অতীত ঐতিহ্যের আতসে দুর্গাপুর (পর্ব-১৬২)

ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ফিচার রাইটার, দুর্গাপুর:

দেখতে  দেখতে  দশটা  দিন  পেরিয়ে  গেল! খবরটা  কাশীর  সর্বত্র  ছড়িয়ে  পড়েছে! গোগন রাখার চেষ্টা করেন  নি  পুরন্দর! তিনি  চেয়েছেন  এ  নিয়ে সর্বত্র আলোচনা  হোক! লোকে  জানুক  সামাজিক  বিধান  অস্বীকার  করলে  সমাজ  কি  ধরনের  শাস্তি  দেয়! সমাজপতিরা  শাস্তি  দিতে  অপারগ  হলে  রাজশক্তি  সেই  দ্বায়িত্ব  নিতে  বাধ্য  হয়!  পথে  ঘাটে  এটাই  আলোচ্য  বিষয়! হটীর  কি  ধরনের  শাস্তি  হতে  যাচ্ছে! সকলেই  নিচু স্বরে   আলোচনা  করছে! পুরন্দরের  বাগানবাড়ীতে   তার  ধর্মনষ্ট  হওয়ার  পর  বিবস্র অবস্হায়  গঙ্গায়  স্নান  করিয়ে  সম্পূর্ন নগ্ন  করে  নগ্নপদে  ঢাক ঢোল  বাজিয়ে   শোভাযাত্রা  সহকারে  সারা  জীবনের  জন্য  কাশীর  রন্ডীবাজারের  অন্ধগলিতে  সারা  জীবন  নরক  যন্ত্রনা   ভোগ  করবে!

         কিন্তৃ  পুরন্দর ধুরন্ধর! লোক সমাজে  এটা  রটনা  করলেও  তাঁর  আশঙ্কা - এই  পাশবিক  শোভাযাত্রা  হিতে বিপরীত  হতে পারে! লোকচক্ষুর  আড়ালে  একটি  যুবতী  ধর্ষিতা  হওয়ার  ঘটনা  জনগনের  উপর  সাময়িক  প্রভাব  পড়তে  পারে, ধীরে  ধীরে  বিস্মৃতির  অতলে  তলিয়েও  যাবে! কিন্তু  নগ্ন  একটি  যুবতীকে  প্রকাশ্য  রাজপথে শোভাযাত্রা  করে  নগর  পরিক্রমা  করলে  তার  তীব্র  প্রতিক্রিয়া  হতে  পারে! এই  ঘটনা  মানুষ  সহজে  ভুলবে  না! আর  কাশীতে প্রজাদের  মধ্যে  শুধু পাষন্ডই  নেই  অসংখ্য  জ্ঞানগুনী পন্ডিতও  আছে! তাঁরা  যদি  বিদ্রোহ  করে, তবে  রাজার  গদিও  টলে  যেতে  পারে!তাঁদের  কাছে  অস্ত্র  নেই  কিন্তু  'ব্রক্ষ্মাস্ত্র  ' আছে   সমবেতভাবে রাজার  বিরূদ্ধে  নিদান  হাঁকার!
               পুরন্দর  বিকল্প  ব্যবস্হা  করেছে! পক্ষকাল  ঐ মেয়েটিকে  বাগানবাড়ীর  একটি  কুটরীতে  আটকে  রাখা  হবে! প্রতি  সন্ধ্যায়  পুরন্দরের  শয়নকক্ষে  হাজির  করা  হবে! পক্ষকাল  নিত্য ধর্ষতা  হবে! অসহায়  ধর্ষিতা নারীর  চিৎকার  কক্ষের  মধ্যেই  প্রতিধ্বনিত  হবে ! বাইরের  কেউ  শুনতে  পাবে  না!
          পক্ষকালে  তার  মাথায়  একটু  চুল  গজালেই  রাতের  অন্ধকারে  তাকে  পৌঁছে  দেওয়া  হবে  এলাহাবাদ  ক্যান্টনম্যান্টে  মেজর  কিলপ্যাট্রিকের  কাছে উপঢৌকন  হিসাবে!  মেজর  কিলপ্যাট্রিক  পুরন্দরের  পাঠানো  ' ক্রীতদাসী' পেয়ে  খুশী  হয়ে  বুঝবে  এই  কালা  আদমীর  দেশে  পদ্মও  ফোটে...(চলবে)