পুরুষ বললেই সমাজের চোখে ভেসে ওঠে এক কঠিন হৃদয়ের মানুষের চেহারা। সমাজের অলিখিত নিয়মমতো পুরুষ মানুষের মন হবে শক্ত, অহেতুক আবেগ বর্জিত।তারা পরিশ্রমের কাজ করবে, বিপদে অবলা নারী ও শিশুদের রক্ষক হবে ইত্যাদি একজন পুরুষের সামাজিক মানদণ্ড। বেচারা পুরুষ যুগে যুগে এই সামাজিক নিয়মের শিকলে ছটফট করে মরছে। পুরুষ তোমায় কাঁদতে নেই, তাই পুরুষটি শত আঘাতেও চোখের জল ফেলতে পারে না। বুকের ভেতরে বেদনা জমতে জমতে পাথর হয়ে তাকে এক অন্য মানুষ করে তোলে।
কোমল মনের পুরুষদের যন্ত্রণা আরো বেশী, কাঁদলে জুটবে মেয়েলী তকমা, প্রাণখুলে নিজের বেদনার কথা বললে সমাজ হেসে বলবে "পুরুষ মানুষের আবার এসব কি কথা?" নিসঃঙ্গ পুরুষের অসম্ভব যন্ত্রণা, মনের কষ্ট তাদের মনেই থেকে যায়। একটি মেয়ে তার কষ্টের কথা, নির্যাতনের কথা বলতে পারে বন্ধুদের কিন্তু একজন পুরুষ পারে না। এটাই সমাজের সবচেয়ে আলো না পাওয়া দিক। তুমি পুরুষ, তাই তোমার দুঃখ পাওয়া চলবে না। নিজের ইচ্ছে দমন করে সংসারের জোয়াল টানতে টানতে তুমি বৃদ্ধ হবে, সব ঝড়ঝাপটা থেকে সংসারকে বাঁঁচাবে কিন্তু তোমার ক্লান্ত হওয়া চলবে না। এ এক অদ্ভুত নিয়ম। পুরুষ মানেই বুঝি একজন যোদ্ধা? ইচ্ছে না থাকলেও যুদ্ধ করতে হবে।
স্বামী তার স্ত্রীকে গৃহকাজে সাহায্য করলে জুটবে স্ত্রৈণের তকমা। আবার মন ভাঙলে চোখে জল আসে যদি তবে তাকে বলা হবে "ছিঃ, পুরুষ মানুষের আবার মেয়েদের মত চোখে জল কেন?" অথচ আমরা সবাই জানি কাঁদলে মনের ভার লাঘব হয়। একটি মেয়ে কেঁদে তার যন্ত্রণা লাঘব করতে পারে কিন্তু পুরুষের কাঁদার উপায় নেই। তাই তাদের মনোকষ্টের লাঘব হয়না সহজে।
স্বভাব ভীতু ছেলেটিকে সবাই নানা ভাবে হেনস্থা করবে। পুরুষ তোমায় ভীতু হতে নেই। নার্ভাস হতে নেই।
কি আজব এই সিস্টেম। সমাজের এই নিয়মে ফাঁসে ছটফট করে কত পুরুষ শেষ হয়ে যায় তিলে তিলে। তবে সমাজ বদলাচ্ছে। তাই বলি, পুরুষ তুমি কাঁদো। মনের কথা বলো প্রাণখুলে। বাঁচো এই খোলা আকাশের নীচে।
ভাল লাগল।
ReplyDelete