মোনালিসা মুখোপাধ্যায়, ফিচার রাইটার, হুগলি:

এফবি (ফেসবুক) জুড়ে ছবি আমি গর্বিত বাঙালী চ্যালেঞ্জ। কতো ছবির বাহার বাবুবিবিদের। আহা মরি মরি। সত্যি তো গর্বের কথা। দেখুন দেখি আমরা বাঙালী হয়ে বাংলা বলতে লজ্জা পাই, ঢ্যাঁড়সকে ভিন্ডি বলি, শুভ দীপাবলি ভুলে হ্যাপি দিওয়ালি বলি, কারণ না বলে কেন কি বলে নিজেকে জাহির করি তবু্ও ফেসবুকে আমি গর্বিত বাঙালী।

ব্রেড অ্যান্ড বাটার খাই ভুলেও মাখন পাঁউরুটি খাই না। জন্মদিনে পায়েসের বদলে ঢাউস কেক এনে লোক দেখাই। 

মনে পড়ে অনেকদিন আগে একবার মিষ্টির দোকানে এক বাচ্চা হাত দিয়ে রসগোল্লা আয়েস করে খাচ্ছিল। তার মার চোখে পড়তে সে  বাচ্চাটিকে রীতিমতো ধমকে বললো ছি ছি  অভী ম্যানারস জানো না স্পুনটা দিয়ে খাও। বাচ্চাটির অপরাধী মুখ। হয়তো তার মাও আজ গর্বিত বাঙালী।

পরের সংস্কৃতিকে চেটে সাফ করি নিজেদেরটা ভুলে। ধনতেরাস পালন আরও কতকি। বাঙালী বিয়েতে আজকাল সঙ্গীত মেহেন্দীও হয়। ছেলে মেয়ে বাংলা মিডিয়মে পড়লে জাত যায় তবু্ও আমি গর্বিত বাঙালী।  

ঠাকুরমার ঝুলির বদলে ছেলে মেয়েকে হ্যারি পটার আরো কত ইংরেজি বই টই পড়িয়ে স্ট্যাটাস মেইনটেইন করি। রবি ঠাকুরকে টেগোর বলি। অর্ধেক বাংলা মনিষীদের নাম জানিনা তবুও আমি হেঁ হেঁ গর্বিত বাঙালী। 

পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম ভুলে হাঁটুতে প্রণাম করি আজকাল। আপাদমস্তক নিজেদের সংস্কৃতির জলাঞ্জলি দিই রোজ। তবুও বাবা আমি গর্বিত বাঙালী। ফেসবুকে সেজেগুজে আমি গর্বিত ভীষণ ভাবে। গর্বের ফানুস উড়ছে লজ্জার আকাশে। 

এইসব গর্বিত বাঙালীর মাঝে আমি এক লজ্জিত বাঙালী। কারণ প্রতিদিন লজ্জিত হচ্ছে বাঙালী মনন বাঙালীর সংস্কৃতির আঙিনা।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours