মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, লেখিকা, খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর:
আমাদের দেশের মানুষ একটি হুজুগে জাতি, এটি তো সর্বজনবিদিত । তাঁকে যেটি না বলা হবে সেটাই করার দিকে তাঁর প্রবনতা বেশি। তাই এই লকডাউনের সময় তাদের বেশি করে খিদে তেষ্টা পায়। এমনকি যে হাড় কিপ্টে বাবুটি এক পোয়া চুনোমাছে এক সপ্তাহ চালান , তিনিও ভোর বেলা ইয়াব্বড় বাজারের থলে হাতে নাকে মুখে গামছা বেঁধে বূক ফুলিয়ে বাজার করতে ছোটেন । অঙ্কে সারাজীবন একশো পাওয়া বাবুটি এক মিটার দুরত্তের হিসেব গুলিয়ে ফেলে মিষ্টির দোকানে গা ঘেঁষে লাইনে দাঁড়ান । সারাজীবন বাঁশকাটি চালের ভাত খেয়েও সরকারী অনুদানের চাল পাওয়ার জন্যে রেশনের লাইনে এর ওর ঘাড়ের ওপর দিয়ে নিজের থলেটি এগিয়ে দেন। এইসব নানাবিধ সমাজ সেবামুলক কাজ করতে করতে আজকাল দেশবাসী বোর হয়ে যাচ্ছে। এদিকে লকডাউন ওঠারও কোন নাম নেই। সিরিয়ালের কূটকচালীও বন্ধ।তাঁর ওপর বাসন মেজে কাপড় কেচে , রান্না করে এমন ব্যতিব্যস্ত অবস্থা যে প্রানভরে পরনিন্দা পরচর্চাও করতে এনার্জি পাওয়া যাচ্ছে না।
এহেন অবস্থায় আপামর ভারতবাসীকে উদ্ধার করেছে সোস্যাল মিডিয়া। ফেসবুক ,ইন্সটা, টুইটার ইত্যাদি সোস্যাল অ্যাপের সাহায্যে পরস্পরের সান্নিধ্য অনুভব করার চেষ্টা করছে। একদিকে যেমন যেকোন বিষয়ে বাদ প্রতিবাদের ঝড় তুলছে নেটিজেনরা তেমনি আবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয় ভুলতে নানা রকম কাজের আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন যে, সোস্যাল মিডিয়াতো বহুবছর ধরেই মানুষকে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে আশ্রয় দিয়েছে । আজ নতুন করে বলার কি আছে?
এটা সত্যি যে সোস্যাল মিডিয়ার সাথে আমাদের যোগ অনেকদিন। কিন্তু তা ছিল কেবল কাজের পর একটু সময় কাটানোর মাধ্যম। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসী তাদের গৃহবন্দী একাকীত্বকে ভুলতে আরো বেশী করে ভার্চুয়াল পৃথিবীর আশ্রয় নিয়েছে। অসহ্য মানসিক চাপ কাটাতে কেউ কেউ নানারকম রান্না করে পোস্ট করছেন । কেউবা হস্তশিল্প, কবিতা , গল্পপাঠ আপলোড করে নিজের ভুলে যাওয়া ট্যালেন্ট কে নতুন করে সবার সামনে তুলে ধরতে পারছেন। ভার্চুয়ালী একে অন্যের কাছ থেকে বাহবা পেয়ে নিজের মন যেমন পরিতৃপ্ত হচ্ছে তেমনি এই একলা ঘরে বন্দী থাকার বিষণ্ণতা থেকে মন সাময়িক ভাবে মুক্তি পাচ্ছে।
এইভাবে দীর্ঘ প্রায় দেড় মাসের কোয়ারেন্টাইনের মধ্যেই নীরবে এসে গেল ২৫শে বৈশাখ।
আপামর বাঙালী এই বিশেষ দিনটির সারা বছর অপেক্ষা করে। পাড়ায় পাড়ায় নাচ, গান, নাটকের মহড়া চলে। এবছর অতিমারীর কারনে সেসব বন্ধ। প্রানের ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী পালনের ইচ্ছা ও উৎসাহ দুই আছে, কিন্তু উপায় নেই। এখানেও উদ্ধারকরতা সেই সোশ্যাল মিডিয়া । নান ফেসবুক গ্রূপ গুলিতে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে মহা উৎসাহে। ছোটরাও এতে সামিল হয়েছে। সুন্দর সেজে নাচ, গান ,আবৃত্তির ভিডিও দিয়ে যেমন কবিপ্রনাম শুরু হয়েছে, তেমনিও ২৫ শে বৈশাখের জন্য লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন অনেক চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া। এর ফলে বাড়ির পুচকে গুলোও একঘেয়ে মনখারাপের বেড়াজাল থেকে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছে। কবিগুরু নিজেই বলে গেছেন ,’ হারে রে রে রে , আমায় ছেড়ে দেরে দেরে। যেমন ছাড়া বনের পাখী মনের আনন্দেরে।‘ তাই ভাইরাস আর লকডাউনের সাধ্য কি আমাদের মনের আনন্দকে কেড়ে নেবে। আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছেন তো মনের মাঝে। আমরা গৃহবন্দি হয়েও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
তাই রবীন্দ্রজয়ন্তী নাইবা এবার মঞ্চে পালন হোল। বাড়ি থেকেও এই যে আমরা ভারচুয়াল ভাবে সবাই মিলে একসাথে বিশ্বকবিকে মনে ধারন করতে পারছি এই বা কম কি ! এইখানেই বোধহয় আমাদের জয়।
আমাদের দেশের মানুষ একটি হুজুগে জাতি, এটি তো সর্বজনবিদিত । তাঁকে যেটি না বলা হবে সেটাই করার দিকে তাঁর প্রবনতা বেশি। তাই এই লকডাউনের সময় তাদের বেশি করে খিদে তেষ্টা পায়। এমনকি যে হাড় কিপ্টে বাবুটি এক পোয়া চুনোমাছে এক সপ্তাহ চালান , তিনিও ভোর বেলা ইয়াব্বড় বাজারের থলে হাতে নাকে মুখে গামছা বেঁধে বূক ফুলিয়ে বাজার করতে ছোটেন । অঙ্কে সারাজীবন একশো পাওয়া বাবুটি এক মিটার দুরত্তের হিসেব গুলিয়ে ফেলে মিষ্টির দোকানে গা ঘেঁষে লাইনে দাঁড়ান । সারাজীবন বাঁশকাটি চালের ভাত খেয়েও সরকারী অনুদানের চাল পাওয়ার জন্যে রেশনের লাইনে এর ওর ঘাড়ের ওপর দিয়ে নিজের থলেটি এগিয়ে দেন। এইসব নানাবিধ সমাজ সেবামুলক কাজ করতে করতে আজকাল দেশবাসী বোর হয়ে যাচ্ছে। এদিকে লকডাউন ওঠারও কোন নাম নেই। সিরিয়ালের কূটকচালীও বন্ধ।তাঁর ওপর বাসন মেজে কাপড় কেচে , রান্না করে এমন ব্যতিব্যস্ত অবস্থা যে প্রানভরে পরনিন্দা পরচর্চাও করতে এনার্জি পাওয়া যাচ্ছে না।
এহেন অবস্থায় আপামর ভারতবাসীকে উদ্ধার করেছে সোস্যাল মিডিয়া। ফেসবুক ,ইন্সটা, টুইটার ইত্যাদি সোস্যাল অ্যাপের সাহায্যে পরস্পরের সান্নিধ্য অনুভব করার চেষ্টা করছে। একদিকে যেমন যেকোন বিষয়ে বাদ প্রতিবাদের ঝড় তুলছে নেটিজেনরা তেমনি আবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ভয় ভুলতে নানা রকম কাজের আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলবেন যে, সোস্যাল মিডিয়াতো বহুবছর ধরেই মানুষকে ভার্চুয়াল পৃথিবীতে আশ্রয় দিয়েছে । আজ নতুন করে বলার কি আছে?
এটা সত্যি যে সোস্যাল মিডিয়ার সাথে আমাদের যোগ অনেকদিন। কিন্তু তা ছিল কেবল কাজের পর একটু সময় কাটানোর মাধ্যম। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসী তাদের গৃহবন্দী একাকীত্বকে ভুলতে আরো বেশী করে ভার্চুয়াল পৃথিবীর আশ্রয় নিয়েছে। অসহ্য মানসিক চাপ কাটাতে কেউ কেউ নানারকম রান্না করে পোস্ট করছেন । কেউবা হস্তশিল্প, কবিতা , গল্পপাঠ আপলোড করে নিজের ভুলে যাওয়া ট্যালেন্ট কে নতুন করে সবার সামনে তুলে ধরতে পারছেন। ভার্চুয়ালী একে অন্যের কাছ থেকে বাহবা পেয়ে নিজের মন যেমন পরিতৃপ্ত হচ্ছে তেমনি এই একলা ঘরে বন্দী থাকার বিষণ্ণতা থেকে মন সাময়িক ভাবে মুক্তি পাচ্ছে।
এইভাবে দীর্ঘ প্রায় দেড় মাসের কোয়ারেন্টাইনের মধ্যেই নীরবে এসে গেল ২৫শে বৈশাখ।
আপামর বাঙালী এই বিশেষ দিনটির সারা বছর অপেক্ষা করে। পাড়ায় পাড়ায় নাচ, গান, নাটকের মহড়া চলে। এবছর অতিমারীর কারনে সেসব বন্ধ। প্রানের ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী পালনের ইচ্ছা ও উৎসাহ দুই আছে, কিন্তু উপায় নেই। এখানেও উদ্ধারকরতা সেই সোশ্যাল মিডিয়া । নান ফেসবুক গ্রূপ গুলিতে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে মহা উৎসাহে। ছোটরাও এতে সামিল হয়েছে। সুন্দর সেজে নাচ, গান ,আবৃত্তির ভিডিও দিয়ে যেমন কবিপ্রনাম শুরু হয়েছে, তেমনিও ২৫ শে বৈশাখের জন্য লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন অনেক চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া। এর ফলে বাড়ির পুচকে গুলোও একঘেয়ে মনখারাপের বেড়াজাল থেকে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছে। কবিগুরু নিজেই বলে গেছেন ,’ হারে রে রে রে , আমায় ছেড়ে দেরে দেরে। যেমন ছাড়া বনের পাখী মনের আনন্দেরে।‘ তাই ভাইরাস আর লকডাউনের সাধ্য কি আমাদের মনের আনন্দকে কেড়ে নেবে। আমাদের রবীন্দ্রনাথ আছেন তো মনের মাঝে। আমরা গৃহবন্দি হয়েও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যানে মুক্তির স্বাদ পাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
তাই রবীন্দ্রজয়ন্তী নাইবা এবার মঞ্চে পালন হোল। বাড়ি থেকেও এই যে আমরা ভারচুয়াল ভাবে সবাই মিলে একসাথে বিশ্বকবিকে মনে ধারন করতে পারছি এই বা কম কি ! এইখানেই বোধহয় আমাদের জয়।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours