সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শহরের মন্দিরগুলিতে জমা নোংরা ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া বন্ধ করার চেষ্টা করছে। নোংরা আলাদা করা, কম্পোস্টিং এবং একক ব্যবহারের প্লাস্টিক কমানো হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য।
সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট রাউন্ড টেবিল (স্মার্ট) জানুয়ারিতে 'গ্রিন টেম্পল ইনিশিয়েটিভ' শুরু করেছে। প্রতিবেশী গোষ্ঠী, এনজিও, মন্দির দর্শনার্থী, কলেজের ছাত্র এবং কর্পোরেট পেশাদাররা স্মার্ট-এর নির্দেশিকা এবং ব্রুহত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে (বিবিএমপি)-এর সহায়তায় এটি চালাচ্ছে। এই উদ্যোগটি বর্তমানে চারটি স্থানে চলছে - বনশঙ্করী দেবী মন্দির, মল্লেশ্বরমের কাদু মল্লেশ্বরা মন্দির, জয়নগরের রাগিগুড্ডা শ্রীপ্রসন্ন অঞ্জনেস্বামী মন্দির এবং বেগুরের নাগেশ্বর মন্দির।
মালা থেকে ফুল ও পাতা, দুধের পাউচ, ধূপ ও কর্পূরের প্যাকেট থেকে প্লাস্টিকের মোড়ক, প্রসাদমের জন্য ব্যবহৃত কাগজের থালা, ফলের খোসা, নারকেলের ভুসি এবং পুজোর পরে ফেলে যাওয়া মাটির প্রদীপ মন্দিরের আবর্জনার একটি বড় অংশ।
স্বেচ্ছাসেবীরা কঠোর নজর রাখে যাতে আবর্জনা সঠিকভাবে আলাদা করা হয় — জৈব কম্পোস্টারে ভিজে আবর্জনা, জাল কম্পোস্টারে ফুল, শুকনো জঞ্জালের বিনে শুকনো জঞ্জাল এবং যে যে ড্রাম নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেইসব ড্রামে নারকেলের খোসা, দোনা (পাতার বাটি) এবং আলাদা ড্রামে প্রদীপ। তারা এই বিষয়ে মন্দিরের কর্মচারী এবং দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে, ব্যানার লাগায় এবং জঞ্জাল সংগ্রহের জায়গাগুলি পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনে মেশানো আবর্জনা আলাদা করে।
আবর্জনা আলাদা করার কাজটি বেশ জটিল। ফুলের মালার ক্ষেত্রে, ফুলগুলিকে প্রথমে সুতো থেকে আলাদা করতে হয়। অশোক উরস নামে একজন ব্যবসায়ী বলেছেন, “যদি আমরা একটি কম্পোস্টারে সুতোগুলো ফেলে দিই, তাহলে প্রথমত, সেগুলি জমাট বেঁধে যায় আর দ্বিতীয়ত, সেগুলি পচে না। তাদের শুকনো বর্জ্যের পাত্রে ফেলতে হবে।” তিনি একটি গোষ্টীর অংশ যেটি কাদু মল্লেশ্বরা মন্দিরে এই উদ্যোগটি চালাচ্ছেন। মন্দিরটিকে শূন্য-বর্জ্য করার জন্য, গোষ্টীটি ভক্তদের নিবেদিত মাটির প্রদীপ দিয়ে একটি গ্যাবিয়ন কাঠামো (একটি গ্যাবিয়ন হল এক ধরনের তার যুক্ত ঝুড়ি যা বিভিন্ন শিলা বা মাটি দিয়ে ভরা হয়। যেটি ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে) তৈরি করছে। তিনি বলেছেন, "লোকেরা বাড়ি এবং শহর ছাড়ার সময় দেব-দেবীর ফ্রেম করা যেসব ফটোগুলিকে ফেলে যায় সেগুলোকে আমরা আবার কীভাবে কাজে লাগাতে পারি তা নিয়েও ভাবছি"৷
স্মার্টের প্রোগ্রাম সহকারী এবং স্বেচ্ছাসেবক সমন্বয়কারী ঐশ্বরিয়া নায়ার বলেছেন, “বনশঙ্করী মন্দিরে উৎপন্ন লেবু এবং গুড়ের বর্জ্যের একটি অংশ বায়ো এনজাইম তৈরির জন্য ‘স্বচ্ছগ্রহ কালিকা কেন্দ্রে’ পাঠানো হয়। কিছু চাষী বলেছেন যে তারা নারকোল চাষের সময় নুন ব্যবহার করেন। তাই আমরা নারকোল চাষীদের দেওয়ার জন্য এখানে যে নুন দেওয়া হয় তা সংগ্রহ করছি।”
ঐশ্বরিয়া আরও জানিয়েছেন, “স্বেচ্ছাসেবকরা মন্দিরে ঢোকার সময়ও ভক্তদের পরীক্ষা করে দেখেন যে তারা প্লাস্টিকের জলের বোতলের মতো একবার-ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া জিনিস নিয়ে ঢুকছেন কিনা। একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো মন্দিরের বাইরের বিক্রেতাদের প্লাস্টিকের ব্যাগ এবং কাগজের প্লেট দেওয়া বন্ধ করতে রাজি করানো। বনশঙ্করী মন্দিরে, কয়েকজন এখন প্লাস্টিকের ঝুড়ি এবং স্টিলের প্লেট দিতে শুরু করেছে, যা মন্দির-যাত্রীরা ফেরত দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু কখনও কখনও, আমাদের বিবিএমপি মার্শালদের ডাকতে হয়েছে এবং নিয়মভঙ্গকারীদের শাস্তি দিতে হয়েছে।”
(www.theoffnews.com Bengaluru temple clean NGO)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours