সাজিয়া আক্তার, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ:
করোনাভাইরাস দীর্ঘমেয়াদী মহামারীর আকার ধারণ করেছে। করোনার লাস্ট স্টেজ বা চতুর্থ ধাপে এসেও এ মুহূর্তে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও তুলনামূলক বাড়ছে। তবে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার পরও মেনে চলা উচিত যে সকল নিয়ম সেসব নিয়ম সম্পর্কে-
১. করোনামুক্ত হওয়ার পরও অনেকের শরীর দুর্বল থাকে। আবার অবসাদও চলে আসতে পারে। এরকম সময়ে কোনো কাজ করতে গেলে হাঁপিয়ে ওঠাও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে বেশ কিছুদিন বিশ্রাম নিতে হবে এবং নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। এ ক্ষেত্রে একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা।
২. করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও কিছুদিন ফুসফুসের ব্যায়াম করতে হবে। সুস্থ হওয়ার পর কারো যদি অল্প পরিমাণে শ্বাসকষ্ট হয়, তবে ‘সেলফ প্রোনিং’ বা উপুড় হয়ে শুয়ে থাকার ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী নিয়মিত ব্যায়ামও করা যায়। অন্যদিকে হাসপাতালে অনেক দিন শুয়ে থাকার ফলে কারো কারো হাত-পায়ের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করতে হবে।
৩. যারা দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগ যেমন হার্টের সমস্যা, কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিলতায় আক্রান্ত; তাদের করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও ফলোআপ চিকিৎসা করানো উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। করোনামুক্ত হওয়ার পরও অনেকের কাশি থেকে যেতে পারে বেশ কিছুদিন। এ জন্য নিয়মিত আদা-চা পান করতে পারেন। ছাড়া ফুসফুসে ক্ষত বা প্রদাহ আছে কি না সেটি চেকআপ করে নিতে হবে।
৪. প্রচুর ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার ও শাকসবজি খেতে হবে। একটু বয়স্ক রোগীর ক্ষেত্রে শরীরে ভিটামিন-ডির অভাবজনিত লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তখন ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।
৫. করোনা সংক্রমিত ও সুস্থ হওয়া উভয় ব্যক্তির জন্যই মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ফলে করোনামুক্ত হলেও মানসিক ক্ষত থেকে যেতে পারে। এ সময় পরিবার ও আশপাশের মানুষদের পাশে থাকতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে হেয় করা হয় বা দোষারোপও করা হয়। এ মানসিকতা থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। মানসিক বিপর্যয় কাটাতে খেলাধুলা, বইপড়া কিংবা অন্যান্য বিনোদনমূলক কাজ করা যেতে পারে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours