দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:
ঘরে না ফেরায় দুশ্চিন্তায় কাটছে নাজিরা বিবির

দেবশ্রী মজুমদার, বীরভূম, ০৬ এপ্রিলঃ  অভাবে দিন গুজরান কোনদিন হয়। আবার কোনদিন হয় না। এখন শুধু বাড়ির বারান্দায় ছেলের জন্য দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে নাজিরা বিবির। বাড়ি  বীরভূমের মুরারই-১ ব্লকের আম্ভূয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়।  ৬ মাসে আগে রাজমিস্ত্রির মজদুরির কাজে মুম্বাই গেছে  সেজো ছেলে সেলিম সেখ। ছেলের রোজগারে সংসার চলত এতদিন। ৫ ছেলে তিন মেয়ের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। দুই ছেলে পৃথক থাকে। সেলিমের বাবা নাসির সেখ সবজি বিক্রি করে। ছেলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ আছে নাজিরা বিবির। এখন তিনি চান ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুক।
কিন্তু লকডাউন থাকায় মুম্বাইয়ে আঁটকে বছর আঠাশের সেলিম সেখ। এদিকে ছেলের টাকা না পেয়ে দুঃশ্চিন্তায় পরিবার।  শুধু নিজেদের জন্য নয়, ছেলের জন্যও দুঃশ্চিন্তায় তাঁরা। একবেলা খেয়ে, আরেক বেলা না খেয়ে দিন কাটছে তার। বর্তমানে  সেলিম সেখের ঠিকানা ২৭ নং আলুলিয়া বিল্ডিং, থানা অর্থ নগর, মুম্বাই। সেলিম সেখ বলেন, বীরভূমের নলহাটি এলাকা নিয়ে মোট ২৫ জন আছি আমরা। এখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করতাম। এখন কাজ বন্ধ। রোজগার বন্ধ। কোম্পানি থেকে একবেলা খাবার দেয়। আরেক বেলা কোন দিন খেয়ে না খেয়ে কাটে। ১৫ তারিখ লক ডাউন উঠলে চেষ্টা করবো। খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি। কবে বাড়ি ফিরতে পারবো জানি না।

বাবা নাসির সেখ বলেন, আমার ওই ছেলের রোজগারে সংসার চলতো। এখন খুব অসুবিধায় আছি। সবদিন খাবার জোটে না। এতগুলো পেটের খোরাকি কে দেবে? সবদিন রোজগারপাতি নেই। বাড়িতে যারা ছোট, তাদের কে কাজ দেবে? তবে এসবের থেকেও। এখন শুধু আল্লাহের কাছে একটাই প্রার্থনা, খেতে পাই আর না পাই। আমার ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে দাও।

এব্যাপারে মুরারই-১ ব্লকের বিডিও নিশীথ ভাস্কর পাল বলেন, “ সরকারিভাবে ভিন রাজ্যে আঁটকে থাকা সমস্ত শ্রমিকদের তালিকা পাঠানো হয়েছে নবান্নে। তবুও, আপনি নাম ঠিকানা পাঠান, মিলিয়ে দেখছি”।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment: