মহঃ মকসুদ আলম, সাংবাদিক, বীরভূম:

করোনা মোকাবিলায় লক ডাউনের মাঝে বিশ্ব ভারতী খোলার সিদ্ধান্তে দোলাচলে পড়ুয়া থেকে অনেকেই! এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত জানায় নি সরকার। অথচ এরই মাঝে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করলো বিশ্বভারতী। বিঞ্জপ্তি তে তড়িঘড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের শান্তিনিকেতনে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ এই বিঞ্জপ্তি পূনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে বিশ্বভারতী ছাত্র-ছাত্রী ঐক্য মঞ্চ। তাদের মতে আগামী ১ জুলাই এর মধ্যে ভিন রাজ্য, ভিনদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের বিষয়টি না ভেবেই, এমন পরীক্ষার সূচি ঘোষণায বিপাকে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা, লঙ্ঘিত হবে স্বাস্থ্য বিধি ও। 

 করোনা আতঙ্কের মাঝে খুলছে বিশ্বভারতী। সব পড়ুয়াকে বিশ্বভারতীতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিল কর্তৃপক্ষ। ২৮ জুন থেকে ১ জুলাইয়ের মধ্যে শান্তিনিকেতনে আসার নির্দেশ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।  মঙ্গলবার এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা বাইরে রয়েছে তাদেরকে মেল মারফতে  এই বিজ্ঞপ্তি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতী জানিয়েছে আগামী ২ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত বিশেষ ক্লাস নেওয়া হবে এবং ২২ জুলাই থেকে ফাইনাল সেমিস্টার পরীক্ষা হবে। ৫ আগস্ট এর মধ্যে ফল প্রকাশ হয়ে যাবে। অন্যদিকে, যেহেতু লক ডাউনের কারনে বিশ্বভারতী পরিচালনাধীন পাঠভবন ও শিক্ষা সত্রের মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়ে ওঠেনি, তাই আগামী ১০ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই এর মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতী স্পষ্ট করে দিয়েছে বাইরে থেকে আসা প্রত্যেক পড়ুয়াকে বিশ্বভারতীর পিযারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রথমেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।.       

     যদিও বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রী ঐক্যমঞ্চের তরফ থেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য বলা হচ্ছে তাদের মতে, ১ জুলাই এর মধ্যে বিদেশি পড়ুয়াদের শান্তিনিকেতনে ফিরে আসা আদৌ কি সম্ভব ! এমনকি ভিন্ন রাজ্যে যে সমস্ত পড়ুয়ারা আছেন তারাও কি এই অল্প দিনের মধ্যে শান্তিনিকেতনে পৌছুতে পারবেন? 

 এখন এই সিদ্ধান্তের ফলে ছাত্র ছাত্রী দের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছে ঐক্য মঞ্চ। 
তাদের দাবি,  বেশিরভাগ ছাত্র বা ছাত্রীরা দূরে থাকে তাদের পক্ষে এই পরিস্থিতিতে বোলপুর  যাওয়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয় কারণ করোনা সংক্রমণ  নিয়মিত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে, যারা হস্টেল পায়নি। তাদের থাকা এবং খাওয়ার ভয়ানক সমস্যা হবে। আর এই মুহূর্তে বাইরের খাবার খাওয়া কতটা স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপযোগী হবে ? 
তারা প্রশ্ন তুলেছেন,   হঠাৎ করে ১৪ দিনের মধ্যে টার্মিনাল পরীক্ষার জন্য মানসিক ভাবে ও সম্পুর্ন পাঠক্রম অতিক্রম করে প্রস্তুত হওয়া সম্ভব কী?  এইয়পরিস্থিতিতে!  

বিশেষ করে, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের মানুষজন এই মুহূর্তে আমফান ঝড়ে সর্বস্ব ভাবে বিধ্বস্থ, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের ছাত্র ছাত্রীরা এই মুহূর্তে কি ভাবে পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি নেবে?
তাছাড়া, করোনা বা Covid-19 জীবাণুতে আক্রান্তদের অনেকের মধ্যেই সেরকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই অবস্থাই অধিক সংখ্যক ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত হলে, তাদের কোয়ারণটাইন বা আইসলেশনের জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কিরকম ব্যবস্থা নেবে সে সম্পর্কেও কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই ছাত্রছাত্রীদের। 

সংগঠনের প্রতিনিধি সোমনাথ সাউ বলেন, "আমরা কখনোই পরীক্ষা বিরোধী নই  কিন্তু এই রূপ পরীক্ষা দেওয়ার অর্থ নিজেদের স্বাস্থ্যকে অবজ্ঞা করা, উপরন্তু, যাতায়াতের ও যানবাহনের যথাযত ব্যবস্থা না থাকায়  ব্যাহত হবে শারীরিক দূরত্ব। তার ফল ভবিষ্যতে ভালো হবে বলে মনে হয় না।বিশ্বভারতীর বিষয়টি  পুনর্বিবেচনা করা উচিত। "
এব্যাপারে বিশ্ব ভারতী কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours