দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

দীর্ঘ লক ডাউনের জেরে বন্ধ ছিল মন্দির (সঙ্গীত)। এবার ঐতিহ্যবাহী উপাসনার মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চাইছে বিশ্ব ভারতী ৷ বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে,  পঠন পাঠন শুরু হতে চলেছে। সেজন্য ছাত্র ছাত্রীদের ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী। 

করোনা যুদ্ধে অন্যতম সৈনিক চিকিৎসক। তাই চিকিৎসক সমাজ কে সন্মান জানতে এদিনের উপাসনার 'আচার্য 'রূপে চিকিৎসক কে সন্মান জানিয়ে বিশ্বভারতী তে শুরু বুধবারের ঐতিহ্যবাহী  ব্রহ্ম উপাসনা।

কোরোনা সংক্রমণ রুখতে  দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল উপাসনা গৃহ।  বুধবার শুরু হল শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে ব্রহ্ম উপাসনা । বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য অনুসারে প্রতি উপাসনায এক আচার্য থাকেন। তিনিই উপাসনা পরিচালনা করেন। বিশ্বজুড়ে করোনা যুদ্ধে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেন করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকরা। তাই সেই চিকিৎসক সমাজ কে সন্মান জানতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এদিনের  আচার্যের স্থানে চিকিৎসক অনির্বাণ দাশগুপ্তকে বসিয়ে সম্মান জানানো হয়। অনির্বাণ বাবু পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসক রুপে কর্মরত। এছাড়াও উপাসনা ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা ।এদিন সকাল ৬,৪৫ শুরু হয় উপাসনা। 
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, দুদিন আগেই উপাসনা গৃহ খুলে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরের মধ্যেই চকের দাগ কেটে বসার জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়। এদিন বিশ্বভারতী উপাচার্য, অধ্যাপক ছাত্র-ছাত্রীরা মুখে মাস্ক পরে পৌঁছান উপাসনা গৃহে। সঙ্গীত ভবনের অধ্যাপিকা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্র গান- "আমি মারের সাগর পাড়ি দেব। বিষম ঝড়ের বায়ে। মাভৈঃ বাণীর ভরসা নিয়ে ছেঁড়া পালে বুক ফুলিয়ে।" 
কোরোনা প্রাদুর্ভাবের ফলে বসন্তোৎসব বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরে পরেই ১২ মার্চ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বুধবারের ব্রহ্ম উপাসনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রতি বুধবার শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে বৈদিক মন্ত্রপাঠ, ব্রহ্ম উপাসনা, পাঠ, ব্রহ্ম সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে উপাসনা হয়ে থাকে। 
বিশ্বভারতী কর্মী মন্ডলীর যুগ্ম সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, "দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর সামাজিক দূরত্ব মেনে বুধবারের উপাসনা শুরু হল। আমরা চাই নিয়ম ও বিধি-নিষেধের মধ্যে দিয়ে ছন্দে ফিরুক বিশ্বভারতী।" 

আশ্রমিকরা জানান, এর আগে এত দিন পর্যন্ত উপাসনা  কোনও দিনই বন্ধ ছিল না । দীর্ঘদিন পর বিশ্বভারতীতে উপাসনা শুরু হওয়ায় খুশি আশ্রমিক, পড়ুয়ারা ।তবে এর আগেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিঞ্জপ্তি দিয়ে আগামী ১জুলাই মধ্যে ছাত্র ছাত্রীদের শান্তিনিকেতনে ফিরে আসার জন্য নোটিশ জারি করে। বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতী স্পষ্ট করে দিয়েছে বাইরে থেকে আসা প্রত্যেক পড়ুয়াকে বিশ্বভারতীর পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রথমেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।এবার দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর উপাসনা শুরুর মধ্যে দিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে চাইছে কবির আশ্রম।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours