দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

বিশ্ব ভারতীতে বসন্ত উৎসব ধারাবাহিক না হলেও, সাম্প্রতিক কালে বন্ধ হওয়ার ইতিহাস নেই। এবার করোনা ভাইরাসের কারণে সেটা হলো। করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্ক করে বিশ্ব বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন চিঠি দেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তরফ থেকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরামর্শ নিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক করে দেয় এই নির্দেশ নামা। তার পরেই বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ম্যারাথন মিটিংয়ে বসেন। সেখানে অধিকাংশ সদস্যই  উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এবার বসন্ত উৎসব বাতিলের পক্ষে মত দেন।
এদিকে সরকারি তরফে পুরো প্রস্তুতি নিয়ে ফেলে রাজ্য সরকার। এবার বসন্ত উৎসব নিয়ে বিশ্ব বিদ্যালয় নিমরাজি হওয়ার পর রাজ্য সরকার পুরো দায়িত্ব নিয়ে নেয়। আয়োজন ছিল প্রায় শেষের দিকে। এমত অবস্থায় বসন্ত উৎসব বন্ধ হওয়ায় দীর্ঘদিন রিহার্সাল করা পড়ুয়া, শিক্ষকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী মহল হতাশ। বোলপুরের হোটেল ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনেকের মন খারাপ। খবর পেয়ে অনেকেই হোটেল বুকিং বাতিল করতে থাকে।
বিশ্ব ভারতী সূত্রে জানা গেছে, বসন্ত উৎসবের ধারাবাহিকতার ইতিহাস না থাকলেও, এতদিন হয়েছে। ১৯৮১ সালে এক বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে ১৯৮২ সালে তদানীন্তন উপাচার্য অম্লান দত্ত বসন্ত উৎসব বাতিল করার কথা বললেও, নিয়ম রক্ষা করে শেষ পর্যন্ত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সতর্কবার্তায় ইউজিসি পরিষ্কারভাবে চিঠিতে লিখে দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বড় রকম কোনো জমায়েত করা যাবে না। পাশাপাশি চিঠিতে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে যদি বিগত আঠাশ দিনের মধ্যে যে সমস্ত দেশ গুলিতে করোনাভাইরাস ঘটনা ঘটেছে সেই সমস্ত দেশে যদি কোন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী অধ্যাপক কর্মীরা গিয়ে থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করে ১৪ দিনের জন্য আলাদা করে ঘরের মধ্যে নজরে রাখতে হবে। যদি কোন ছাত্রের কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে,  তাহলে সেই ছাত্রের  স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ক্যাম্পাসে রাখা যাবে না। সাবান দিয়ে ধুয়ে হাত পরিষ্কার রাখতে হবে। মুখ রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা যাবে না। প্লাসটিক ব্যাগ বিনে ফেলতে হবে। দরজার হাতল বা নব বারবার ব্যবহৃত হলে সেগুলো জীবাণু মুক্ত করতে হবে।
 খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তরফ থেকে চিঠি আসাকে কেন্দ্র করে বসন্ত উৎসব শান্তিনিকেতনে যেহেতু বড় রকমের পর্যটকের সমাগম হয় সে ক্ষেত্রে কি আদৌ বসন্তোৎসব হবে সে নিয়ে এখন সংশয় দেখা দিয়েছে বিশ্বভারতীর অন্দরে।যদিও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে এ বিষয়ে অফিশিয়ালি কিছু জানানো হয়নি। কর্মী সভার এক আধিকারিক বলেন, এতদিন রিহার্সাল হলো, কিন্তু কি করা যাবে। অন্যদিকে, জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, মাঠ এবং বসন্ত উৎসব বিশ্ব ভারতীর। তাই বসন্ত উৎসব হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে হতো বিশ্ব ভারতীকেই। আমরা শুধু মাত্র সাহায্য করতে পারি, বলেছিলাম।

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours