সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:

হাতির করিডর হচ্ছে হাতির দলের অনুকূল দুই বাসস্থানের মধ্যে যাতায়াতের রাস্তা। এগুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে রিপোর্ট করে তারপরে সরেজমিন যাচাই করে সেগুলোকে মান্যতা দেওয়া হয়। সরকারী রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু পশ্চিমবঙ্গেই করিডরের সংখ্যা সর্বাধিক ২৬টি। যা মোট করিডরের ১৭ শতাংশ। পূর্ব মধ্য অঞ্চলে রয়েছে ৩৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৫২টি করিডর, আর উত্তর পূর্ব অঞ্চলে ৩২ শতাংশ বা মোট ৪৮টি করিডর রয়েছে। দক্ষিণ ভারতে ৩২টি বা ২১ শতাংশ, আর উত্তর ভারতে সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ বা ১৮টি করিডর আছে। 

রিপোর্টে এও বলা হয়েছে যে বেশীরভাগ করিডরগুলি রাজ্যের সীমানার মধ্যে অবস্থিত এবং এগুলি ব্যবহারের মাত্রা বেড়েছে ৪০%। কিন্তু রিপোর্টে এটাও দেখা যাচ্ছে যে ১৯ শতাংশ মানে ২৯টি করিডরের ব্যবহার কমে গেছে আর ১০টি করিডর হাতির ব্যবহারের পক্ষে এতটাই অনুপযুক্ত হয়ে গেছে যে সেগুলোকে এখনই পুনরুদ্ধার করে হাতির চলাচলযোগ্য করে তোলা উচিত। করিডরের অব্যবহারের কারণ হিসেবে হাতি বিশেষজ্ঞরা দায়ী করেছেন মানুষের ক্রমবর্ধমান কার্যকলাপকে যা হাতির বাসস্থানকে টুকরো করে দিচ্ছে, সেখানে অনধিকার প্রবেশ করে চরার জায়গা দখল করে নিচ্ছে আর নির্বিচারে গাছপালা কেটে হাতির নিরাপদ আশ্রয়কে ধ্বংস করছে। 

হাতির করিডরের সংখ্যার বৃদ্ধি থেকে এও বোঝা যায় যে হাতিরা ছত্তিশগড়ের প্রতিবেশী রাজ্য মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলে আর কর্ণাটকের সীমান্তে দক্ষিণ মহারাষ্ট্রে তাদের আনাগোনার বিস্তার ঘটিয়েছে। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশের সঞ্জয় টাইগার রিজার্ভ এবং বান্ধবগড়ে হাতির উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও, ওড়িষ্যা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর ভাগে হাতিদের আসা যাওয়া বেড়ে গেছে। 

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে এই রাজ্যগুলিতে বসবাসকারী হাতির জনসংখ্যার ভরণপোষণের জন্য বাসস্থানের দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতা, করিডরের খোঁজ পেতে তথ্যানুযায়ী অনুসন্ধান খুব প্রাসঙ্গিক হবে। এর পাশাপাশি, ভারতের অনেক উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে যেখানে হাতির সংখ্যা নগণ্য সেখানে তাদের গতিবিধির তথ্য খুবই অকিঞ্চিৎ।

(www.theoffnews.com elephant corridor)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours