দীপ্তেন্দু চক্রবর্তী, প্রবাসী লেখক, টরোন্টো, কানাডা:

এখন স্কুল কলেজ বন্ধ লক ডাউনের জন্য। তবে এখনকার ছাত্র ছাত্রীরা খুব সচেতন তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে। দেশের মতো সব বাবা মায়েরাই চান ছেলে মেয়ে ডাক্তার উকিল হোক। কিন্তু ওরাই ঠিক করে কোন প্রফেশনে যাবে। এখানে ফাস্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন নেই। ফাস্ট বয় নেই। কোনো কেউ নব্বই নম্বর পেলে সে ফাস্ট বয় আর যে আশি পেয়েছে তার বুদ্ধি কম ভাবার কারণ নেই।কাজেই ওসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না। তবে নম্বরের ওপর ইউনিভার্সিটি এডমিশন দিয়ে থাকে। নব্বই পাওয়া ছেলে মেয়েরা ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পায়। এদেশে প্রাইভেট কলেজের বেশি টাকা দিয়ে পড়ানোর  জালিয়াতি নেই।  প্রাইভেট কলেজ বলে কিছু নেই।  পাশ ফেল বলে কিছু নেই। পলিটেকনিক আছে সরকারি অনুমোদিত কিন্তু ফী বেশি নেয়  না। কানাডার উৎপাদন হচ্ছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার আর ব্যাপক ভাবে গম, ডাল, ভুট্টা উৎপাদন। দেশে যত মুসুরি উরুদ ডাল খান সব প্রায় কানাডার। আর আছে মাছ। কানাডিয়ান গলদা কাঁকড়া বিখ্যাত সারা বিশ্বে। এদের গলদা আমাদের দেশের মত না। খোলাটা খুব শক্ত পাথরের মতো। মাথার ঘিলু সবুজ, কোনো টেস্ট নেই। কিন্তু ওজন হয় ৫০০ গ্রাম থেকে ৭/৮ কেজি। একটা।কাঁকড়াও নানা রকমের। আর আছে কড, স্যামন, পার্চ, পিকারেল, আর আমাদের দেশের রুই এরা বলে কার্প। খুব বড় হয় কিন্তু দেশের মত স্বাদ না।ইলিশ পাওয়া যায় খুব বড় সাইজের ; নাম স্যাড। চিল্কার ইলিশ।আমরা কিনি না। ফ্রাই খাওয়ার মতো মাছ হচ্ছে এদেশে হ্যালিবাট , দারুন মাছ, আমাদের ভেটকির মতো। আরো আছে নানা রকমের সামুদ্রিক মাছ। আপনারাতো খান না।আমরা শংকর মাছ খাই। পাখনাটা একেবারে চিতলের পেটির মতো খেতে। আলাস্কাতে ধরা হয় টুনা মাছ। ওজন এক হাজার কেজি মতো। টুনা ধরা একটা দেখার মতো ব্যাপার। বিরাট হুকে ছিপ ফেলে। জাহাজে করে মাঝ সমুদ্রে।। ব্লু ফিন টুনা এক অসম্ভব দামি মাছ। সেই টুনাকে আলতো করে তুলোর মতো করে ধরা হয় যাতে কোনো রকমের দাগ তার শরীরে না পরে। তারপর সঙ্গে সঙ্গে বরফে দিয়ে একেবারে প্লেনে পাঠিয়ে দেওয়া হয় টোকিওতে। তিন মাইল লম্বা সেই বিখ্যাত মাছের বাজার। দেখেছি হাজার রকমের মাছ। দেখেছি ময়ুরের মতো রং গলদার। সারি সারি টুনার গায়ে নাম্বার লাগানো থাকে। সারা বিশ্ব থেকে টুনা এসেছে। টুনা এক্সপার্টরা এসে পরীক্ষা করে কেনে। যে টুনা কানাডায় পঞ্চাশ ডলারের কেজিতে বিক্রি করেছিল মেছুনীরা সেটা এখন টোকিওর বাজারে হাজার ডলার কেজি। লাল মাংস।সুসির জন্য বিখ্যাত। আমার খুব লইট্টা খাই। দারুন খেতে যদি ঠিক মতো ফ্রাই বা রান্না করতে পারেন। একশো টাকা কেজি দেশে। আপনারা খাবেন না। 
যা বলছিলাম স্কুল উনিভার্সিটির কথা। এখানে কোনো ইউনিয়ন নেই কোনো রাজনীতির দলের। ছাত্র কাউন্সিল আছে তারা নিজেদের নানা উন্নতির জন্য ইউনিভার্সিটির সাথে কাজ করে থাকে। এমন কি পাবে গিয়ে বিয়ার হাতে শিক্ষকদের সাথে আলাপ আলোচনা করে।ইউনিভারসিটির ক্যামপাসে নানা ঘটনা ঘটে থাকে। ছাত্র ছাত্রীদের বিছানায় যাওয়াটা এদেশে কোনো ব্যাপার না। কোনো ধর্ষণের ব্যাপার ঘটলে কোনো ছাত্র এর মধ্য নাক গলায় না বা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। পুলিশ এসে তাদের কাজ করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ ঢুকতে পারবে নার বজ্জাতি শুধু আমাদের দেশেই হয়। এখানে বহু মন্দির, গুরুদুয়ারা বাবা মসজিদ আছে। কেউ কোনো আওয়াজ করে ঢাক বাজাতে পারবে না। আজান দিয়ে বিরক্ত করলেই পুলিশ পিটিয়ে ব্যাঙ করে দেবে। ধর্ম করো কিন্তু নাগরিকের বিরক্তি না ঘটিয়ে। রাস্তায় নামাজ পড়া বা কুরবানী এদেশে চলবে না। এদেশে থাকতে হলে এদেশের মতো থাকতে হবে, তোমাকে সব অধিকার দেওয়া হবে কিন্তু ধর্ম আচার রীতি নীতি ঘরে বসে করো। নইলে ঘাড় ধরে তোমার দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কাজেই এদেশ পা দিয়েই সব কানাডার অনুগত হয়ে যায়। 

(ছবি সৌজন্যেঃ প্রতিবেদক। ফুচকা খাওয়ার আড্ডায় নীলরোহিত এর সঙ্গে প্রতিবেদক) 

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours