দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:

আমেরিকাতে এখন তোলপাড় চলছে। আপনারা সবই নিশ্চয় শুনেছেন যে মিনিয়াপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড বলে একজন আফ্রিকান  আমেরিকানকে পুলিশ নির্মম ভাবে গলায় হাটু চেপে মেরেছে।বেচারা বহুবার বলছিলো যে "আই ক্যান্ট ব্রিড"। তারপাশে তিনজন পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখছিলো সে দৃশ্য। সারা দেশে প্রতিবাদ চলছে আজ চোদ্দ দিন ধরে, নিউয়র্ক থেকে লন্ডন, থেকে প্যারিস, আমস্টারডাম সব দেশে মিছিল আর প্রতিবাদ চলছে। প্রথমে একজন পুলিশকে থার্ড ডিগ্রি খুনের চার্জ করা হয়েছিল, যেটা খুব লঘু মামলা। তারপর চাপে পরে এখন সেই চারজনকেই এখন সেকেন্ড ডিগ্রি চার্জ করে হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে সারাজীবন জেলে কাটাতে হবে। দুঃখের ব্যাপারটা কি জানেন। আমাদের সেকি সমালোচনা যে আমেরিকা বর্ণবিদ্বেষী। ওরা নিগ্রোদের ওপর অত্যাচার করে সব সময়। আর আমরা ধোয়া তুলসী পাতা? আমাদের মতো বর্ণবিদ্বেষী বিশ্বে খুব কম আছে। কালো মেয়ে বিয়ে করবো না, নাগরিকের বাড়ির ফ্রিজ খুলে পরীক্ষা করে যদি বিফ পাওয়া যায় তবে তাকে রাস্তায় পিটিয়ে খুন করি, সেদিন পুলিশকে নিয়ে তিনজনকে পিটিয়ে খুন করলো পালঘরে। কি ভাবে দুটো ছেলের কব্জি কী দিয়েছিলো, সাতারও জন  অল্পবয়সী ছেলে মেয়েদের রড দিয়ে পিটিয়ে বিজন সেতুতে আগুন দিয়ে মেরেছিলো মহান জ্যোতি বুদ্ধের দল। একজন কি ধরা পড়েছে বা শাস্তি হয়েছিল? 
কাজেই আমেরিকা খারাপ বর্ণবিদ্বেষী বলার আগে নিজেদের শয়তানির কথা ভাবুন আর চুপ করে থাকুন। আমরা সবাই বর্ণবিদ্বেষী কম আর বেশি। মুসলমানদের বাড়ি ভাড়া দেবেন? বা ওরা আমাদের বাড়ি ভাড়া দেবে? আমি আপনি গরিব মজদূরের বাড়িতে খাবো? আমার সলমান খান বা জাভেদ আখতারের বাড়িতে খেতে কোনো আপত্তি নেই। কারণ ওরা শুধু বড়লোকি না ওরা সমাজের নাম করা লোক। মনে রাখবেন এই আমেরিকাতেই নাগরিকদের অধিকার সবচেয়ে বেশি সারা বিশ্বে। আমেরিকার নাগরিকেরাই ভিয়েতনামের যুদ্ধের প্রতিবাদ করেছিল লাখে ২। শুনুন এদের অধিকারের কথা। ইরানের যুদ্ধের সময় ইরানিয়ান ছাত্ররা হোয়াইট হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে আমেরিকান পতাকাতে আগুন লাগিয়েছিলো। চিন্তা করুন পাকিস্তানী ছাত্ররা দিল্লিতে ভারতীয় পতাকা পোড়াচ্ছে প্রতিবাদ করে? আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট জানালো যে ইরানিয়ানদের সম্পূর্ণ অধিকার আছে পতাকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ করার। রাগের প্রকাশ করাটা কোনো অন্যায় না যদি শান্তি পূর্ণ হয়। এদিকে মাথা মোটা ট্রাম্প মিলিটারি নামাচ্ছে আমেরিকার নাগরিকদের বিরুদ্ধে। দেশ নাকি বাঁচাতে হবে বিদ্রোহীদের হাত থেকে। মানুষ ওর চালাকি ধরে ফেলেছে।শক্তিশালী আমেরিকা ভয় পাচ্ছে কয়েকটা অল্প বয়সী দোকান লুঠ করা ছেলে মেয়েদের জন্য? ট্রাম্প শেষ। দিন গুনছি 2021 এর জন্য। নতুন নেতা আসবে কি? ভালো থাকবেন। (ক্রমশঃ) 

(ছবি সৌজন্যেঃ প্রতিবেদক। এক একান্ত মূহুর্তে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে প্রতিবেদক)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours