সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
(মেক্সিকান লোকগাথা অবলম্বনে 'দ্য ফ্লাড')
[মূল লেখক সেরাপিয়া রিকার্ডা]
বৃদ্ধ ভগবান একজন লোককেই পৃথিবীতে থাকার অনুমতি দিলেন। আর তাকে বললেন - “বাছা, খুঁটিনাটি কাজ করার আর সময় নেই। সারা পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে। যত ডাঙা জমি আছে সব জলে ভরে যাবে”। তিনি আরও বললেন - “সিডার গাছের বীজ লাগাও আর সকালে একজন কাঠমিস্ত্রির খোঁজ কর যে ঢাকা দেওয়া একটা বড় শালতি বানাবে। বানানো হয়ে গেলে তোমার পরিবার সমেত ওটার ভেতরে উঠে গিয়ে ডালা বন্ধ করে দেবে”।
এক রাতের মধ্যেই সিডার গাছটা দ্রুত, অতি দ্রুত বেড়ে উঠল। হাওয়া দিল, গাছের পাতা খসখস করে আওয়াজ করতে লাগল। গাছটা থেকে কাঠ মিস্ত্রি একটা বিরাট শালতি বানাল।
মাঝ রাত্তিরে বৃষ্টি শুরু হল। রাত্তিরের মধ্যেই পৃথিবী জলে ভরে গেল আর ফুলেফেঁপে ওঠা জলস্তর শালতিটাকে ঠেলে আকাশে তুলে দিল। পৃথিবী আর বিশ্ব ধ্বংস হয়ে গেল। ডাঙ্গা ভরে গেল জলে।
তারপরে জল একসময় কমে গেল, পৃথিবী শুকনো হয়ে এল। সব নতুন লোক। বৃদ্ধ ভগবান তাদেরকে এখানে থাকার অনুমতি দিয়েছেন।
লোকটি শালতি থেকে বেরিয়ে এল, মাছ ধরল তারপর সেগুলোকে আগুনে ঝলসে খেল। বৃদ্ধ ভগবান ওরফে তার “বুড়ো বাবা” তাকে আগেই নিষেধ করেছিলেন - “তুমি কিন্তু কিছুতেই আগুন জ্বালাবে না”।
কিন্তু ওপর থেকে বুড়ো বাবা ধোঁয়ার গন্ধ পেলেন। “কোত্থেকে এই আগুনের গন্ধ আসছে?” জিগ্যেস করতে করতে তিনি নীচে নেমে এলেন কে এই আগুন জ্বালিয়েছে সেটা খুঁজে বের করার জন্য।
সেখানে এসে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন - “তোমাকে মাছ ধরার পারমিশন কে দিয়েছে? তোমার তো আগুন ধরানোও নিষেধ ছিল কিন্তু তুমি ধরিয়েছ। আমি তোমাকে আগুন ধরাতে বারণ করেছিলাম, বোকা কোথাকার! এবার এই নতুন লোকগুলোর সামনে তোমাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেতে হবে”। এই বলে বুড়ো বাবা তার মাথায় ঠাঁই করে একটা চাঁটি কষালেন।
“যেহেতু তুমি আমার অবাধ্য হয়েছ, তাই তোমাকে আমি এখুনি একটা হাউলার বাঁদর করে দিচ্ছি”।
(www.theoffnews.com Mexican folk tales)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours