সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ সারা দেশের লোকসভার ১৮তম সাধারণ নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বাজতে শুরু করেছে। এমনই প্রাক মুহূর্তে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মুকুটে সংযোজিত হল এক নতুন পালক। দেশে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়ের পরিমাণ ৬৪,২৬৩ কোটি টাকা বা ৬৪২.৬৩ বিলিয়ন ডলার। যা এক সর্বকালীন রেকর্ড। বিশ্বের বাণিজ্যিক মানচিত্রে ভারত যে সাম্প্রতিক পৃথিবীর পুঁজিপতিদের পছন্দের মক্কা মদিনা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই কারণেই ভারত সম্পর্কে অতি উৎসুক মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কও অনেকটা ছুটেই আসছেন এই ভোট মরশুমের আবহের মধ্যেই। তিনি নিজেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'এদেশে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে আমি খুবই উৎসুক।' খুব কিছু এদিক ওদিক না ঘটলে সম্ভবত চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই আমেরিকার বাসিন্দা তথা টেসলার কর্ণধার এদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ফলঃপ্রসূ হলে আমাদের দেশে ঘটবে এক আকাশচুম্বী বিনিয়োগ। অর্থাৎ টেসলার গাড়ি ভারতেই তৈরি করার ব্লুপ্রিন্ট রচনা হবে ৪,১৫০ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে। সুতরাং বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে ভারত যে আজ অন্যান্য দেশের কাছে অনেকটাই হট লিপ সম। উপরিউক্ত এহেন ভারতের সাম্প্রতিক আর্থিক জয়জয়কার সম্পর্কে সুদূর পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়াও কিন্তু যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। আর তারই আভাস পাওয়া গেল হিজ এক্সিলেন্সি অ্যাম্ব পিটার মুনিইরির আন্তরিক আবেদনে। ভারতে অবস্থিত কেনিয়া নিয়োজিত এই রাষ্ট্রদূত তাই কালক্ষেপ না করে তাঁর দেশে এদেশের সঙ্গে এরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের পুঁজিনিবেশের আমন্ত্রণ জানালেন দৃঢ়তার সঙ্গে। গত ৮ এপ্রিল বিকেলে কলকাতায় আয়োজিত হয়েছিল এক বণিকসভার আলোচনাচক্র। মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের স্থানীয় দফতরে। আর সেই বণিকসভায় সেদিনের মধ্যমনি ছিলেন রিপাবলিক অফ কেনিয়ার এই রাষ্ট্র প্রতিনিধি। এই বণিকসভার আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁর দেশের আর্থিক হালহকিকতের কথা উল্লেখ করেন হিজ এক্সিলেন্সি অ্যাম্ব পিটার মুনিইরি। তিনি বলেন, "কেনিয়াতে বর্তমানে বসবাস করেন ৫২.৪ মিলিয়ন মানুষ। দেশের ৮৫% আয় তথ্যপ্রযুক্তি ও সংযোগ টেকনোলজির মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে অতি সম্প্রতি। ২০২২ সালে দেশের এফডিআই স্টক ছিল ১০.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা কেনিয়ার জিডিপির ৯.৫ % সুচকতূল্য। তবে দেশের ৭৫% মানুষ এখনও শ্রমদান করেন কৃষিক্ষেত্রে। অন্যদিকে চলতি দশকে নাইরোবির মোট জিডিপির ৬২% দাবিদার টেলিকম ও ফিনান্সিয়াল কার্যক্রম থেকে।" তিনি আরও বলেন, ভারত সহ পশ্চিমবঙ্গের পুঁজিপতিরা আমাদের দেশে আসুন। ব্যবসায়িক পর্যায়ে বিনিয়োগ করুন। নাইরোবির সরকার সর্বতো ভাবে আপনাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করবে। সহজলভ্য এখানকার শ্রম। এই দেশের সঙ্গে রপ্তানি ও আমদানি করতে চাইলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ শুল্ক ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়। আমরা ভারতের ব্যবসায়ীদের জন্য অপেক্ষায় আছি। পরিশেষে এটা বলতেই হয় ভারত ও কেনিয়ার দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক সুযোগ এবং অবস্থানে পশ্চিমবঙ্গের পটভূমি শীর্ষক আলোচনায় নাইরোবির এই কূটনৈতিক কর্তার শরীরী ভাষা কিন্তু দীপ্ত ভঙ্গিতেই বারবার একটা আমন্ত্রণ জানান দিচ্ছিল, হে বঙ্গবাসী তথা ভারতবাসী বণিকগণ, আমার হাত ধরে নিয়ে চলো সখা। উপস্থিত ব্যবসায়ীরাও তখন হাততালি দিচ্ছিলেন মুহুর্মুহু। এই হাততালির অনুররণ কেনিয়ামুখী যে কতটা পৌঁছাবে তার পারদ-মিটার জানান ভবিষ্যতই দেবে। কারণ ব্যবসায়ীরাও বিলক্ষণ জানেন, বাণিজ্যে বসতেঃ লক্ষ্মীর আসল নির্যাসটা কি! (www.theoffnews.com - Kenya)
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours