দেবর্ষি মজুমদার, সিনিয়র জার্নালিস্ট, বীরভূম:
জন্ম থেকে মৃত্যু। জীবনের সূচনা ও অন্তিমে শুধুই মধু। জন্মানোর পর সন্তানের মুখে মধু দেওয়া হয়। মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধেও সেই মধু। ওঁ মধু ওঁ মধু।
এই মধু কে না চায়! একজন বীরভূমবাসী ব্যবসায়ী জীবনে পরিশ্রম করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। কিন্তু তাঁর উত্থান সূচক উন্নতির লেখচিত্রে পরিমাপ করতে গেলে গাণিতিক কোনও সূত্র আপনাকে আমাকে সাহায্য করবে না। তার বিপুল অর্থের সঞ্চয় ও কারবারের কারণে তাকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থা ধরে নিয়ে গেল। কিছুদিন জেল খাটলেন আবার অজ্ঞাত কারণে জামিনও পেলেন। অবশ্য নিন্দুকেরা দাবি করেন, মহাশয়ের পরিচয় নাকি টুলুবাবু। এই ধরনের ব্যবসায়ী সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অদ্ভূত রসায়নে মিলেমিশে থাকেন। কারণ এই লোকের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে রামপুরহাট ও সিউড়ীতে পার্টি অফিসের বিল্ডিং করতে হবে। গেরুয়ার আদলে সবুজের কোলে। এহেন মহাশয়ের সঙ্গে একাংশ সাংবাদিকদের যোগাযোগ থাকবে না তা কী করে হয়! খুবই স্বাভাবিক যে কিছু সাংবাদিকের সঙ্গে উনার যোগাযোগ থাকবে। মাসান্তে দক্ষিণা পৌঁছে দেবার শর্তে। এটুকু তার কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। সম্প্রতি তার মেয়ের বিয়েতে এলাহি কারবার। রাজসূয় যজ্ঞ। সেখানে একপক্ষ দাক্ষিণ্যতুতো সাংবাদিকদের মুখ দেখাতেই হবে। এটা কর্তব্যর মধ্যে পড়ে। তবে অতি বুদ্ধিমান সাংবাদিকদের কেউ কেউ মুখ না দেখিয়েও ইহলৌকিক সম্পর্ক অটুট রাখতে নিশ্চয়ই চেষ্টার কসুর করবে না। গিভ এন্ড টেক রসায়ণে। সেক্ষেত্রে যজমানকে অনেকে বলবেন, আপনার পুরোহিতদের আর বাদামি খামটা পাঠানো কি ধম্মে সইবে! এটা অবশ্য যারা পান না, তাদের আফশোষ বাক্য হতে পারে! তেনার মধু, তিনি ছিটোবেন, তাতে নিন্দুকেরা কী বলবেন, কার যায় আসে।
মধু এখন সর্বত্র। এই বৃহৎ অরণ্যে গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া অনেকেই মধুর সন্ধান পেয়ে বেঁচেবর্তে আছেন। বৃহদারণ্যক উপনিষদে ঋষি সেই কথায় বলেছেন,
“ওঁ মধুবাতা ঋতায়তে। মধু ক্ষরন্তি সিন্ধবঃ। মাধ্বীর্নঃ সন্তু ওষধিঃ।
মধু নক্তমুতোষসো। মধুমত্ পার্থিবং রজঃ। মধু দৌরস্ত্তু নঃ পিতা।
মধুমান্নো বনস্পতির্মধুমানস্তু সূর্যঃ। মাধ্বীর্গাবো ভবন্তু নঃ।"
অর্থাৎ বাতাসে মধু বয়, নদীর জলে মধু, ওষধিরা মধুময়। দিবা ও উষা মধুময়। পৃথিবীর ধূলিও মধুময়।
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি ৷
(www.theoffnews.com Birbhum marriage)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours