দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

লকডাউনের জেরে মাথায় হাত রেশমগুটি শিল্পীদের। আন্তঃজেলা সীমান্ত সীল থাকায় আসছে না খদ্দের। দু-তিনদিনের মধ্যে গুটি বিক্রি না হলে সমস্ত পরিশ্রম জলে যাবে। আর্থিক দিক থেকেও ক্ষতির সম্মুখীন হবেন রেশম গুটি শিল্পীরা।

বীরভূমের নলহাটি ২ ব্লকের দক্ষিণপুর ভদ্রপুর গ্রাম। ওই গ্রামের ৬০ টি পরিবার রেশমগুটি তৈরি করে সংসার চালান। পরিবারের মহিলা সদস্যরাও গুটি তৈরিতে হাত লাগান। প্রথমে সেরিকালচার অফিস থেকে ডিম কিনে পলু পোকা চাষ করা হয়। এরপর ডালাতে সেই পলু পোকা এবং তুঁতপাতা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তুঁতপাতা খেয়ে পলু পোকা থেকে লালারস থেকে গুটি তৈরি হয়। সেই গুটি তুলে তালিয়াতে রাখা হয়। এই প্রক্রিয়া করতে গ্রীষ্মকালে সময় লাগে ২৫ দিন। শীতকালে এক মাসের কিছু বেশি সময় লাগে।
বর্তমানে সেই গুটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ফলে দু-তিনদিনের মধ্যে বিক্রি করতে না পারলে গুটি কেটে বেরিয়ে পড়বে পোকা। ফলে নষ্ট হবে রেশম গুটি। মূলত মালদা, মুর্শিদাবাদ থেকে কিছু মানুষ এই গুটি কিনে নিয়ে গিয়ে তা গরম জলে ডুবিয়ে রেশম সুতো তৈরি করে। কিন্তু লকডাউনের কারনে গুটি কিনতে কেউ না আসায় মাথায় হাত গুটি কৃদের। তাদের দাবি দু-একদিনের মধ্যে বিক্রি না হলে সমস্ত গুটি নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষক রামকৃষ্ণ মণ্ডল, রূপচাঁদ মণ্ডলরা বলেন, “মোটা টাকা খরচ করে ডিম কিনে পলু পোকা তৈরি করতে হয়। এরপর চাষ করা তুঁতপাতা তুলে এনে পোকাকে খাওয়াতে হয়। পরিবারের সব সদস্য এই কাজে হাত লাগান। সব সময় পরিচর্চা করতে হয়। যথেষ্ট পরিশ্রম করে গুটি তরি করা হয়। এখন যদি এই গুটি বিক্রি করতে না পারি তাহলে ধনেপ্রাণে মারা যাব। সরকারের কাছে আবেদন আমাদের বিষয়টি ভাবুন”।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: