অপর্ণা চট্টোপাধ্যায়, লেখিকা, দুর্গাপুর:

রাজধর্ম পালনে যদি ধর্মের ঘাটতি দেখা যায় তবে সেটা রাজারই দুর্ভাগ্য । আমরা পারিবারিক জীবনে অনেক দায়বদ্ধতায় আবদ্ধ যেটা কোন আইনগত বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু আমরা সবাই দায়বদ্ধ কারণ সেগুলো পালন না করলে আমাদের নিজেদের অস্তিত্বই বিলোপ হবে,শারীরিক ভাবে জীবিত থাকলেও সামাজিক মৃত্যু ঘটবেই।এই অসংগঠিত শ্রমিকরা খর রৌদ্রে পায়ে হেঁটে বাচ্চা পরিবার নিয়ে নিজের গ্রামের দিকে রওনা দিল সেটাকে শুধু সরকারি আদেশ অমান্যতা বলাটা কি অমানবিকতা নয়?
এই বিপুল অসংগঠিত শ্রমিকরা নগর সভ্যতার নাগরিক দের সম্পদ তৈরি করে। হঠাৎ করে ঘোষিত লকডাউন তাদের দিশাহারা করে দেয়। অনেকে হোলি উৎসব কাটিয়ে সমস্ত টাকা খরচ করে শহরে এসেছিল রোজগার করতে, কেউ নির্মাণ শিল্পে, কেউ ইঁট ভাটায়, হোটেলে ,রেস্টুরেন্টে নানা জায়গায় ,বিনা নোটিশের এই লকডাউন এই সহজ সরল মানুষ গুলিকে পথে বসিয়ে দিল। সরকার থেকে যে সাহায্য ঘোষনা করা হয়েছিল তা আদায় করার জন্য অনেক ডকুমেন্টারি এভিডেন্স এর দরকার ছিল, তাদের সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। তারা এই ব্যবস্থার ওপর কোন বিশ্বাস রাখতে না পেরে সব ভরসা চলে যায় শুধু ওপর ওয়ালাকে বিশ্বাস করে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিল যদি নিজের জন্মস্থান আশ্রয় দেয়। তারা কোনকিছু পরোয়া না করে যাত্রা শুরু করল উদ্দেশ্যহীন, ঠিক যেন দেশ ভাগের উদ্বাস্তুদের মতন। আচ্ছা পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেটা কেন সরকারের ঘরে মজুত ছিল না? এটাতো আইন সিদ্ধ যে আগত ভিন রাজ্যের শ্রমিকদের নাম ধাম ঠিকানা স্থানীয় প্রশাসন রেকর্ড করে রাখবে। যে শ্রমিকরা জাতীয় আয় সৃষ্টিতে অংশগ্রহণ করছে তাদের দুর্দিনে জাতি হাত গুটিয়ে বসে থাকবে ? এ কেমন ধর্ম?

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours