দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

     করোনা মোকাবিলায় লক ডাউনের মাঝেই সিউড়ি শহর থেকে ৪১ কিমি দুরে ঝাড়খন্ড সীমান্তে রাজনগর ব্লকের দুটি নদীর মাঝে প্রত্যন্ত  কুরাল মাটি গ্রামের ১৪৮ টি আদিবাসী পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিল সংস্কার ভারতী সিউড়ি শাখা।

     বীরভূমের জেলা সদর সিউড়ি থেকে ৪১ কিমি দুরে ঝাড়খন্ড সীমান্তের প্রত্যন্ত গ্রাম কুরাল মাটি পৌছে যায শিল্পী দের দল টি। রাজ নগর থানার জয় পুর পঞ্চায়েতের অধীন কুড়াল মাটি গ্রাম। সিদ্ধেশ্বরী ও নুন বিল দুটি নদীর মাঝে প্রত্যন্ত এই গ্রাম । যোগাযোগ নেই বললেই চলে। নদী পেরিয়ে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে সেই গ্রামে পৌছতেই আদিবাসী মানুষ গুলির গাল ভরা হাসি।ওরা বললেন, ' বাবু এতদিন কেউ আসে নাই। তুরাই এলি।'

      সারা দেশ জুড়ে যখন একাধিক জায়গায় লকডাউন ভাঙার চেষ্টা, তখন সোসাল ডিসটেনস মেনে সুশৃঙখল ভাবে খাদ্য সামগ্রী আঁচল কিংবা গামছা পেতে নিল ওরা।শিল্পী দল চুন নিয়ে গিয়ে কেটে দিল দাগ। সেই দাগের বাইরে গেল একজন ও। সঙ্গীত শিল্পী সঙ্ঘমিত্রা কবিরাজ বলেন, " আমরা এই লকডাউনে মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানতে পারছি না। অথচ আদিবাসী সমাজের ভাই বোন রা কত সুশৃঙখল। দেখে আমরা অবিভূত।"
     সাংস্কৃতিক সংস্থা সংস্কার ভারতী সিউড়ি শাখার উদ্যোগে শনিবার কুরাল মাটি গ্রামে ১৪৪ জন পরিবারের ৯৪৪ জন বাসিন্দা দের জন্য শিল্পীরা নিয়ে যান ৫ কুইন্টাল চাল, ১০ বস্তা আলু, নুন, তেল, সাবান। গ্রামের বাসিন্দা দেবীশ্বর মারাণ্ডি, খুদিরাম মহুলী, চুরকা হেমরমরা বলেন," দেশে করোনা এসেছে তাই গ্রামে কেউ বেরোচ্ছে না। আমরা দীনমজুরী করে খাই। কাজ নেই। ঘরে চালের টান পরেছে। এই সময় এই সাহায্য পেয়ে আমাদের উপকার হল ।"

    যারা সারা বছর শহর জুড়ে গান বাজনা নিয়ে আনন্দে মেতে থাকে সেই সব শিল্পীরাও এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে থাকতে পেরে তারাও উচছসিত। শিল্পী বনানী সরকার বলেন," আমরা নাচ গান নিয়ে আনন্দে থাকি বছর ভোর। কিন্ত দেশ জুড়ে করোনা পরিস্থিতির মাঝে আমাদের ও কিছু করা উচিত। এই তাগিদ থেকেই আজ আমরা গ্রামে এসেছি যৎসামান্য সাহায্য নিয়ে।"

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: