ইরানী বিশ্বাস, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, নাট্যকার ও পরিচালক, বাংলাদেশ:

কবে থেকে ধর্ম সৃষ্টি হয়েছে তার সঠিক জবাব কারো কাছে নেই। মানুষ কবে সৃষ্টি হয়েছে তারও বৈজ্ঞানীক সঠিক উত্তর নেই। তবে কাল্পনিক ভাবে মানুষ সৃষ্টি নিয়ে যেমন মতান্তর রয়েছে। তেমনি ধর্ম নিয়েও রয়েছে মতান্তর। সবকিছু ছাপিয়ে একটা স্পষ্ট বিষয় আমরা বুঝতে পারি তা হলো মানুষ কিভাবে সৃষ্টি হয়। মানুষ থেকে মানুষের সৃষ্টি হতে মাত্র দুটি মানুষের দরকার হয়। তবে ধর্ম সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মস্তিস্ক থেকে। আমি অস্বীকার করতে চাই না, আমি আস্তিক। আমি ভীষন ভাবে বিশ্বাস করি বিশ্ব ব্রহ্মান্ড কেউ একজন সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি সবকিছু প্রতিপালন করেন। যদিও কেউ কখনো সৃষ্টিকর্তাকে দেখেছেন এমন প্রবাদ নেই। তবে ধর্মের প্রচারক বা ধারককে অনেকেই দেখেছেন বলে প্রচলিত আছে। 

বিশ্বে অনেক ধর্মাবলম্বী আছেন। তারা প্রত্যেকেই নানা ধর্মে অনুসারী। একটা কথা আমরা জানি, মানুষের ভাষার সাথে তাদের সংস্কৃতিও পরিবর্তন হয়। মানব জীবনে ধর্মকে ঘিরেই মানুষের সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ফুটে ওঠে। সাধারণত ধর্ম চারটি। তবে এই চারটি ধর্মের প্রত্যেকটির রয়েছে অজস্র মতাদর্শী। 

আমি যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি তা বিশ্ব, সমাজ তথা মানুষের জীবনের সবচেয়ে সেনসেটিভ বিষয়। তা হলো ধর্ম। যুগে যুগে ধর্মকে প্রতিস্থাপণ করতে রক্তক্ষয়ী ঘটনার জন্ম দিয়েছে। তাহলে ধর্মের কি দুটি দিক? কখনো ধর্ম মানুষকে অন্যায় থেকে রক্ষা করে। আবার কখনো ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে মানুষ অন্যায় করে। ধর্মীয় ইতিহাস থেকে জানা যায়, মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ধর্ম রক্ষা করতে নিজের আত্মীয়র বুকে অস্ত্র ধরেছেন। আবার কারবালার ময়দানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে পানির অভাবে হাসান হোসেন মৃত্যু বরণ করেছেন। এ ঘটনাও ঘটেছে ধর্ম রক্ষা বা প্রতিষ্ঠা করতে।  খ্রীস্ট ধর্ম রক্ষার্থে পবিত্র যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। তবে বুদ্ধ ধর্ম রক্ষা বা প্রচারের জন্য কোন সংঘর্ষ ঘটেছে কি না তা এখনো জানা যায়নি। অনেকের মতে কলিঙ্গ যুদ্ধের জন্য সম্রাট অশোককে দোষারোপ করা হয়। তবে ইতিহাসে জানা যায় সম্রাট অশোক বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করার অনেক আগে কলিঙ্গ যুদ্ধ হয়েছিল। সব ধর্মের প্রতিষ্ঠা করতে যুদ্ধে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এর কারণ হিসাবে ধারণা করা হয় অন্যান্য ধর্মকে সহজে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেমেছে এসব মহা মনীষীগণ। একমাত্র বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে তেমন কোন বাঁধা আসেনি। সত্যি বলতে কি, বৌদ্ধ ধর্ম এসেছে সবার পরে। গৌতম বুদ্ধ ছিলেন রাজপুত্র। তিনি বিশ্বাস করতেন অহিংসাই পরম ধর্ম। সুতরাং অহিংসা থেকেই কেবল ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। হয়তো এ কারণে মানুষ নিজেরাই উৎসাহিত হয়ে গৌতম বুদ্ধের অনুসারী হয়েছেন। 

যা হোক, ধর্ম নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া আমার মেধায় কুলাবে না। ধর্ম যদি একটা মহাসাগর হয়, তবে আমি ধর্ম সম্পর্কে যা জানি তা এক বিন্দু শিশির কণা। চারটি ধর্ম নিয়ে কিছু লেখাপড়া করে আমার সামান্য মেধায় যা গ্রহণ করতে পেরেছি সেটাই বলার চেষ্টা করি।

ধর্ম সম্পর্কে এক কথায় উত্তর হয় না। তবে আমি বুঝতে পেরেছি, প্রত্যেকটি ধর্মের বৈশিষ্ট্য আলাদা। প্রত্যেক ধর্মের গভীরে প্রবেশের রাস্তাও আলাদা। তবে প্রত্যেকটি ধর্মই আলাদা রাস্তায় চলতে চলতে একটি বিন্দুতে এসে মিলিত হয়। এই মিলিত বিন্দুই আমার কাছে ধর্ম বলে মনে হয়েছে। এই ধর্মের তাৎপর্য হলো তিনটি। ১. সত্য কথা বলা। ২. সৎ পথে চলা। ৩. সৃষ্টি (প্রান আছে এমন) কে ভালবাসা। 

তখন আমি দ্বিধায় পড়ে যাই, ধর্ম তাহলে কি? নিজের মধ্যে তৈরি হওয়া প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে এক গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে যাই। হিন্দু শাস্ত্রানুযায়ী প্রধান ধর্মগ্রন্থ ‘বেদ’। তবে হিন্দুমতানুসারীগণ বেশি পাঠ করেন উপনিষদ। শ্রীকৃষ্ণের বানী নিয়ে রচিত পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘শ্রীমদ্ ভাগবত গীতা’ই উপনিষদ। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ‘আমি যা করি তা তোমরা করো না। আমি যা বলি তা করো’ যেহেতু হিন্দু ধর্মের প্রচারক নেই, এবং ঠিক কবে থেকে এ ধর্ম পালন করা শুরু হয়েছে তার কোন দিন তারিখ নেই। অন্যান্য ধর্মমতে প্রত্যেক মানুষকে জন্মের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজের ধর্ম গ্রহন করতে হয়। হিন্দু ধর্মে এরকম কোন নিয়ম নেই। মানুষ জন্মের পর যে ধর্ম নিয়ে বেড়ে ওঠে সেটাই সনাতন বা হিন্দু ধর্ম। হিন্দু ধর্মকে তাই সনাতন ধর্ম বলা হয়ে থাকে। সনাতন অর্থাৎ আদি। 

সনাতন ধর্মের প্রচারক না থাকায় শাস্ত্রীয় মিথ বা পৌরাণিক কাহিনীতে বর্নিত প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হিন্দু ধর্মের সার গ্রহণ করা হয়। এখানেও বলা হয়েছে ‘ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়।’ ধর্মের তাৎপর্য হিসাবে ওই তিনটি কথাই বলা হয়েছে।

 ইসলাম শব্দের অর্থ হলো শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করা। মুসলিমদের প্রধান পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘কুরআন’ । ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন কুরআন আল্লাহর বানী। এটি আল্লাহর দ্বারা ফেরেসতা জিবরাইলের মাধ্যমে মুহাম্মদ (স:) এর নিকট প্রেরিত সর্বশেষ জীবন ধারনের বিধান। ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হলো

১.কালেমা (বিশ্বাস) ২. নামাজ (প্রার্থনা ) ৩. সিয়াম (উপবাস) ৪. যাকাত (দান )

৫. হজ্জ্ব (মক্কা ভ্রমন )

মানব জাতির প্রতি পবিত্র কুরআনে আল্লাহর কাছ থেকে ১০০টি বানী দেওয়া হয়েছে। এই বানীতে জীবনকে সুন্দর এবং শান্তিপূর্ন করতে উপদেশ দেওয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে, 

১.‘সৎ কাজ নিজে করে, অন্যকে করতে বলো।’

-    (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৪৪)

২. ‘বিবাদে লিপ্ত হইও না।’  

-    (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৬০)

৩. ‘ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।’

-    (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৬)

ইংরেজি ‘খ্রীস্ট’ শব্দটি গ্রীক শব্দ ‘খ্রীস্টাস’ থেকে উদ্ভূত, যাকে হিব্রু ভাষায় ‘মাসিহ’ বলা হয়। ‘খ্রীস্ট’ শব্দের অর্থ স্বর্গীয় মহামান্বিত ব্যক্তি বা ঈশ্বরের প্রেরিত বা নির্ধারিত। খ্রীস্টধর্ম একটি অব্রাহামীয় একেশ্বরবাদী ধর্ম যা নাসরতীয় যীশুর জীবন ও শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয়। খ্রীষ্টীয় ১ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যের যিহুদিয়া প্রদেশে একটি দ্বিতীয় মন্দির ইহুদি উপদল হিসেবে খ্রীষ্টধর্ম যাত্রা শুরু করে। তাদের সাধারণ ধর্মমত অনুসারে যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র। যিনি মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য যন্ত্রনাভোগ করেছিলেন, ক্রুশারোহণ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন কিন্তু মানবজাতীর জন্যই পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। যেটাকে বাইবেলে সুসমাচার অর্থাৎ ‘সুসংবাদ’ বলে অবিহিত করা হয়েছে।

খ্রীস্টধর্মের অনুসারীরা একটি ধর্মীয় পুস্তকসমগ্র অনুসরণ করে, যার সামগ্রিক নাম বাইবেল। বাইবেলের পুস্তকগুলিকে দুইটি বড় অংশে ভাগ করা হয়েছে,

১. পুরাতন নিয়ম: ৪৬ টি পুস্তক সমৃদ্ধ

২. নতুন নিয়ম: ২৭ টি পুস্তক সমৃদ্ধ

খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, একমাত্র একজন ঈশ্বর স্বর্গ ও মর্তের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। খ্রীষ্টান ধর্মানুসারীরা মনে করেন বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের সমস্ত পুস্তক ঈশ্বরের বাণী।

খ্রীষ্ট ধর্ম দীক্ষিত লোকেরা চারটি মূলনীতির উপর ভিত্তি করে উপাসনা করে থাকে। যাকে বলা হয় মাসীহ (আঃ) যে ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেছে তা কেবলমাত্র ঈশ্বরের শোকরানার জন্য, সঠিক উপাসনা রুহের দ্বারা পাওয়া সম্ভব। উপসনা একটি সমষ্টিগত কর্ম যা চার্চে সম্পন্ন হয় এবং উপাসনা হল, চার্চের মূল কাজ এরই মাধ্যমে চার্চ মাসীহের দেহ হিসেবে নিজেকে দুনিয়ার সামনে প্রকাশ করে। তারা প্রশংসা পাঠ এবং ব্যাপটাইজের মাধ্যমে উপাসনা করে থাকে।

বাইবেলের বানীতে বলা হয়েছে,

‘ঈশ্বরের পথে চলতে গিয়ে যারা নির্যাতন ভোগ করেছেন, তাঁরা ধন্য কারণ স্বর্গরাজ্য তাদেরই হবে।’ আবার বলা হয়েছে ‘যারা পয়সার জন্য ঠকায় তারা শীঘ্রই সব পয়সা হারাবে। কিন্তু পরিশ্রমের বিনিময়ে যারা অর্থ জোগাড় করে তাদের অর্থ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাবে।’

গৌতম বুদ্ধ বা সিদ্ধার্থ গৌতম ছিলেন প্রাচীন ভারতের এক বিখ্যাত দার্শনিক এবং বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। ত্রিপিটক বৌদ্ধ ধর্মীয় পালি গ্রন্থের নাম। তিন পিটকের সমন্বিত সমাহারকে ত্রিপিটক বোঝানো হচ্ছে। এগুলো হলো, বিনয়, সূত্র, অভিধর্ম। বুদ্ধের দর্শন ও উপদেশে সংকলিত গ্রন্থই ত্রিপিটক নামে পরিচিত। এখানে গৌতম বুদ্ধের অমর বানী লেখা রয়েছে। যেমন, ‘তুমি মুখে কি বলছো সেটা কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো তোমার কাজ।’ ‘অন্যকে কখনো নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করো না, নিয়ন্ত্রন করো কেবল নিজেকে।’ ‘অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তারচেয়ে বরং বর্তমান মুহুর্ত নিয়ে ভাবো।’

প্রত্যেকটি ধর্মের রীতিনীতি এবং আদর্শ অনুসরণ করলে পৃথিবীতে কোন নৈরাজ্য থাকার কথা নয়। অথচ ধর্মের নামে মানুষ প্রতিনিয়ত অধর্মকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমি এমন অনেক ধার্মিক ব্যক্তিকে দেখেছি, যাদের মধ্যে এই তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিতি। আবার অনেক অধার্মিককে দেখেছি যাদের মধ্যে এই তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। আলোচ্য চারটি ধর্মের মধ্যে খ্রীস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা ধর্ম পালন করতে তেমন আরম্ভর করে না। তবে বাকী দুটি ধর্মের মানুষেরা ধর্মের নামে একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে থাকে। যার ফলাফল হিসাবে দেখা যায় নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা।

হিন্দুরা বারো মাসে তের পুজা করে থাকে। প্রতিটি পুজায় প্রচুর অর্থ খরচ করা হয়ে থাকে। একই সময়ে দেখা যায় কতো মানুষ অনাহারে দিন কাটায়। আবার কেউ কেউ হাজার কোটি টাকার পুজা করে গিনিস বুকে নাম লেখানোর চেষ্টা করে। হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের কোথাও লেখা নেই, বছরের সেরা বা সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করে পুজা করা হলে ঈশ্বর তাকে সবচেয়ে বেশি পূন্য দান করবেন। কথায় আছে, প্রত্যেকটি প্রাচুর্যের পেছনে অন্যায় লুকিয়ে থাকে। যে ব্যক্তি বছরে এক টাকা খরচ করে পুজা করেন, তিনি নিশ্চয়ই বৈধ আয়ের টাকা দিয়ে এত চাকচিক্য করতে পারেন না। সুতরাং ধর্ম প্রতিষ্ঠা বা পালনের নামে তিনি নিজের অজান্তে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়েছেন।

ঠিক একই ভাবে আমরা দেখতে পাই মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব রোজার ঈদ এবং কুরবানীর ঈদ। ঈদ আসতে না আসতেই বাজারে অঘোষিত পন্যমূল্য হয় উর্ধগতি। একমাস সিয়াম সাধনার পর মানবতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আসে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। পরস্পরের ভেদাভেদ ভুলতে আত্মীয়-পরিজন, গরীব মানুষদের মাঝে দান করা হয় যথাসাধ্য খাদ্য-বস্ত্র। অথচ এই পবিত্র ঈদ পালনে আয় করা হয় অবৈধ টাকা। কেউ অফিসে ফাইল আটকিয়ে, কেউ খাদ্যে ভেজাল মিশিয়ে, কেউ দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে। অবৈধ পথে অর্জিত টাকা যদি পবিত্র কাজে ব্যবহার করা হয়? সত্যি কি সেই কাজ পবিত্র থাকে? অনেকে এই অবৈধ টাকা দিয়ে এলাকার সবচেয়ে দামী গরু কিনে কুরবানী দিয়ে নিজেকে জাহির করেন। 

অধিকাংশ সময়ে দেখা যায়, সমাজের এই অন্যায় করা মানুষগুলি ধর্ম নিয়ে খুব বেশি কথা বলেন। নীতিহীন মানুষগুলি ধর্ম প্রতিষ্ঠায় বুঝি বেশি মরিয়া। অনেক সময় দেখা যায়, এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্ম ছোট করতে ব্যস্ত। কখনো কখনো নিজ ধর্ম প্রতিষ্ঠা বা ধর্মের প্রতি ন্যায় প্রতিষ্ঠা কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ধর্ম কি এত ঠুনকো, যে কেউ একটা কথা লিখে বা অপমান করলে অপবিত্র হয়ে যাবে ! ভগবান, আল্লাহ, ঈশ্বর, গড কেউ-ই কোন ধর্মগ্রন্থে বলেননি, আমাদের জন্য তোমরা  মারামারি করো। অথবা যে আমাদের শ্রেষ্ঠ প্রমান করতে পারবে, তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। অথচ মুর্খ মানুষ নিজেদের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ প্রমান করতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে মানুষ খুন করে। 

অনেকেই আছেন না জেনে, না বুঝে ধর্ম নিয়ে তর্ক জুড়ে দেন। তাদের বলছি, অন্যের ধর্ম নিয়ে কথা বলা বা তর্ক করার আগে নিজের ধর্ম সম্পর্কে পরিপূর্ন জ্ঞান থাকতে হবে। যে ব্যক্তি নিজের ধর্ম সম্পর্কে ভাল জানে এবং নিজের ধর্মের প্রতি ভালবাসা আছে তিনি কখনোই অন্যের ধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলবেন না। ধর্ম যার যা-ই হোক, প্রত্যেক ধর্মের সার সংক্ষেপ কিন্তু একই। সুতরাং অন্যের ধর্মকে ছোট করলে, নিজের অজান্তেই নিজের ধর্মকে ছোট করা হয়। কারণ আপনার ধর্ম আপনাকে অন্যের ধর্মকে ছোট করতে শিক্ষা দেয়নি।


Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours