সৈকত কর্মকার, ফিচার রাইটার, বাংলাদেশ:

করোনার সামনে মাথানত পড়েছে পুরো বিশ্ব।করোনা ভাইরাস এর কারণে পুরো মানব জাতি আজ মৃত্যু পথে পথিত।করোনাভাইরাস এ প্রায় সারা বিশ্বের ২১০টি দেশে মৃত্যুসংখ্যা দু'লাখ ছাড়িয়েছে এতে আক্রান্ত হচ্ছে বহু মানুষ এমনকি সেবা দিতে গিয়েও আক্রান্ত হচ্ছে ডাক্তার ও নার্স।তবুও ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের বরগুনা জেলার জেনারেল হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট সুভাষ দত্ত অতি প্রিয় জন হয়ে উঠেছে করোনা রোগীদের কাছে।প্রতিটা মানুষ সুভাষ দত্তের উপর একটি বিশ্বাস রেখে সেবা নিচ্ছে যা সত্যি অতুলনীয়।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সুভাষ দত্তকে চেনেন না এমন মানুষ বরগুনা জেলাতে নেই বললেই চলে। একটি সৎ ও বিনয়ী চিত্তের মানুষ হল সুভাষ দত্ত। সেবা,ধর্ম ও কর্মে সদা পটু সুভাষ দত্ত। যিনি এখন একটি ভালো মানুষের উদাহরণের তালিকাতে। এই মানুষটি দীর্ঘ দিন ধরে বরগুনার ও বরগুনার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। যা সত্যিই অতুলনীয়।

পৃথিবীব্যাপী এই মহামারী করোনা ভাইরাসের সময়ে বরগুনা জেলার অধিকাংশ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে থাকেন  সুভাষ দত্ত সে এই কাজটি কর্তব্য এর কারণে নয় কাজটি সে করে স্বেচ্ছায় এবং নিজে মানুষের সেবার জন্য নিবেদিত প্রাণ তাই।এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেছেন সুভাষ দত্ত। প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ জনের করোনা ভাইরাস এর নমুনা সংগ্রহ করতে হয় তাকে।
সুভাষ দত্ত বলেন যে,এই মারাত্মক ঝুঁকির কাজটি করছি সত্যিকারের ধর্ম মানবতার জন্য- সৎ এবং কঠিন কর্ম করে পাপমুক্ত হয়ে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার জন্য।
সম্প্রতি যেসব রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের অনেকেই করোনা পজিটিভ এসেছে কারণ করোনা রোগীর নমুনা দেখতে দেখতে  এখন একটি ধারণা চলে এসেছে কার করোনা আছে বা নেই। তিনি আরো বলেন, করোনা হলেই মৃত্যু হবে এই ধারণা ঠিক নয় তাই আপনাকে মনে সাহস রাখতে হবে। তাই তিনি অনেক কেই পরামর্শ দিচ্ছেন যে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং নিজ বাড়িতেই অবস্থান করুন এবং সরকারের দেয়া লকডাউন মেনে চলুন।সরকারের দেয়া নিয়ম-কানুন যদি আপনি ঠিক ভাবে পালন করতে পারেন তাহলে আপনি হয়তো সুস্থ থাকতে পারবে।

সুভাষ দত্ত দ্য অফনিউজ'কে জানায় যে, একজন করোনা উপসর্গ রোগীর নমুনা সংগ্রহ করতে হলে তার গলা ও নাক থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। আর ইতি ঘটে নানা বিপত্তি এতে করে অনেক রোগী হাঁচি দিয়ে থাকে ,যাতে হাঁচি গিয়ে সরাসরি পিপিই ভিজিয়ে দেয় এতে ঝুঁকিতে থাকতে হয় সব সময় । তাই অনেক সময় হাসপাতাল থেকে গোসল করে বাড়িও যেতে হয়।এত কষ্টের পরেও আমি আমার পেশায় অটুট কারণ আমি এখানে সেবা দিতে এসেছি। ধর্মে বলে জীব সেবাই শিব সেবা । যত্র জীব তত্র শিব।আমি এটাতে বিশ্বাস করি তাই মনে সাহস রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।জীবনে যতদিন বাঁচবো ততদিন মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবো।

তাঁর সহযোদ্ধাদের তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন যে তারাও আমাকে অভয় দিচ্ছে ও অনেক উপকার করছে যার কারণে আমি মনে সাহস রেখে এই কাজ করে যাচ্ছি ও করতে থাকবো।কারণ অনেক ডাক্তার ও নার্স জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেবা  কার্য চালিয়ে যাচ্ছে।

সুভাষ দত্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এস সি করে এম পি এইচ করেছেন। তার স্ত্রী কল্পনা দত্ত বর্তমানে বরগুনা হাসপাতালে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং তার স্ত্রীও তার সাথে এই সেবা কার্য করছে। পারিবারিক জীবনে সুভাষ দত্ত তিন কন্যার পিতা।তার বড় কন্যা বিবাহিত এবং দুই মেয়ে অধ্যায়নরত আছে।

সুভাষ দত্তের পেশাগত আন্তরিকতা ও মানবিকতার বিষয়ে বরগুনা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মোঃ সোহরাব উদ্দিন বলেন নমুনা সংগ্রহের কাজটি সে যতটা ভালোভাবে করতে পারে ততটা অভ্যস্ত হয়ে উঠেনি বরগুনা উপজেলার অনেক হাসপাতাল টেকনোলজিস্ট। তাই এখনও জেলার অন্যান্য উপজেলা হাসপাতালে টেকনোলজিস্ট বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন উপজেলায় গিয়েও তাকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। পেশাগত জীবনে সুভাষ দত্ত অনেক পরিশ্রমী ও নিষ্ঠাবান। সুভাষ দত্তের মত এরকম লোক ঘরে ঘরে জন্ম হোক।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: