সোমনাথ রায়, প্রত্নগবেষক, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক, দুর্গাপুর:
(গোন্দ লোককথা অবলম্বনে)
[দুর্গা বাঈ যেমনটি জানিয়েছেন]
জঙ্গলের রাজা কে হবে ঠিক করতে একবার একটা সভা ডাকা হয়েছিল। ময়ূর আর পেঁচা সমান সমান ভোট পেল কিন্তু সকলে মিলে ঠিক করল যে বনের রাজা পেঁচা হতে পারে না (কারণ পেঁচাকে সবাই বেশ বোকা বলেই মনে করে) তাই ময়ূরকেই বনের রাজা বলে ঘোষণা করা হলো আর পরের দিন সকালে তার মুকুটাভিষেক হবে বলে ঠিক হলো। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য ময়ূর এত সাজতে লাগল, এত সাজতে লাগল যে তার সময়-জ্ঞান সম্পূর্ণ লোপ পেয়ে গেল। এদিকে বনের সব জীবজন্তুরা অপেক্ষা করেই চলল, করেই চলল, কিন্তু তাতেও যখন তার টিকিটিও দেখা গেল না তখন সবাই মিলে পেঁচাকেই জঙ্গলের রাজা বানিয়ে দিল।
-----------------------------
ময়ূর আর তিতির পাখির কিসসা
(এটিও গোন্দ লোককথা অবলম্বনে)
[রাজেন্দ্র শ্যামের কথনে]
বঙ্গানুবাদঃ সোমনাথ রায়
দেব বাবার ঠিক সাত দিন লেগেছিল পৃথিবী সৃষ্টি করতে। প্রথম সাড়ে তিন দিনে তিনি চরাচরের সব প্রাণীকুলের সৃষ্টি করলেন আর বাকী সাড়ে তিন দিনে সব শস্যাদির। তিনি ময়ূর পাখি সৃষ্টি করতে চাইলেন, তাই তিনি প্রথমে ময়ূরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো আলাদা আলাদা করে বানিয়ে ফেললেন - মাথা, লেজ, পালক, পাগুলো আর শিখী যেগুলোর ওপর আবার তিতির পাখির চোখ পড়ে গেল আর পাদু’টো দেখে তার নিজের জন্য খুব লোভ হ'ল। এর অল্প কিছুদিন পরেই সে ডিম পাড়ল কিন্তু হঠাৎ তার জঙ্গলকে খুব ভয় করতে লাগল, ভয় করতে লাগল জল, হাওয়া আর আকাশকে। আর সে ভাবল আকাশ যদি ভেঙ্গে পড়ে তাহলে তার নতুন পা ব্যবহার করে আকাশকে আটকে দেবে। এতসব কিছুর পরও ময়ূর বর্ষাকালে নাচে আর নিজের রূপের নিজেই প্রশংসা করে কিন্তু সে যখন পায়ের দিকে তাকায় সে খুব অসুখী বোধ করে কারণ তার সমস্ত সৌন্দর্যের মধ্যে তার পাগুলো কুৎসিত আর বেমানান আর তাই সব ছবিতেই তাকে কাঁদতে দেখা যায়।
(www.theoffnews.com gondi gond folk tales)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours