সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
অতি সম্প্রতি তেলেঙ্গানার রঙ্গারেড্ডি জেলার বুরকাগাড্ডাকোথায় দাদাপুর জেলা পরিষদ হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র আকস্মিক ভাবে প্রত্নপ্রস্তর যুগের গোড়ার দিকের একটি অ্যাসুলিয়্যান পাথরের হাতিয়ার আবিষ্কার করে ফেলেছে যা ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে অস্ত্রটির বয়েস অন্তত এক লক্ষ বছর।
বাচ্চা ছেলেটি সৌভাগ্যক্রমে মাটি থেকে খানিকটা বেরিয়ে থাকা হাতিয়ারটিতে হোঁচট খায় এবং কৌতূহলী হয়ে মাটি খুঁড়ে পাথরটিকে বের করে ফেলে। পাথরটি হাতে নিয়ে তার একটা অদ্ভুত অনুভব হয় যে সে একটি খুব প্রাচীন জিনিস হাতে ধরে আছে। সে তৎক্ষণাৎ হাতিয়ারটিকে তার শিক্ষক এ সন্তকুমার এবং এম কৃষ্ণার পাশাপাশি ‘কোথা তেলেঙ্গানা চরিত্র ব্রুন্ডম’-এর সদস্যদের নজরে আনে। ১২.৫ সেমি লম্বা, ৮.৫ সেমি চওড়া এবং ৩.৫ সেমি পুরু এই প্রস্তরায়ুধটি বুরকাগাড্ডাকোথার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ছোট ছোট টিলার মধ্যে পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য যে দক্ষিণ টিলা ‘পালুগু’ (কোয়ার্টজ) পাথরে সমৃদ্ধ যেখানে একটি গ্রানাইট পাথর উত্তরের ভূখন্ডে রাজ করছে এবং পশ্চিমের নীচু জমিতে একটি জলাশয় রয়েছে। কর্ণাটকের ভূমিপুত্র এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক রবি করিসেট্টার এবং ‘কোথা তেলেঙ্গানা চরিত্র ব্রুন্ডম’-এর আহ্বায়ক শ্রীরামোজু হরগোপাল এই পাথরের হাতিয়ারের ছবি পরীক্ষা করে দেখে এটিকে প্রত্নপ্রস্তর যুগের গোড়ার দিকের একটি অ্যাসুলিয়্যান পাথরের হাতিয়ার হিসেবে শ্রেণি বিভাগ নিশ্চিত করেছেন। এখানে উল্লেখযোগ্য যে হরগোপাল অনুমান করেছেন যে প্রস্তরায়ুধটি অন্তত এক লক্ষ বছরের পুরনো।
“অ্যাসুলিয়্যান” (Achuelian) শব্দটি ‘অ্যাসুলিন’ ‘Achulein’ থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যার উৎস ফ্রান্সের পিকার্ডির সোম্মা ডিপার্টমেন্টের রাজধানী আমিয়াঁর শহরতলীর ‘সেইন্ট অ্যাসুলিয়েল’-এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রত্নস্থল (‘টাইপ সাইট’) যেখানে জন ফ্রেয়ারা দ্বারা ১৮৫৯ সালে প্রস্তরায়ুধগুলি আবিষ্কৃত হয় এবং তিনিই প্রথম এগুলোর বিশাল প্রাচীনত্ব সম্বন্ধে ধারণা দেন। “অ্যাসুলিয়্যান” হাতিয়ার হোমো ইরেক্টাস এবং হোমো হাইডেলবারজেন্সিস প্রজাতির প্রস্তরায়ুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িত।
(www.theoffnews.com Telengana Achuelian stone tool school boy)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours