ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

যে টিলাটিকে  দেবীচৌধুরানীর  টিলা  বলা হয়।  সেটির  অবস্থান  রাধামাধব পুর  মৌজায়। পুর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে  দেবী চৌধুরানীর   সাথে  শিল্পশহর  দুর্গাপুরের  কোন  সম্পর্ক  নেই। ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়  ছিলেন  ডেপুটি জজ। তিনি  যেখানে  কর্মসূত্রে  বদলী  হয়েছেন  সেখান থেকেই  লেখার  রসদ  যোগাড়  করেছেন।  উত্তরবঙ্গে  তিনি  বহুদিন  ছিলেন। সেখানে  থাকাকালীন  দেবীচৌধুরানীর  উপর লেখার রসদ  পান। 
               বর্তমান  দুর্গাপর  যে, দেবীচৌধুরানী উপন্যাসের  পটভূমি  নয়  সে  বিষয়ে  আলোকপাত  করার চেষ্টা করছি। 
প্রথমতঃ  দুর্গাপুরে "দুর্গাপর "নামে  কোন  গ্রাম  বা মৌজার  অস্তিত্ব নেই।প্রফুল্লর(দেবীচৌধুরানীর প্রকৃত  নাম) পিত্রালয়
যে  দুর্গাপর  গ্রামে   সেটি  কোথায়  অবস্থিত? দ্বিতীয়তঃ  বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর উপন্যাসে উল্লেখ করেছেন। "প্রফুল্ল কে  সাথে  লইয়া ছয়  ক্রোশ  পথ  হাঁটিয়া  বরেন্দ্রভূমের ভূতনাথ পুর  গ্রামে  প্রফুল্লর  শ্বশুরালয়ে  পৌছাইলেন ।"  দুর্গাপর  রাঢ়ভুমের  অন্তর্গত।  বরেন্দ্রভূমি  উত্তরবঙ্গ  সহ  বাংলাদেশের  কিছু অংশ।  এখান  থেকে  ছয় ক্রোশ  নয়  একশ  ক্রোশের  বেশী। 
            তৃতীয়তঃ সেই  সময়ে  এখানে  যে  জমিদার  পরিবারগুলি  ছিল তাঁদের  মধ্যে  উল্লেখযোগ্য  গোপীনাথপুরের  'চট্টোপাধ্যায় 'উখরার 'হোন্ডা', কাজোড়ার 'হাজরা 'অন্ডালের 'চট্টোপাধ্যায় ' নাচনের 'মন্ডল ( ব্যানার্জি), প্রভৃতি। কিন্তু  কোন  জমিদার বাড়ির  বধূ  ঘর  থেকে বিতাড়িতা  হয়ে  ডাকাত রানী হয়েছিলেন  এমন  কোন তথ্য  পাওয়া যায় না। 
চতুর্থতঃ উত্তরবঙ্গে  বৈকুন্ঠপুরের  জঙ্গলে  আজ ও  পাকা  মন্দিরে  দেবীচৌধুরানীর  এবং  ভবানী  পাঠক  প্রতিষ্ঠিত  মা  কালীর  নিত্য  পূজা  হয়।  ভবানী পাঠকের  কর্মক্ষেত্র  যে  এই  এলাকা  তার  বহু  প্রমাণ  পাওয়া যায়। এখানকার  একটি  স্হানের নাম  ' সন্ন্যাসীর  কাটাহাট। একটি  উঁচু  ঢিবিকে  দেখিয়ে   এলাকার মানুষ  বলে " এখানে  ভবানী  পাঠকের  দলের  ধনসম্পত্তি পুতে  রাখা  আছে।           দেবীচৌধুরানী বা  ভবানী পাঠকের  কর্মভুমি  এই  দুর্গাপর  না  হয় তাহলে  সিটিসেন্টারের সন্নিকটে সুউচ্চ  টিলাটি  বা  সুড়ঙ্গের  রহস্য কি? (চলবে)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours