দেবর্ষি মজুমদার, সিনিয়র জার্নালিস্ট, বীরভূম:
পালকি বাহকের "হুম হুম না" শুনতে শুনতে দুলকি তালে নব বধূর আর শ্বশুর বাড়ি যাওয়া ভাগ্যে জোটে না। 'গরুর গাড়ি চাটাই ছাওয়া ছাউনি তলে, নতুন বধূ শ্বশুরবাড়ি ওই যে চলে।' আর কেউ বলে না। তবুও মঙ্গল ভাণ্ডারির শখ হলো সাবেকি আমলের ঘরানায় গরুর গাড়িতে চড়েই নববধূ নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। আর তার এই ইচ্ছেতে হাঁ মিলিয়েছেন সহধর্মীনি রাখী দাস। রাখী দাস বলেন, তাঁর স্বামীর মাথায় এরকমই নতুন নতুন ধারণা আসে। আমি বাধা দিইনি। আইডিয়াখানা বেশ ভালো। প্রাচীন হলেও আধুনিকতা আছে।
কথা বলতে বলতে হাসি উছলে পড়ছে তাঁর চোখে মুখে। নববধূর বাপের বাড়ি বোলপুরের রতনপুর। তার থেকে মাত্র দু'কিমি দূরে শ্রীনিকেতন বোলপুর ব্লকে সর্পলেহনা আলবাঁধা পঞ্চায়েতের গোবিন্দ বালা গ্রামে রাখী দাসের শ্বশুরবাড়ি। ক্যাঁচোর ক্যাঁচোর শব্দে গাড়ি চলছে গ্রামের ঢালাই পথে। 'পর্দা তুলে পিছন হতে দেখছে চেয়ে। ডাগর চোখে নববধূ গ্রামের মেয়ে।'
বর মঙ্গল ভাণ্ডারি পেশায় নাপিত আবার চাষিও। এই অভিনব ইচ্ছে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, আমার বাবা মায়ের বিয়ে এসেছিল গরুর গাড়িতে। এর একটা ঐতিহ্য আছে। পেট্রোল ডিজেলের গাড়িতে হুশ করে চলে যাওয়া অনেকটাই যান্ত্রিক। অবশ্য রাস্তা দূর হলে সেটাকেই অবলম্বন করতে হতো। কিন্তু পথ যখন কাছে তখন রাস্তা ঘাট দেখতে দেখতে যাওয়া বেশ ভালো লাগে। অবশ্য তাঁর মন গুনগুন করে বলছে কিনা- এই পথ যদি শেষ না হতো, জানা হলো না। ফুল সাজানো 'গরুর গাড়ি ঢুকলো এবার গ্রামের মাঝে। নতুন বধূ ঘোমটা টানে বেজায় লাজে।'
(www.theoffnews.com marriage palki)




Post A Comment:
0 comments so far,add yours