অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়, লেখিকা, দুর্গাপুর:
লকডাউনে ঘরবন্দি। এক নিঃসঙ্গতা। হেঁসেল থেকে বসার ঘর হল পৃথিবী।
সরকার এক গন্ডি কেটে দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছে, গন্ডির বাইরে গেলেই গন্ডোগোল।
এক্কেবারে করোনাসুর অপহরণ করে কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে চলে যাবে। এক অজানা আতঙ্কের কৃষ্ণ গহ্বরে। এই ভয়, এই আতঙ্ক মানুষকে শেষ করে দিচ্ছে।নচিকেতার সেই গানটা যেন অনুভবের তারে কেবলই বেজে বেজে উঠছে। 'যখন জীবন থমকে দাঁড়ায়, নিরাশার পাখি দুহাত বাড়ায়।' সবকিছু যন্ত্রের যন্ত্রণা নিয়ে করে যাচ্ছি এই প্রানহীন দেহ নিয়ে। এক স্বাদহীন পানসে খাবার যেন এই জীবন মরুভূমি। খেতে হবে তাই খাওয়া, শ্বাস নিতে হবে তাই নেওয়া, সেই নির্মল, তাজা শ্বাস টানার আমেজ যেন আজ আর নেই। আত্বীয় স্বজনও যেন অনাত্মীয়। নিজেকেও জড়িয়ে ধরতে ভয়, যদি কিছু হয়! নিজের ত্বক, নিজের মুখ, নিজের চোখ তাদের কেউ ছোঁওয়া বারণ এমনই এক কঠোর শাসন।
প্রিয় জন বাড়িতে এলেও তাকে কুশল জিজ্ঞেস না করে দেখিয়ে দিচ্ছি ওয়াস রুমটা কোন খানে? এই কি জীবন? তারপর স্যানিটাইজার নয়তো স্নান। এতে করে কি জীবন সুধা করা যায় পান? এ তো একরকম কাউকে ঘরে না আসতে বলা। জানালার পাশে বসে শুধু বাইরে তাকিয়ে থাকা নয়তো ফেবু, হোএপ, এপ নয়তো মুভি নয়তো ফোন। আর ফোন করব কি? ফোনে কানেকশন না হলেও ভাসন শুনতেই হবে 'স্বাস্থ্য কর্মী পুলিশিদেরকে সম্মান করতে শিখুন' তারপর কাটা কাটা অল্প বোঝা বেশিটা না বোঝা শুধু কথার বোঝা নিয়ে ফোনে বলি কথা। কথা নাকি ব্যথা? কি জানি?
বড্ড যেন একা। নাই দশজন মিলে তাস খেলা, না আড্ডার আসর। শুধু স্মৃতির মেঘ গুলো ভেসে ভেসে ওড়ে মনের আকাশে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours