রণজিৎ গুহ, লেখক ও সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:
(লেখক একজন গর্বিত প্রাক্তন ইস্পাত কর্মী)
সমাজে বাতসল্য আছে শ্রদ্ধা আছে। গান আছে কবিতা আছে। প্রকৃতির রূপ রস গন্ধ আছে।পাহাড়ের হাতছানি সমুদ্রের বিশালতা আছে। বেদনা বিধুরতা আছে। হাসি আনন্দ আছে। খাদ্যাভ্যাসে বা পোষাকের বৈচিত্র আছে। চিত্রকলা সূচিশিল্প কেশচর্চা আছে। ক্রীড়া শৈলী নৃত্যকলা আছে।গবেষণা বা অনন্ত কৌতুহল আছে। অহঙ্কার আছে নম্রতা আছে। সব আমাদের জন্য।
কোনও নৌ শ্রমিক ভাটিয়ালি গায় প্রাণের আনন্দে না গভীর বিষাদে জানি না। আদ্যন্ত বিষয়ী কিংবা খেয়ালি ছন্নছাড়া যে কেউই শিহরিত হয় শিশুর হাসিতে। কে যে কোন দুর্ণিবার আকর্ষণে বার বার হেটে যায় নদী তীর ধরে কিংবা সাইকেলে/বাইকে অন্তহীন পথ পথ পরিক্রমায় মেতে থাকে তা আমার জ্ঞান পরিধির বাইরে। আমাদের মৌল বিনোদন সর্বদাই ব্যাক্তিগত। কখনই সর্বজনীন নয়। এবং ইউটিলিটির বাইরে এক অন্য বিষ্ময় আমাদের উদ্বেল করে, তাড়িত হই। অকারণ পুলকে শিল্প সৃষ্টিই মানব বৈভব।
লেনিনীয় তত্ত্বের দৃষ্টিভঙ্গীতে আমাদের সর্ব কর্ম, ভাবনা এবং তার বিস্তার ও প্রকাশ কোনও না কোনও ভাবে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। মানব প্রজাতির অগ্রগতির পক্ষে অথবা বিপক্ষে।
অগ্রগতি মানে বহমানতা। আবার বহমানতা পরম্পরা সূত্রে গ্রথিত করে সব ভাবনা ও কর্ম বিস্তারকে সাবেক করে তোলে। নতুনতর ভাবনার বিকাশ ঘটায়। মানব প্রজাতির উন্মুক্ত ভাবনা পরিসর ও শৈল্পিক উদ্ভাবনা প্রয়োজনের কষ্টিপাথরে যাচাই করে এবং নিয়ন্ত্রনের নির্দিষ্ট পথে চালিত করলে মানব বৈশিষ্টই হতশ্রী হয়ে পড়ে। নদীর অমোঘ কুলু কুলু ধ্বনি কতটা প্রয়োজনের ফসল যোগায় কতটা আগাছার জঞ্জালের আশ্রয় তা নিরন্তর ছেঁকে নেওয়ার তৎপরতায় নদীর বদ্ধ জলাশয়ে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। পন্থা ও পদ্ধতি সহ গন্তব্য নির্ধারিত হয়ে গেলে অগ্রসরমানতা বাধা পায়। স্থবিরতা প্রশ্রয় পায়। মানব মেধার অবমাননা ঘটে। অনন্তের সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়ে।
আমরা কি চাই? বিকশিত শত পুষ্পের রূপ রঙ রস গন্ধ সবই একই সুরে বাজুক? একই ধাচায় নিমগ্ন? অগ্রাধিকার কিসে দেওয়া হবে? সকলের একই রকম সুযোগ না সকলের একই রকম পরিনতি?
(www.theoffnews.com human psychology)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours