জীবন রায়, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ, রাজ্যসভা, দুর্গাপুর:

সুপার পাওয়ার, ভারত?হবে RSS /মরবে মেহনতি - টেপা-টিপির দুদিকেই। 
অংশ নয়।
একটা পুড়িয়া চালু হয়েছে। করোনা উত্তরকালে নাকি ভারত সুপার পাওয়ার এর মর্য্যাদা পাবে। একে যখন মানতে হয়, তবে অন্য কথাটাকেও মানতে হবে। কোন জাতীকে আত্মমর্য্যাদাহীনতা, অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতাকে ডুবিয়ে দিয়ে একমাত্র বিশ্বপুজির কেন্দ্রিকতায়, জনপ্রিয়তার দিক থেকে সব থেকে ঝুলন্ত ব্যক্তির দাড়ি ধরে ঝুলে থেকেই, ১৩০ কোটির জাতিটি রাতারাতি সুপার পাওয়ার হয়ে যাওয়ার যোগ্যতা
অর্জন করতে সক্ষম । একটা পোর্টাল উল্লেখে করেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি এই জনপ্রিয়তা হ্রাসের কারনেই নাকি আমাদের প্রধান মন্ত্রীর গলায় ঝুলে পরেছেন। আমেরিকার ভোট যুদ্ধে, আমেরিকায় গিয়ে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই ব্যক্তির সাথে
গলা মিলানোর গোপন কারন নাকি এখানেই।
-- এদিকে, যে সব খবর ব্যক্তিগত পর্য্যায়ে আমেরিকা থেকে পৌছুচ্ছে, তাতে বলা হচ্ছে করোনায় আমেরিকাবাসীদের বাঁচাতে না পারায়, প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা নাকি
এখন কাঁদাজলে। অধিকাংশ আমেরিকাবাসি নাকি মেনেছেন, চিনে করোনা ধাওয়া
করার অনেক পূর্বেই, দেশের শরীরবিদ্যা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিকরা এমন একটি রোগের
আবির্ভাব সম্পর্কে খবর, প্রেসিডেন্টের কানে তুলে দিয়েছিলেন।
যাইহোক, এটা নিশ্চিত এমন দুই ব্যক্তির গলাগলি, দাড়ি ঝুলাঝুলিতে, উভয় দিক
লাভবান হতে পারে, রাষ্ট্র হিসেবে দুই জাতীরই ভয়ংক্র পরিনাম যেঁ নেমে আসবে
সে সম্পর্কে সমাজ বিজ্ঞানী মাত্রই উদ্বেগ প্রবেশ করবেন।
অবশ্য ইতিমধ্যে যে সব লক্ষন ফুটে বেড়ুচ্ছে, তাতে নিশ্চিত এই সহযোগীতা নিশ্চিতভাবে, পুঠিমাছের পেট টেপার মতো, বিশ্ব মেহনতীর সর্বনাসের ভেতর
দিয়েই যে এই সহযোগিতা এগিয়ে চলবে, সেটা নিশ্চিত করে দিয়েছে। ইতিপূর্বেই উল্লেখ করেছি, জাতীপুঞ্জ মহাসচিবের বর্ণীত প্রযুক্তি এবং সম্পর্কের দ্বন্দ্ব, আমেরিকাকে হয়,
গ্লোবালাইজেসন জনীত কাঠামিকরনকে ভেংগে দিতে হবে, অন্যথায় তাকে চলমান প্রযুক্তির ধারা থেকে উঠে এসে পুরোপুরি, রোবোটাইজেসনের দিকেই যেতে হবে। রোবটাইজেসনে যদি যেতে হয়, আমেরিকার প্রধান সমস্যা তিনটিঃ প্রথমতঃ সারা বিশ্ব থেকে এই অতি-পুজিকেন্দ্রিক দেশটিতে, গ্লোবালাইজেসন যে জনশ্রোত ডেকে এনেছে এবং অন্য যে শ্রোত বাড়ীতে থেকেই, রবোটাইজেসন পুর্ব প্রযুক্তির সাথে যুক্ত ছিলো
তাদে মেহনত চ্যুত করা এবং আমেরিকা থেকে ভাগানো। বিশ্ব একেই আমেরিকার ইমিগ্রেশন সমস্যা বলে জানে।এখানে বৌদ্ধিক দিক দিয়ে মূলতঃ এসিয়া এবং আফ্রিকার  সর্বোচ্চ সম্ভাবনা সমুহকে উঠিয়ে এনে, নিজ দেশে  প্রযুক্তি কেরানী বানিয়েছে।তাদেরকে প্রযুক্তির সাথে একাত্ম করেছে । বাইরের
    মানবিক কিংবা দেশপ্রেমিক অস্তিত্ব কতটুকু টিকে আছে, উনারাই বলতে
    পারবেন। তবে অনাবাসিক চৈনিকরা অন্ততঃ চিনের পূনঃর্গঠন এবং বর্তমানের
    করোনা যুদ্ধে যেভাবে নিজের মাতৃভূমীকে রক্ষা করেছে, তাতে এ সম্পর্কে
    বিশ্বাস রাখার কারন রয়েছে, এদের মধ্যে এখনো মহামানবিক সত্বা বিদ্যমান
    রয়েছে । কথাটা তুলতে হচ্ছে একটা কারনেই।
করোনার সুযোগ নিয়ে,
অনাবাসিক ভারতীয়দের যদি তাড়িয়েই দেওয়া হয়, তবে বিশ্বের সব থেকে
বিত্তশালী দেশের প্রেসিডেন্ট এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশের প্রধানমন্ত্রী মধ্যকার
এই ‘গলাগলি’ ‘দাড়ি ঝুলাঝুলির’ শেষ পরিনামটি কোথায় দাঁড়াতে পারে,
সেটাও শুধু ভারতীয় নয়, তৃতীয় বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতেই বিবেচনা করতে হবে। যদি ইতিমধ্যেই এনারা প্রযুক্তি-করনিক সম্পর্কের সর্বস্বতায় ডুবে থাকেন, তবে
ইতিমধ্যেই ভারতকে যখন
--- মহামানবিক দিক থেকে অনেকটাই ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পরিনাম
উপমহাদেশের আর্থ-সামাজিক সম্পর্ককে যে বিড়ম্বনায় টেনে এনেছে, সেটা
এই উপমহাদেশকেই নয়, সারা বিশ্ব রাজনীতির সন্তুলনকে যখন বিড়ম্বিত করবে, তখন অনাবাসিক ভারতীয়দের নিশ্চিতভাবে ইতিবাচক ভূমিকা থাকতে হবেঃ ঠিক যেমন একদিন  চিনের অনাবেসিকরা নিয়েছিলেন।
এভাবেই, ভারত যেদিন থেকে বিশ্বায়ন নামক, আমেরিকার জালটায় ঢুকে
গেলো, শিল্পের দিক থেকে গন উৎপাদনের সব দিকের উৎপাদনের সবরকম
গবেষনা বন্ধ করে দেওয়ার পর, বর্তমান সরকার সেই সম্পর্কটাকেই,  সামরিক, পররাষ্ট্রগত  আত্মসমর্পনের পথে নিয়ে গেছে। কেন? এসব হচ্ছ,
দেশের বহুজনীন মানবিকতাকে নষ্ট করায় বেদেশী সাহায্য পাওয়ার কারনেই।
একেই কারনে, করোনার ছুতো কে সামনে রেখে, আমেরিকার চাপের মুখে,
চিনের সাথে, প্রযুক্তি এবং মেসিন নিয়ে আসার বিকল্প পথ হিসেবে চিনা রুটকে
বন্ধ করে দেওয়ার পরিনাম কি হতে পারে সে সব কিছুই বিবেচনায় রাখতে হবে।
এমনটি বলা হচ্চে না, যেন বর্তমান সরকালের হাতেই সর্বনাসের সব পথ খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা উত্তরকাল, আমাদের কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে,
সেটা বুঝতে গিয়ে, কিছু রেট্রোস্পেকশান এবং কিভাবে পেছন দিকে হাটার নীতিগুলি একসাথে জট পাকিয়েছে এবং পূর্ণ আত্মসমর্পনের পথে ঠেলছে, তার
হিশেব নিকেশের প্রয়োজন হবে।
যদি রেট্রোস্পেকশানে যাওয়া হয় দেখা যাবে, বিশ্বের সমাজতান্ত্রিজ অভিমুখগুলি
