কাকলি সেনগুপ্ত, সিনিয়র জার্নালিস্ট, কলকাতা:

কী বলব একে, বড় চর্চা? তাই বলা যাক তবে। আরও ঠিকঠাক বলতে গেলে, এক মফস্বলের  মেয়ের কবির সঙ্গে দেখা। স্থান-- দেশ পত্রিকার দফতর। সাল তারিখ? উঁহু, মনে নেই। তবে সময়টা ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ এর মধ্যে কোনও একটা সময়। 

সকালের শেষ ব্যারাকপুর ধরে শিয়ালদা স্টেশন। তারপর জগত সিনেমা হলের সামনে থেকে চোদ্দ নম্বর ট্রাম। সিগন্যালে আটকালে লোরেটো ইশকুলের সামনে নেমে, আরেকটু হাঁটলেই গন্তব্য। মানে কমপ্লিমেন্টারি কপি নিতে হবে। কবিতা প্রকাশিত  হয়েছে, দেশ পত্রিকায়। মানসের থেকে কপি নিয়ে বসে গেলাম ঝর্ণাদির পাশে। ওদিক থেকে সুনীল বসু বলছেন, নতুন লেখা এনেছ? আমি ঘাড় ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে  বলছি, নাতো। পরে দেব। ঠিক তক্ষুনি কেমন ছবি থেকে নেমে এলেন কবি। ছবিতে যেমন দেখেছি, অগ্রজদের গল্পে যেমন, ঠিক সেরকম, শক্তি চট্টোপাধ্যায়। এক কপি দেশ পত্রিকা নিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন। বড় খাম? খাম হাতে দিয়ে মানস বললেন, সাগরদা এই খামগুলো দিতে বারণ করেছেন। কবি ততক্ষণে সাগরময় ঘোষের ঘরের দরজা ঠেলে বলছেন, সাগরদা এলাম তাহলে? আমি অবাক হয়ে দেখলাম তাঁর প্রবল উপস্থিতি।

এরপর আরও একদিন। তুষার পণ্ডিতের সঙ্গে  দেখা করে হাজির হলাম দেশ পত্রিকার দফতরে। দেখলাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে  এক ভদ্রলোক। শক্তি চট্টোপাধ্যায় বলছেন, এ আমার বন্ধু মিঠু। ব্যারাকপুরে যে বিজ্ঞানীরা নিগৃহীত হয়েছেন, ও তাদের একজন। আমাদের তো কিছু করতে হবে ওর জন্য। উনি তাই সই সংগ্রহ করছেন। আমাকে দেখে বললেন, সই করো।

'মানুষ বড়ো কাঁদছে' পড়েছিলাম একাশিতে। আমার তখন দশম শ্রেণী। মানুষের জন্য সেই অন্তর্লীন ভালোবাসাটি মনে পড়ছে আজ। সত্যিই যখন  মানুষের থেকে দূরে থাকার কাল এলো।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours