দেবর্ষি মজুমদার, লেখক, বীরভূম:

ছেলের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরছে বাবা সমর পাল! এদিকে বাড়িতে ঘন ঘন মূর্ছা যাচ্ছেন মা সবিতা পাল।
সমর পাল মুদির দোকান চালান। মা আশা কর্মী। খুব কষ্ট করে এক মাত্র সন্তান শুভ্রজ্যোতি পালকে মানুষ করছিলেন। কিন্তু এক দূর্ঘটনায় সব শেষ!
 শুভ্রজ্যোতি পাল বঙ্গবাসী কলেজে রসায়নের স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধেয় মালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে বাড়ি ফিরছিলেন ওই যুবক। দারজার কাছেই দাঁড়িয়েছিলেন। বালির কাছে এই দূর্ঘটনা ঘটে।  কামরায় দরজার কাছে ছিলেন দুই হকার। আচমকা নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়ে তারা। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর শুরু হয় হাতাহাতি। তাদের হাতাহাতির মাঝে পড়ে যান শুভ্রজ্যোতি। বালি-উত্তরপাড়া স্টেশনের মাঝে আচমকাই হকারদের ধাক্কায় ট্রেন থেকে ছিটকে লাইনে পড়ে যান ওই যুবক। জিআরপি আধিকারিকরা খবর পেয়েই ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।
 মৃতের কাকা শিক্ষক সনাতন পাল বলেন, ফেরার সময় ৩টা ১০ নাগাদ শেষ ফোন করে শুভ্র। ৩-২৫ নাগাদ মালদা ইন্টারসিটিতে উঠে পড়ে। তারপর শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ নলহাটির বাড়িতে হাওড়া জি আর পি থেকে মৃত্যু সংবাদ আসে।
জানা গেছে, নলহাটির ন'পাড়া পঞ্চায়েতের উজিরপুর গ্রামে বাড়ি। নলহাটির  কাঁটা গড়িয়া মোড়ে  ইকরা মিশনে প্রাথমিকে পড়েন তিনি। তারপর বহরমপুর সারগাছি মিশন থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ মার্কস পেয়ে কোলকাতায় বঙ্গবাসী কলেজে রসায়নে সাম্মানিক নিয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন তিনি। পাশাপাশি, আকাশ কোচিং সেন্টারে নিটে বসার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল ডাক্তার হওয়া। কিন্তু লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। ঘটনার জেরে এই মেধাবী ছাত্রের জন্য শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়! খুব মিশুকে ছেলে হিসেবে তাঁর পরিচিতি ছিল এলাকায়!

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours