পলাশ মুখোপাধ্যায়, সিনিয়র জার্নালিস্ট, কলকাতা:

ভাগ্যিস নেতারা দলবদল করেন। না হলে তো কত কথা না বোঝা, বা না জানাই থেকে যেত। আমার মত কম বোঝা, বোকা সোকা লোকেরা যে কথা বুঝেই উঠতে পারে না, দেখেও দেখতে পায় না তেমন কিছু কথা আর কি… এই যেমন ধরুন গোছা গোছা টাকা নিচ্ছেন নেতারা ভিডিওতে দেখেও আমরা কিছুই বুঝিনি। তার পরেও কোনও প্রশ্ন না করে সেই নেতাদের ভোট দিয়েছি, জিতিয়েছি। দেওয়ালে সেই নেতার পোস্টার লাগিয়ে তলায় লিখেছি আমাদের গর্ব ইত্যাদি ইত্যাদি। তা এখন এতদিন পরে জানতে পারলাম নারদা কাণ্ডে যে টাকা নেওয়া হয়েছিল ওটা নাকি ঘুস! ভাগ্যিস শুভেন্দু দল বদলেছেন, তাই তো অভিষেকবাবু মুখ ফসকে বলেই ফেলেছেন ঘুসের কথা। তবে হ্যাঁ, শুধু শুভেন্দুই কাগজে মুড়ে ঘুসের টাকা নিয়েছিলেন, বাকিরা যারা এখনও তৃণমূলে তারা কিন্তু সকলেই টাকা দিয়ে রান্না বাটি খেলছিলেন। ওরা যখন দল ছেড়ে যাবেন তখন ওদের টাকাটাও ঘুস হয়ে যাবে, এখন নয় কিন্তু। কি মজা বলুন তো? 

শুভেন্দুবাবু আবার নিজেই জঞ্জালে পরিণত হয়েছেন সম্প্রতি। ভারতীয় জঞ্জাল পার্টিতে (বি জে পি) যোগ দিয়েছেন। না না গেরুয়ারা রেগে যাবেন না প্লিজ। আপনাদের পার্টির এমন সুন্দর নাম কিন্ত আমি দিইনি। অত প্রতিভা আমার নেইই। এই নাম দিয়েছেন সদ্য প্যারাশুটে আপনাদের দলে নামা শুভেন্দুবাবুই। পূর্ব মেদিনীপুরে একটি সভায় তারই ভাষণে ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি নামটা আমি পাই। রাজনৈতিক রসিকদের দাবি পরিষ্কার নেতা তো, তাই আর না পেরে নিজেই বিজেপিতে জঞ্জাল সাফাইয়ে গিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। কি মজা বলুন তো?

এদিকে শুভেন্দুবাবুর জঞ্জাল পার্টির তো মশাই ল্যাজে গোবরে অবস্থা। এক গাদা মেজ সেজ ছোট ন সাইজের নেতা অন্য দল থেকে তুলে এবার তাদের কি পদ দেওয়া হবে সেই চিন্তায় ঘুম ছুটেছে গেরুয়া বাহিনীর। পদ নিয়ে কি বিপদ বলুন তো? কেউ কেউ তো লজ্জায় মুখ লুকোচ্ছেন। কেন? বুঝলেন না, নারদার ভিডিও তো বিজেপিই প্রথম তাদের পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে দেখিয়েছিল। সেদিনকার সেই ভিডিওর অভিনেতারা এখন দলে দলে তাদের দলেই যোগ দিয়েছেন যে। ব্যস… সেদিনের ঘুস এ দলে এসেও এখন আর ঘুস নেই। সেদিনের অপরিষ্কার দুটি ফুলের পাপড়িরা এখন কিন্তু ধোয়া তুলসি পাতা। কি মজা বলুন তো?  

এত কিছু হচ্ছে পিসি কিছু বলবেন না, তা কি হতে পারে? তার কাছ থেকেই জানলাম, তার দলে অধিকাংশই পচা নেতাদের ভিড়। ভাগ্যিস নেতারা দল ছেড়েছেন, তাই তো তারা যে পচা সেটা জানা বা বোঝা গেল। এতদিন এত পচা দলে ছিল অথচ কেউ কোনও গন্ধই পান নি। কি মজা বলুন তো?

কি একটু হীনমন্যতায় ভুগছেন না কি? আমি তো খুব ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছি মশাই। না না দাদাদের কীর্তি দেখে নয়, আমার জানার বহর দেখে। এত কিছু আমি বুঝতেই পারিনি, দেখতেই পাইনি, জানতামই না। আপনি জানতেন কি!

(www.theoffnews.com - West Bengal politics BJP TMC Narada scam)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours