সুবীর পাল, এডিটর, দ্য অফনিউজ:
এখন সারা দেশ যেখানে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে বর্তমানের পাখির চোখ হিসেবে পরিগণিত করেছে, ঠিক সেখানেই উল্টো স্রোতে সাঁতার কেটে ভবিষ্যৎকে ভবিষ্যতের আর্থিক বুনিয়াদী দূরদৃষ্টির মান্যতা দিল কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই)'র পূর্বাঞ্চলীয় শাখা।
হ্যাঁ এমনটাই ঘটলো কলকাতার আইটিসি সোনার হোটেলে শনিবার সকাল থেকে সারাটা দুপুর। এক জমকালো আলোচনাচক্রের শীর্ষকের সাক্ষ্য থাকলো "ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি"। আয়োজনের শীলমোহরে জ্বলজ্বল করছিল ধারে ভারে ভারত শ্রেষ্ঠ একটিমাত্রই বণিকসভার নাম- সিআইআই।
"ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি"কে শুধুমাত্র নিয়মরক্ষার একটি আলোচনার পটভূমি হিসেবে বিশ্লেষণ করলে সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এহেন সুদূরপ্রসারী উদ্যোগকে অবশ্যই খাটো করা হবে। আসলে এই চিন্তনযজ্ঞ হয়ে উঠেছিল স্বনির্ভর উন্নত ভারতের এক আর্থিক বিশ্বমার্গের চুড়ান্ত সাধন বেদী।
সিআইআই পূর্বাঞ্চলীয় শাখা যে বিকেন্দ্রীকরণের বরাবরই মসিহা তা অনুষ্ঠানের শুরুতেই বুঝিয়ে দিল। প্রারম্ভিক পর্যায়ের বিজনেস সেশনে প্রকাশিত হলো নিজস্ব ঘরাণার বার্ষিক রিপোর্ট। চলতি আর্থিক বছরের জন্য আভ্যন্তরিন নির্বাচন থেকে উঠে আসা নির্বাচিতদের নামও ঘোষণা হলো ডায়াস থেকে যথারীতি।
এরইমধ্যে আয়োজকের পক্ষে পূর্বাঞ্চলীয় সভাপতি শিব সিদ্ধান্ত নারায়ণ কল বলেন, "ভবিষ্যতে ভারতের আর্থিক ভিত্তি আরও মজবুত করার উদ্দেশ্যে সীমান্তবর্তী দেশের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতেই হবে। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষাকে মান্যতা দিয়ে শিল্পজাত কার্বণের নির্গমন মাত্রাকে পরিপূর্ণ নিম্নগামী করতে হবে উৎপাদনের নিরিখে। উৎপন্ন দ্রব্যের মান বজায় রাখতে হবে সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে।"
অন্যদিকে সিআইআইয়ের সভাপতি আর দীনেশ জানান, ভারত আজ ক্রমেই উন্নতশীল দেশের তকমা বর্জন করে এক উন্নত দেশের প্রবেশ দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। একইসঙ্গে বিশ্বের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির সূচকের ভিক্ট্রি পয়েন্টে পঞ্চম স্থান থেকে উঠে এসে জাপানকে সরিয়ে ভারতের চতুর্থ স্থান দখল করা শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তিনি বলেন, "আমাদের দেশ অদূর ভবিষ্যতের পৃথিবীকে আর্থিক দিক থেকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। এমন মাহেন্দ্র মুহূর্তে জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের ময়দানে সিআইআই সার্বিক ডিজিটালাইজেশনকে বাজির কালো ঘোড়া হিসেবে বিবেচনা করতে আরম্ভ করেছে।"
মূল উদ্যোগের একাধিক সেশনের আলোচনাচক্রের একটিতে মধ্যমনি হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নারায়ণ স্বরূপ নিগম। ভবিষ্যৎ উপলক্ষে তাঁর ইঙ্গিতবাহী বক্তব্য, "আজ আমাদের স্বপ্ন দেখার দিন। আমরা অগ্রগতির স্বপ্নে বিভোর থাকবো নাকি অগ্রগতির পশ্চাদপদের স্বপ্নে নেতিবাচক হবো, তা আমাদেরই উপর নির্ভর করছে ও করবেও। কিন্তু একটা কথা ধ্রুবতারার মতো সত্য। যে সত্যটা হলো কারিগরি, নির্মল পরিবেশ, তথ্যব্যাঙ্ক, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, সামাজিক শ্রীবৃদ্ধি, দক্ষতা, মেধা, ভরসা, ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ জেট গতিতে এগিয়ে চলেছে সারা বিশ্ব জুড়ে। আগামীর অভিমুখে। ভারতও একই পথের শরিক। এখনই আমাদের তাই অবশ্যই ভাবতে হবে কোন ধরণের স্বপ্ন আমরা দেখবো?
সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শাখা আয়োজিত "ভবিষ্যতের প্রামান্যতায় ভবিষ্যতের প্রস্তুতি" শীর্ষক অনুষ্ঠানে নারায়ণ স্বরূপ নিগমের এই উষ্কে দেওয়া 'কোন স্বপ্ন আমরা দেখবো' প্রশ্নটি উপস্থিত শ্রোতামন্ডলীর শ্রবনেন্দ্রীয়ে প্রবেশতো করলো, এটা ঠিকই। কারণ প্রেক্ষাগৃহে তখন পিন পতনের একাগ্র নিস্তব্ধতা। কিন্তু বোধগম্য হলো কি শ্রোতাদের? আগামীর ভারত নিশ্চিতভাবেই তা জানান দেবে। অপেক্ষা শুধু নিজস্বতার! অপেক্ষা স্রেফ আগত সময়ের!
(www.theoffnews.com - CII)
Post A Comment:
0 comments so far,add yours