে লাফিয়ে উঠলো। "চলো, আবার চলা শুরু করা যাক।"
বীভার দৃঢ়তার সঙ্গে বলল - "আবার! কভি নেহি! তোমাদের সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া একেবারেই নিরাপদ নয়!"
(www.theoffnews.com Russian folk tales beaver pig fox)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours