দেবর্ষি মজুমদার, সিনিয়র জার্নালিস্ট, বীরভূম:

ঘোড়ার ডিম বাস্তবে নেই। কিন্তু নন্দন মেলায় তার দেখা মিললো। ঘোড়ার ডিম মিষ্টির দেদার বিক্রি নন্দন মেলার বড়ো আকর্ষণ। বিশ্বভারতীর কলাভবনে শুরু হয় এই নন্দন মেলা। প্রখ্যাত শিল্পী নন্দলাল বসুর নামানুসারে এই মেলা ৫১ তম বর্ষে পা দিল৷ প্রতি বছরের ডিসেম্বর মাসে দু'দিন চলে এই মেলা৷ কলাভবনের ৬টি বিভাগের সারা বছরের শিল্পকর্মের পসরা বসে এই মেলায়৷ 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' শান্তিনিকেতনে এই শিল্প মেলায় উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে৷ 

তবে এবারের মেলার মূল আকর্ষণ 'ঘোড়ার ডিম'। অর্থাৎ, ঘোড়ার ডিম নামে মিষ্ঠান্ন বিক্রি করছে পড়ুয়ারা৷ যা খেতে ও ছবি তোলার হিড়িক চোখে পড়ার মতো৷ 

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন শিল্পী নন্দলাল বসু৷ কবির ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে বিশ্বভারতীতে কলাভবন প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা ছিল অগ্রণী। ৩ ডিসেম্বর শিল্পী নন্দলাল বসুর জন্মদিন৷ তাঁকে স্মরণ করে কলাভবনে 'নন্দন মেলার আয়োজন করা হয়৷ এবার এই মেলা ৫১ তম বর্ষে পা দিল৷ 

'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' শান্তিনিকেতন, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই প্রকৃতির মাঝে শৈল্পিক মেলা। নানান অনবদ্য শিল্পকলায় সেজে উঠেছে কলাভবন চত্ত্বর।

কলাভবনে ৬টি বিভাগ রয়েছে। সেরামিক, গ্রাফিক্স, টেক্সটাইল, স্কাল্পচার, পেন্টিং ও হিস্ট্রি অফ আর্ট। এই ৬ বিভাগের পড়ুয়াদের সারা বছরের তৈরি শিল্পকর্ম এই মেলায় প্রদর্শিত ও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, রয়েছে প্রাক্তনীদের স্টল, বিভিন্ন খাবারের স্টল, শিল্পকর্ম সংক্রান্ত বইয়ের স্টল প্রভৃতি। এই মেলা প্রাক্তনীদের মিলন মেলাতে পরিণত হয়৷ প্রদর্শনী ও বিকিকিনির পাশাপাশি, চলছে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অসমের বিহু, মণিপুরী নৃত্য, নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে৷ সব মিলিয়ে জমজমাট কলাভবনের নন্দন মেলা।

প্রসঙ্গত, এই মেলার সূচনার ঠিক আগের বছর কলাভবনে বীরেন বোরা নামে এক অসমীয়া ছাত্রর পা গুরুতর ভাবে কেটে গিয়েছিল। তাঁর চিকিৎসার খরচ যোগাতে সেই সময় হিমসিম খেতে হয়েছিল পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের৷ সেই ঘটনা থেকেই স্থির হয়েছিল যা শিল্পকর্ম বিক্রি হবে তার একটা লভ্যাংশ কলাভবনের কোষাগারে সংরক্ষিত হবে৷ যা 'স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফাণ্ড'। দুঃস্থ পড়ুয়াদের সহযোগিতা করার স্বার্থে আজও এই রীতির চল আছে। 

পড়ুয়াদের মধ্যে শ্রেয়সী রাকা দাস, শেখ মুত্তাকিমা, বিনিতা খণ্ডেলওয়াল বলেন, "অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। কলাভবনের সব বিভাগের স্টল দেওয়া হয়েছে৷ সারা বছর আমাদের তৈরি হাতের কাজ রয়েছে। সবাই মিলে খুব আনন্দ করছি, মজা করছি।"

(www.theoffnews.com Shantiniketan Nandan mela)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours