প্রিয়াঙ্কা সরকার, লেখিকা, বর্ধমান:
 
শকুনির কাছে চিরশত্রু কুরুবংশ। আর দামামা বাজার অনুগামী ফসল পাণ্ডু বংশ। ভগিনীসমা কুন্তী?  গান্ধারী?  এদের কথা, কি একবারো ভাববেন না। বৃক্ষ থেকে ফল কেড়ে নিয়েছেন বিশ্বাসের ভূমি, বৃক্ষ সুখ পাবে কি? এ যেন তেভাগা আন্দোলন; জোতদারের ভূমিতে বর্গাদারেরা, তারপর আধিয়ারার সুক্ষ্ম সুখ, এ যেন ভূমিহীন কান্না ভাগিচাষীর অভিসম্পাত। বিদুর তো একান্ত অনুগত পান্ডুর ; দুর্যোধনের কুটিল যুক্তিকে সমর্থন করেননি বিদুর৷ 

কুরুর ইতিহাসে লেখা আছে ক্ষমতার আস্ফালন,  জেদ, স্খলন, কৌমার্যের বিনিময়,"  ছিঃ" নামক শব্দের হুংকার ; তাই স্বার্থপরতার অনিচ্ছুক শাপকে হাতিয়ার করতে তো উপাদান লাগে, তাই এই বংশ সংঘাত৷ অদ্ভুত শিহরণে কৃষ্ণ ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রতিশোধের প্রয়োজনীয় প্রহরণ। ভবিষ্যৎ বলে, যজ্ঞসেনী নাকি  হবেন কুরুবংশের ধ্বংসের কারণ। 
বিবাহ হলো ভানুমতী ও দূর্যোধনে। এখানেও যেন পরিকল্পিত বাস্তিল দূর্গের জমাট বাঁধা শ্বাসের
আঘাত লক্ষ্য করা যায়। জমছে ক্রোধ, অধিকারের হাতে পেরেক পুঁতেও রক্তকে একা করা যাচ্ছে না, এবার মৌল সত্তার নিবিড় প্রত্যয় অনুগত করবে প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা।
 শিখন্ডিনীর জীবনের পরিণতির জন্য দায়ী ভীষ্ম। বৃহৎ সরবরে ধনুকই তো তাদের একান্ত উৎকন্ঠার সমাধান। শকুনির আয়ত চোখের তীক্ষ্ণদৃষ্টি, অধরের রহস্যময়তা চিনি নিয়েছিলো বঙ্কিমতা। পাঞ্চালী বুঝে ছিলেন যে, ভীষ্ম কেবল শ্রীখণ্ডীর নয় অপমানের পাত্র হাতে রয়ে গেছে বহু অসহায় ভূমি। তবে কি শকুনি ভেবেছিলেন " ইউটোপিয়া " গড়ে দেবেন!  পূর্ণাঙ্গতার কল্পচিত্র যে তিনি যাপন করেছেন। কিন্তু রূপান্তরের সমাজ রোপন করতে হয়,  আর সেই দাপুটে মেঝের উপাদান হলেন যাজ্ঞসেনী দ্রৌপদী। 
আসলে শকুনি সমান্তরাল পথে ধীর সিঞ্চনে ভ্রাতৃদ্বেষের বীজবপন দেখেছিলেন। ইতিহাস তো পরম্পরার কথা বলে;আর যোগসূত্র হলো উপাদান উৎপাদিকা শক্তির সঙ্গে সাবেকি উৎপাদনের সম্পর্ক,আবার তাতেই বিরোধ বাঁধে৷ কিন্তু হিতবাদী প্রত্যয় ভিন্ন সর্বজনের সুখ, নৈব নৈব চঃ। (ক্রমশঃ) 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours