দীপ্তি জামান, লেখিকা, বাংলাদেশ:
শ্রেণিহীন বা সাম্যবাদ মানে সর্বজনীন বা সমান অধিকার৷ এক কথায় সবার জন্য সাম্যের ভিত্তিতে মৌলিক অধিকার সুসম্পন্ন সমাজ৷ যে সমাজ ব্যবস্থায় পুঁজিবাদের বিপরীতে আদিম কমিউনিজমের দিকে লক্ষ্য রেখে সমাজতন্ত্রের উন্নততর স্তরের একটি বৈজ্ঞানিক সমাজ গঠন করা৷
শ্রেণিহীন সমাজের মূল লক্ষ্য হল ব্যক্তি মালিকানা এবং শ্রমিক শ্রেণীর উপর শোষণের হাতিয়ার পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার অবসান ঘটানো। কার্ল মার্কস যে মতাদর্শ উপস্থাপন করেছিলেন সেই মতে সাম্যবাদ হল সমাজের সেই চূড়ান্ত শিখর, যেখানে পৌঁছাতে হলে বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজে আর্থনৈতিক সাম্য স্থাপন করতে হবে এবং সেই ক্রান্তিকালে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে, সমাজে সামগ্রী ও সেবার অতিপ্রাচুর্য সৃষ্টি হবে। কোনো দেশে সাম্যবাদ থাকলে সেখানে ধনী গরীবের ব্যবধান থাকবে না। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার দ্বায়িত্ব সরকার নেবে।
সাম্যবাদ হল স্বাধীন, সামাজিক ভাবে সচেতন শ্রমজীবী মানুষের উঁচু মাত্রায় সুসংগঠিত সমাজ, তাতে কায়েম হবে সকলের স্বশাসন। সেই সমাজে সমাজের কল্যাণের জন্য শ্রম হয়ে উঠবে প্রত্যেকের মুখ্য অপরিহার্য প্রয়োজন এবং এই প্রয়োজন উপলব্ধি করবে প্রত্যেকেই। প্রত্যেকের সামর্থ্য নিয়োজিত হবে সর্বসাধারণের সর্বাধিক কল্যাণের জন্য'। সাম্যবাদ ব্যক্তিকে ব্যাপক সামাজিক স্বাধীনতা দেয়। এতে রয়েছে কমিউন সংস্থাগুলিতে নির্বাচিত হওয়ার ও নির্বাচন করার এবং সমাজের প্রশাসনে অংশগ্রহণের অধিকার; শিক্ষা, বিশ্রাম, বিনোদন ও ছুটির অধিকার; বৈষয়িক ও সাংস্কৃতিক উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজের সুযোগ সুবিধা। সাম্যবাদ ব্যক্তিকে সাংস্কৃতিক সকল ফলভোগের সুযোগসহ বিজ্ঞান ও শিল্পকলায় সক্রিয় অবদান যোজনে সাহায্য করে।
শ্রেণিহীন সাম্যবাদ হচ্ছে সর্বহারাদের একটি মানবিক সমাজ ব্যবস্থা৷ যে সমাজ ব্যবস্থায় সকল শ্রেণি বর্ণ গোষ্ঠী গোত্র মানুষের পূর্ণাঙ্গ মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে৷ আর এটাই মানব ইতিহাসে সর্বমানবিক যুক্তিসংগত এবং প্রগতিশীল বৈপ্লবিক সমাজ ৷
Post A Comment:
0 comments so far,add yours