এবং সমাজতন্ত্রের সাথে নামমাত্র যোগাযোগ রয়েছে, তেমন দেশগুলির সাথে  যোগাযোগ ছিন্ন করনের লাইন ধরেই অর্থনৈ্তিক, ভাবাত্মক এবং রাজনৈ্তিক আত্মসমর্পন চলছে অতি সন্ত্রর্পনে। এই পেছনে হাটা শুরু হয়েছিল শ্রীমতি গান্ধীর
দ্বিতীয় পর্য্যায়ের শাসন কালেই। কিন্তু ভাবাত্মকভাবে সাম্য এবং তার এসিয়া প্রতিনিধী হিসেবে চিন থেকে তফাৎ যাওয়ার লাইন নেওয়া হয়েছে, নেহেরুর সময় থেকেই এবং চিন-ভারত যুদ্ধের অনেক পূর্ব থেকেই।
কংগ্রেস শাসনের পুরো কালটাই, সরকারীপ্রান্তে সোভিয়েত নির্ভরতা, দলহিসেবে
কংগ্রেস প্রান্তে সাম্য বিরোধীতা, মানুষের মহামানবিক চালচিত্রটাই নেহেরু পর থেকে ক্রমে তরল হয়েছে। এখন তো সাথ বছর ধরেই জাতী বিভাজন এবং
ঘৃ্নাই মানবিকবোধের উপরে রাহুগ্রাসের কারন হয়েছে। এখনে, এই বিপুল ইমিগ্রেটেড মানুষ ফিরে এসে কি করতে পারবেন, সেটাও নেতীবাচকতাকে কাটিয়ে কতটুকু,  ভারতকে ইতিবাচকতার পথে টানবে, অন্য বিষয়গুলির সাথে
এই বিষয়টিকে বিবেচনায় থাকতে হবেই।
চিনের কাছ থেকে মেসিন ইন্ডাষ্ট্রী নির্মানের প্রশ্নে দেশীয় সহোযোগীতাকে বন্ধ করার নীতি যদি ভারতের স্বয়ংসম্পূর্নতাকে এগিয়ে দেয়, আমেরিকা যদি ভারতকে বিশ্বায়ন
পূর্বকালের, মেসিন নির্মান অধিকারকে ফিরিয়ে দেয়, সেই বিবেচনায় প্রয়োজণীয়
প্রযুক্তি চুক্তি করতে রাজি থাকে এবং চিনের সাথে প্রযুক্তি সমর্পনের যে চুক্তি রয়েছে,
--- সেই অধিকার দেয়, তবে নিশ্চিতভাবে এই ব্লক কে স্বাগত জানাতে হবে। কিন্তু,
এর বিপরীতে, চিনের সাথে শিল্প সম্পর্ককে ভেঙ্গে দিয়ে, একপ্রান্তে ভারতকে আমেরিকার রোবট সাম্রাজ্যের আওতায় নিয়ে আসা এবং অন্যপ্রান্তে আমেরিকা ও ন্যাটো দেশগুলির বাইরে, একমাত্র চিনের প্রযুক্তি ধ্বংসই যদি আমেরিকা-ভারতের সহযোগীতার লক্ষ হয়, তবে ভারতকে,
---  ‘সনাতনি ব্রাহ্মন নিয়ন্ত্রিত  ‘দাস সাম্রাজ্য’ বানিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। 
সে কারনেই করোনাত্তোর কালে সুযোগে
---  এদেশের স্বয়ংসম্পূর্নতাকে অতলে ঠেলতে গিয়ে, দেশের স্বয়ংসম্পূর্ণতাকে চিরতরে বিনষ্ট করবে কি না, দেশের শ্রম বাজারকে, কার্য্যতঃ অর্ধ ‘অদক্ষ’ এবং ‘দাস শ্রমিকের’ যোগানদার হিসেবে বদলে দেবে কি না,
সে বিষয়গুলির উপর, শঙ্খচীলের নজর রাখা প্রয়োজন হবে। ভারতীয় উপমহাদেশ এবং অনাবাসিক ভারতীয়রা এবং সে সব ভারতীয়রা, যারা নিত্যরোজ ভারতে থেকে
আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলিতে শ্রমের যোগান দিয়ে থাকেন, প্রত্যেককেই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা প্রয়োজন হবেই। (ক্রমশঃ)
                      
Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: