দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

পুজোতেও দাদা বাড়ি আসতে পারেনি। ভাইফোঁটাতে পারলো না। ছোট্ট আরাধ‍্যার মনটা তাই ভার হয়েছিল সকাল থেকেই। 

আর তখনই মুশকিল আসান। দাদার ফোন এলো ব‍্যাঙ্গালুরু থেকে। দাদারও মনটা কেমন করছিল। বছরের এই একটা দিন দাদা ও বোন কাছাকাছি না থাকতে পারলে মনটা হুহু করে কেঁদে ওঠে।

প্রযুক্তির কল‍্যাণে ভাই ও বোনের মধ‍্যে পথের দূরত্ব কমলো। মোবাইলে ভিডিও কলেই হলো ফোঁটা। অনামিকায় চন্দনের ফোঁটা নিয়ে বোন বললো,  "ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা। যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা। " 

আয়োজনের কোনও ত্রুটি ছিল না। পুষ্প পাত্রে ছিল ফুল, রেকাবিতে ছিল ধান ও দূর্বা। ডিসে ছিলো সাজানো মিস্টি। মাঙ্গলিক উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি কোনটাই বাদ পড়েনি। এমন শুভদিনে নলহাটি ডাকবাংলো পাড়ায় বাড়িতে ছিল চরম ব‍্যস্ততা। পেশায় পরিবহন ব‍্যবসায়ী বাবা সুজিত কুমার দত্ত জানান, ছেলে শঙ্খ শুভ্রের কলেজে পুজোয় ছুটি থাকে না। দশেরাতে শুধু ছুটি থাকে। ভাই ফোঁটায় ছুটি থাকে না। ছেলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ে। সামনে থার্ড সেমিস্টারের পরীক্ষা। সকাল থেকে মন খারাপ করা মেয়েটি ভিডিও কলে দাদাকে ফোঁটা দিতে পেরে খুবই খুশি। 

ফোনে সিএমআর আইটি কলেজের সফটঅয়‍্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র শঙ্খশুভ্র দত্ত জানান, কোনও চিন্তা করিস না। ভিডিও কলেই হবে বোনের ভাই ফোঁটা। আর তখনই খুশিতে ফেটে পড়ে কেজি টু'র সাত বছরের ছাত্রী আরাধ‍্যা দত্ত।

মা কাকলী দত্ত জানান, দুধের সাধ ঘোলে মেটার মতো হলেও, বাচ্চা মেয়ে তো। মনটা খারাপ থাকতো এটুকু না হলে। দাদা ভিডিও কল করেছিল। বোন মোবাইলে দাদার কপালে চন্দনের ফোঁটা দিল। সামনে মিস্টির থালা সাজিয়ে দিল। মোবাইলে প্রণাম করলো বোন। দাদাও আশীর্বাদ করলো। দাদার মিস্টি ও বোনের উপহার পাওনা রইলো। সাক্ষাতে দুইজনের পাওনা মিটবে। তবে বেশ ভালো লাগলো ওদের ভাই বোনের এবং আমাদের।

(www.theoffnews.com digital video calling bhaiphonta)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours