দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:

প্রথম বিশ্বের গণতন্ত্র আলাদা। শাসন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা আমাদের দেশ থেকে। প্রথমে নির্বাচনে কোনো ছাপ্পা ভোট বা গুন্ডা দিয়ে ভোট এদেশে হয় না। কারণ এমন ভাবে নির্ব্বাচন পদ্ধতি করা হয়েছে যে জালিয়াতির কোনো সুযোগ নেই। তারপর কঠোর শাস্তি আদালতের।নির্বাচনে দুমাস আগে থেকে আপনার বাড়িতে ব্যালট পেপার চলে আসে। আপনার নাম, ঠিকানা, আর কম্পিউটার ক্রমিক সংখ্যা দেওয়া। নির্বাচনের দিন ভোট দিতে যাবেন। একটা পুলিশ নেই, মাইক নেই, রাস্তায় কোনো দল নেই। কি করে ওই ব্যালট পেপারের নকল বা জালি করবেন? কোথায় পাবেন কম্পিউটারের দেওয়া ক্রমিক সংখ্যা? সেই ক্রমিক সংখ্যাই গ্রহণ যোগ্য হবে গণনার সময়। বানানো যদি কোনো সংখ্যা দেওয়া হয় মেশিন সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করে দেবে। এই বার নির্বাচিত মন্ত্রী বা কাউন্সিলরা বহু ডলার মাইনে পান। এখানে কোনো দেশপ্রেমের জায়গা নেই। মন্ত্রী হওয়াটা একটা চাকরি। সে প্রচুর কাজ করে থাকে। কিন্তু সরকার তাকে কোনো সিকুরিটি বা গাড়ি দেয়না। বাড়ি দেয়না, ড্রাইভার দেয়না। তাকে নিজের গাড়ি নিজেকে চালিয়ে যেতে আসতে হয়। গ্যাসের দাম পায়। শুধু মাত্র আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী গাড়ি, সিকিউরিটি পান। প্রধানমন্ত্রী বাড়ি পান আর প্রচুর সিকুরিটি পান।আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সাথে বাজার করে আমার পাড়ায়। একটি পুলিশ তার আসে পাশে পাবেন না।কারণ পুলিশ এদেশে মন্ত্রীদের পাহারা দেয় না বা স্যালুট করে না। তাছাড়া কোনো নেতা আমলা পুলিশের ধারে কাছে যায় না। কোনো নেতার মন্ত্রীর ক্ষমতা নেই কোনো পুলিশকে ফোন করে কোনো ব্যাপারে। একবার একজন ক্যাডেট যে তখন ট্রেনিং এ ছিল সে পুলিশ কমিশনারের গাড়ি থামিয়ে টিকিট দিয়েছিলো। সেই খবর জানা জানি হতেই কমিশনের বলেছিলো যে তাকে টিকিট না দিলে ওই ক্যাডেটকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতো। এখানে পুলিশ কমিশনার মন্ত্রীর বাড়ির কালী পূজোতে টুনি বাল্ব লাগায়। কোথায় বাস করেন আপনারা? কোন গণতন্ত্রে? না পরিকল্পিত চোরতন্ত্রে?
এখানে মানুষ কাজ করে সপ্তাহে চল্লিশ ঘন্ট। পাঁচদিন কাজ। চল্লিশ ঘন্টার ওপরে কাজ করলেই তাকে ওভার টাইম দিতে হবে। কাউকে বেশি খাটানো চলবেনা। বস ভালোবেসে আপনাকে দিয়ে দিনে আট ঘন্টার বেশি খাটাতে পারবে না বা কর্মচারীও থাকবে না পাঁচটার পর। চল্লিশ ঘন্টার পর ওভার টাইম।মনে করুন একজন কর্মচারীর মাইনে ঘন্টায় কুড়ি ডলার; সে চল্লিশ  ঘন্টার ওপরে একচল্লিশ ঘন্টা কাজ করলেই সেটা চল্লিশ ডলার হয়ে যাবে। সব পাওনা চেকে, ক্যাশের কোনো ব্যাপার নেই। আমাদের দেশের মাফিয়া সরকার, মিডিয়া, আদালত সব সেটিং করে রেখেছে। কি করবেন সাতশো কোটির ফুল ছড়ালে ভোটার জন্য বা ক্লাবকে অনুদান দিলে? আপনি খেতে পাচ্ছেন না সেটা আপনার সমস্যা। বা দলে ভিড়ে যান।ঠিক কাট মানির ভাগ পেয়ে যাবেন। আমরা বড়োলোক নই কিন্তু শান্তিতে সন্মান নিয়ে বাস করি। কানাডাতে চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা ডলারে। সব ফ্রি। সর্দ্দি হলেও ফ্রি আবার বাইপাস হলেও ফ্রি। সিনিয়র সিটিজেনরা দু ডলারে তাদের সব ওষুধ পান। হাজার টাকার ওষুধ দু ডলার। দশ হাজারো হতে পারে। আর আমাদের রাজ্যে মানুষ সিঁটিয়ে আছে প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে? নব্বই ভাগ জালিয়াত হাসপাতাল আর তার ডাক্তাররা।আপনার কিছুই করবার নেই কারণ সরকার কিছু করে না। আমরা এদেশে এদের সংস্কৃতি মেনে নিয়েছি। ছেলে মেয়েরা ষোলোর পর থেকেই আলাদা। বা তাদের মতো তারা চলে। বাড়ি ছেড়ে আলাদা থাকা পছন্দ করে।প্রাইভেসি সাংঘাতিক। এমন কি স্কুলের অফিস আপনাকে জানাবে না যে আপনার ছেলে কি রেজাল্ট করেছে যদি সে ষোলো বছরের ওপর হয়। আমরা এখন মেনে নিয়েছি সেই প্রাইভেসি। আমরাও চাইনা আমার ছেলে বৌ আমাদের সাথে থাকে। অনেক বেশি স্বাধীনতা আর শান্তি। ভেবে দেখবেন। মোদী ফুল ছড়িয়েছে আনন্দ করুন। (ক্রমশঃ)

(ছবি সৌজন্যে:প্রতিবেদক। ছবিতে গুলজারের সঙ্গে প্রতিবেদক।)

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours