সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
আলাবামার ডেকাটুরে কুক মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল সায়েন্স ২০২০ সালে একটি বিপন্ন কেম্পের রিডলি সামুদ্রিক কচ্ছপ ‘ক্যালে’-কে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়েছিল এবং তার শারীরিক চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যাগুলির জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে চলেছে। সম্প্রতি, জাদুঘরের কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ক্যালের খোলার গভীরে সংক্রমণের মাত্রা বোঝার জন্য একটি সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন। ছবি:(WION ওয়েব টিম)
কুক মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রি, যেখানে ‘ক্যালে’ ২০২০ সাল থেকে বসবাস করছে, ডাক্তারদের পরীক্ষা করার ছবি শেয়ার করেছে৷ ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিগুলি এখন ভাইরাল হচ্ছে৷
কেন একটি কচ্ছপের সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন ছিল?
মিয়ামি হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, ক্যালের বেঁচে থাকাই শক্ত ছিল। ২০১৯ সালে ওই বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপটি দুর্ভাগ্যক্রমে ভার্জিনিয়ার উপকূলে একজন শখের মৎস্যজীবীর বঁড়শিতে আটকে পড়েছিল। ভার্জিনিয়ার বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা পুঁচকে কচ্ছপটিকে উদ্ধারের জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন কিন্তু বঁড়শির আকারের জন্য আঘাতের মোকাবিলায় বড় ধরণের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল।
সেরে ওঠার সময় নানা জটিলতার কারণে ‘ক্যালে’র শরীরে ‘স্কার’ টিস্যু এবং একটি ফিস্টুলা তৈরি হয় যেগুলি খুব সংক্রমণ প্রবণ জায়গা। ফলে তার নিয়মিত ডাক্তারি পরীক্ষা আর চিকিৎসার প্রয়োজন। জাদুঘরের মতে, "ক্যালের পিঠের খোলার গভীর সংক্রমণের অবস্থা বোঝার জন্য সিটি স্ক্যান হল সেরা হাতিয়ার।" এর জন্য তারা ডেকাটুর মরগান হাসপাতালে রেডিওলজি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। হাসপাতালের রেডিওলজি দল চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং ‘ক্যালে’ তাদের প্রথম পশু রোগী হয়েছিল।
স্পষ্টতই, সিটি স্ক্যানের সময় ‘ক্যালে’ ডাক্তারের কাছে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল, যার কারণে পশু চিকিৎসকদের স্ক্যান চলাকালীন তাকে শক্ত করে ধরে থাকতে হয়েছিল।
স্থানীয় নিউজ পোর্টাল ডাব্লুএএফএফ-এর সাথে কথা বলার সময়, জাদুঘরের জীবন্ত প্রাণী ব্যবস্থাপক ক্যাসান্দ্রা ওর্লান্ড বলেছিলেন যে ক্যালেকে এই ধরনের পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য, যাদুঘরের কর্মীরা তাকে নিয়মিত তালিম দেয় যাতে সে জলের বাইরে এবং আশেপাশের লোকেদের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে।
"সে অবশ্যই এটা সব সময় পছন্দ করে না, ঠিক যেমন কেউ সবসময় ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না," ওর্লান্ড যোগ করেছেন।
কেম্পের রিডলি সামুদ্রিক কচ্ছপগুলি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ছোট সামুদ্রিক কচ্ছপ এবং প্রাথমিকভাবে মেক্সিকো উপসাগরে বাস করে, যদিও অল্পবয়সী কচ্ছপগুলি কানাডা বা ইংল্যান্ড পর্যন্ত আটলান্টিক পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারে।
১৯৪০ এবং ১৯৮০-এর দশকের মধ্যে তাদের জনসংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছিল, শুধুমাত্র ২৫০টি বাসা বাঁধা স্ত্রী কচ্ছপ অবশিষ্ট ছিল। ফলে তারা এখন বিপন্ন তালিকায় রয়েছে। ‘ক্যালে’র গল্পটি এই কচ্ছপগুলিকে যেসব প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় তার একটির দিকে আঙুল তোলে - সেটি হল মাছ ধরার সরঞ্জাম। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের আন্দাজে মাছ ধরার জাল এবং বঁড়শির কারণে মার্কিন দেশে প্রতি বছর প্রায় ৪,৬০০ সামুদ্রিক কচ্ছপ মারা যায়।
[সূত্র: মুহিতা কৌর গর্গ জুলাই ১৭, ২০২৩ / WION ওয়েব টিম]
(www.theoffnews.com Alabama hospital CT scan tortoise)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours