প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র, লেখক, কালনা, পূর্ব বর্ধমান:

আজ মিনাক্ষীর দিন। হ্যাঁ মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। অত্যন্ত সম্ভাবনাময়, আপাদমস্তক সৎ, নিরবিচ্ছিন্ন বাম আন্দোলন থেকে উঠে আসা, অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত সিপিএমের যুব নেত্রী। সেদিন নির্যাতিতার পরিবারের সাথে ও জুনিয়ার ডাক্তারদের সাথে পুলিশ কি রকম দুর্ব্যবহার করেছিল তা মিনাক্ষী দেখেছিল। নির্যাতিতার মৃতদেহ আটকানোর চেষ্টা করেছিল প্রাণপণ। তাই আজ সে সিবিআইয়ের সকাশে। সাক্ষ্যের প্রয়োজনে। সত্য উন্মোচনের প্রত্যাশী রূপে।

মিনাক্ষী নিজেও হুমকির শিকার হয়েছিল। আমরা টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছিলাম, একজন পুলিশ অফিসারের নির্দয়তা। 

মিনাক্ষীর হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল ওই পুলিশ অফিসার। একজন মহিলাকে সরাতে মহিলা পুলিশ না এনে পুরুষ পুলিশ দিয়ে শক্তির পরীক্ষা করতে চেয়েছিল কলকাতা পুলিশ। 

তবে পারেনি। মিনাক্ষীর সাথে ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। 

মিনাক্ষী দেখেছিল তৃণমূলী লুম্পেন বাহিনী কিভাবে পুলিশি সহযোগিতায় আরজি কর মেডিকেলের পঞ্চম তলা ভেঙে তছনছ করেছিল। তাদের মুখের ভাষা ছিল লুম্পেনদের মত। মদ্যপ সেই লুম্পেন বাহিনী নিমেষের মধ্যে ভেঙেছিল, প্রমান লোপাটের চেষ্টা করেছিল। 

আজ ৪২ দিন। নির্যাতিতা বিচার পায়নি। আশা রাখছি, প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবে। তদন্তে স্বচ্ছতা থাকবে। কলতানকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সেদিন কলতান দাসগুপ্ত মিনাক্ষীর সাথে ছিল। বাধা দিয়েছিল, তাই কলতানকে বিনা অপরাধে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ। 

মুক্ত হবে কলতান। পুলিশ ওকে বেশি দিন ওকে রাখতে পারবে না। সত্য উদঘাটন হবে। দেবীপক্ষের আগে দোষীরা গ্রেপ্তার হবে এই আশা রাখছি। নচেৎ বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের যেটুকু আস্থা রয়েছে তাও নষ্ট হবে। 

শাসকের ভাষা, শাসকের মিথ্যা অপপ্রচার মানুষ বুঝে গেছে তিলোত্তমার মৃত্যুর পর। শাসকের অত্যাচার বুঝেছে। চক্রান্ত বুঝেছে। এরাজ্যে মাটি, বালি, পাথর, জমি, শিক্ষা কেলেঙ্কারির থেকেও বড় কেলেঙ্কারি এই স্বাস্থ্য কেলেঙ্কারি। 

যিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তিনিই পুলিশ মন্ত্রী। তিনিই মুখ্যমন্ত্রী। এই দুর্নীতি একদিনের নয়, দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তিনি জানতেন না এ হতে পারে? হতে পারে না। 

এরাজ্যে একটাই পোষ্ট, বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। সকলেই জানি। যেখানে যা যা ঘটেছে সবই তো তার অনুপ্রেরণায় ঘটছে। ল্যাম্পপোষ্টগন তো তাই বলেন। এখন দায় এড়ালে, চলবে না। তাই দাবি করি পদত্যাগ। 

এই আন্দোলনে বিজেপি নেই। বিজেমূল তত্ত্ব প্রমাণিত হয়েছে। কারণ ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন বিজেপি চায় না। তাই তারা প্রধান বিরোধী দল হয়েও চুপ থাকছে। 

এই সত্যও বাংলার জনগন বুঝছে। আসল লড়াইটা ডাক্তার বন্ধুরা করছে তাদের নিজেদের স্বার্থে। জনগন এই লড়াইয়ে আছে নির্মমতার অবসান চেয়ে। বামপন্থীরা এই লড়াইয়ে মুখ্য ভূমিকায় কারন, তারা চায় সমাজ বদল। চায় দুর্নীতির অবসান। 

ঠিক, এই কারনেই কলতান দাসগুপ্তকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন। আর কত নিচে নামবে। যে কলকাতা পুলিশকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সাথে তুলনা করা হতো সেই সম্মান আজ কলকাতা পুলিশ হারিয়েছে। নিজেরাই নিজেদের ভূলুণ্ঠিত করেছে। 

আশা করব, সেই সম্মান কলকাতা পুলিশ আবার অর্জন করবে। 

(www.theoffnews.com - Minakshi Mukherjee CBI Kolkata)


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours