সজল বোস, সমাজকর্মী, দুর্গাপুর:

মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের মধ্যগগনে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থার ভিত। আর সাড়া বিশ্ব জুড়ে রয়েছে একটা অদৃশ্য তরঙ্গের বা ওয়েভের বেষ্টনীতে। এর সাহায্যেই আমাদের জীবন একটা নির্দিষ্টভাবে এগিয়ে চলেছে, তাকে বাদ দিয়ে প্রায় সব অচল।

আচ্ছা ভাবুনতো হটাৎ আপনাদের সকলের হাতের মুঠো ফোনটা অকেজো বা বন্ধ হয়েগেছে? টেলিভিশন সেট ব্লু স্ক্রিন হয়ে থমকে গেছে, কম্পিউটার আছে ইন্টরনেট কানেকশন বন্ধ, বেতার যন্ত্র গুলো একলহমায় আর শব্দ করছে না। বিমানে চাপলেন কিন্তু নির্দিষ্টভাবে কোথাও যাবার জন্য রুট ম্যাপ নেই, জিপিএস বন্ধ। আর পরিচিত বা অভ্যস্ত জীবন যেন স্তব্ধ। ইন্টরনেট, গুগুল, হোয়াটসএপ, টুইটার, ফেসবুক, জিমেইল ইত্যাদি সব নাম গুলো হারিয়ে গেলো জীবন থেকে। আপনি আবার ফিরে গেলেন নতুন অভ্যাসের জগতে! কি করবেন? সভ্যতার ক্রমবিকাশের পথে সভ্যতার ক্রমহ্রাসমান পরিমিত জীবনটা কেমন হবে একবার ভাবুন! আজকের লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত স্যাটেলাইট বিহীন মানুষের বিচরণ কেমন হবে? তার থেকেও বড় মানুষের বেঁচে থাকার প্রশ্ন। 
অবাক হয়ে যাচ্ছেন , এটা কি করে সম্ভব? 
তাহলে আজকের ফিচার লেখার বিষয়টা সবিস্তারে জেনে নিই।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার এমনই এক অভাবনীয় দাবী ঘিরে এমনই প্রশ্ন সামনে আসছে। তারা তাদের গবেষণায় উল্লেখ করেছেন। 
ভূপৃষ্ঠের ৩০০০ কিলোমিটার নিচে যে মারাত্মক উত্তপ্ত, গলিত লৌহক্ষেত্র আছে তার নড়াচড়ায় সৃষ্টি হয় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। আর আমাদের মহাকাশে পৃথিবীর অন্যতম রক্ষাকবচ, এই চৌম্বকক্ষেত্রই সূর্যের ক্ষতিকর বিকিরণ আর তা থেকে প্রাণীজগৎকে বাঁচায় বা রক্ষা করে। চৌম্বকক্ষেত্র যত শক্তিশালী তত বেশি করে তা রুখে দেয় ক্ষতিকর বিকিরণকে।
 
কিন্তু উদ্বেগের আর অবাকের বিষয় হলো, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মাঝামাঝি জায়গায় চৌম্বকক্ষেত্রের একটা বৃহৎ অংশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এর নাম সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি। গত দশ বছরে আরও তীব্র ভাবে দুর্বল হয়েছে। 
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা মনে করছে, চৌম্বকক্ষেত্র দুর্বল হওয়ার অন্যতম কারণ সম্ভবত পৃথিবীর মেরু পরিবর্তন। উত্তর ও দক্ষিণ মেরু পাল্টে যাচ্ছে, আগেও এমন ঘটেছে, মোটামুটি প্রতি আড়াই লাখ বছরে এমনটা ঘটে থাকে। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর ফলে ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মি থেকে চৌম্বকক্ষেত্র যেভাবে পৃথিবীকে রক্ষা করছে তাতে পরিবর্তন ঘটবে, পরিবর্তন ঘটবে মহাকাশের বায়ুমন্ডলে। যার ফলে উপগ্রহগুলো অকেজো হয়ে যেতে পারে, আর বিচ্ছিন্ন হতে পারে গোটা বিশ্বের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে টেলিফোন নেটওয়ার্ক, মোবাইলফোনও, ইন্টরনেট  এমনকি ওই এলাকা দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানগুলো আর নিরাপদ থাকবে না বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। 

তবে ভরসা একটাই, দুই মেরুর স্থান পরিবর্তন একদিনে ঘটে না। অর্থাৎ আমাদের হাতে এখনও অনেকটা সময়  আছে। আর এই সময় কে কাজে লাগিয়ে তার থেকে নতুন প্রজুক্তির ব্যবহার না ইনভেনশন না হলে। আমাদের নগর জীবন থেকে আবার বন্য জীবনের সেই প্রচীন পদ্ধতির উপর নতুন জীবন ধরনের কৌশল গুলো রপ্ত করতে হবে। আবার হয়তো পিছনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যদি এমন হয় তাহলে আপনার ভাবনা গুলো কে উস্কে দিলাম নিজের মতামতের জন্য। চলি পরে অন্য বিষয়ে আবার হাজির হবো। 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours