করোনা ভাইরাস রুখতে তারাপীঠে যজ্ঞ তৃণমূলের

দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ না যজ্ঞ? শেষে যজ্ঞের জয় যেন " তিমির-বিদার উদার অভ্যুদয়, তোমারি হউক জয়।  তাই অবাক হওয়ার  কিছু নেই উচ্চারিত হলে--- ‘ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে বহ্নের্যোগপীঠায় নমঃ’।  যজ্ঞের কাঠ, ঘি আয়োজন ছিল সবই। তবে, পরিমাণ কত, বলতে ইচ্ছুক নন কেউ। তবে ভিড় জমায়েত ছিল না। সাকূল্যে ৬ জন উপস্থিত ছিলেন। ঢাক গুড় গুড় করে এই অনুষ্ঠানের প্রচার ছিল না। 
তবে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় তৃণমূল যজ্ঞকে ভরসা করায় কেউ কেউ মুখ টিপে হেসেছেন। দেশের সব মন্দির-মসজিদ-গুরুদুয়ার যখন বন্ধ তখন তারাপীঠ শ্মশানে যজ্ঞ করে মুখ্যমন্ত্রীকে শক্তি দেওয়ার জন্য মা তারার কাছে আহ্বান জানাল তৃণমূল। আর এখানেই, কটাক্ষের উৎস।
যদিও তৃণমূলের দাবি, বিজ্ঞানের পাশাপাশি মা তারার ক্ষমতা অপরিসীম। তাই এই কঠিন লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে শক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে যজ্ঞ করা হল শ্মশানে মায়ের আবির্ভাবের জায়গায়। আমাদের বিশ্বাস মা তারা শক্তি যোগাবেন মুখ্যমন্ত্রীকে।

বৃহস্পতিবার তারাপীঠ মহা শ্মশানে যজ্ঞ করল তৃণমূল। উদ্দেশ্য করোনা ভাইরাস থেকে দেশকে মুক্ত করা। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে শক্তি দেওয়ার প্রার্থনা দেওয়া করা হয় যজ্ঞের মাধ্যমে। মূলত তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশেই যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। তবে যজ্ঞস্থলে কোন জমায়েত করতে দেওয়া হয়নি। যজ্ঞের পুরোহিত ছাড়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য সহ  দলের জনা চারেক কর্মকর্তা। যজ্ঞের আয়োজক তৃণমূলের রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “সামাজিক এবং বিজ্ঞানভিত্তিক লড়াইয়ের পাশাপাশি মা তারার শক্তি অপরিসীম। তাই আমরা মা তারার কাছে যজ্ঞের মাধ্যমে প্রার্থনা করলাম পশ্চিমবঙ্গের মমতাময়ী মাকে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে শক্তি দাও, ক্ষমতা দাও। মানুষের পাশে থাকার শক্তি দাও। ভারতবর্ষকে করোনা মুক্ত করো। এই প্রার্থনা করে অনুব্রতর নির্দেশে আমরা যজ্ঞ করলাম”। ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঈশ্বর বিশ্বাসী। তিনি সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করেন। তার ইচ্ছাতেই যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন রাতদিন এক করে যে লড়াই করছেন সেই কাজে তাঁকে আরও শক্তি জোগাতেই যজ্ঞের আয়োজন”। এই যজ্ঞকে কটাক্ষ করে সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, “সারা পৃথিবী এখন সন্ত্রস্ত। প্রধানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন ঘরের মধ্যে থাকুন। চিকিৎসকদের পরামর্শে চলুন। সেই পরিস্থিতে যজ্ঞ করা মানে অসভ্যতামি। যজ্ঞ কোন রাস্তা নয়। আমি আশা করব মুখ্যমন্ত্রী দলের নেতাদের শুভবুদ্ধি দেবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ এখন মেনে চলাই আমাদের কাজ”।