প্রবীর সিকদার, লেখক ও সম্পাদক, দৈনিক বাংলা ৭১, বাংলাদেশ:

আল্লামা নুরুল ইসলাম কাসেমী এ কী বলছেন! ভারতীয় হিন্দুদের এনে বসানো হচ্ছে সেনাবাহিনী পুলিশ বাহিনী ডিজিএফআই এনএস আই-এর বড় বড় চেয়ারে!

হাঁ, বলছিলাম আল্লামা নুরুল ইসলাম কাসেমীর কথা! তিনি ও তার সহযোগীরা ওয়াজের নামে দেশে সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়িয়ে চলেছেন মহাসমারোহে! এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কখনোই! অথচ সেক্যুলার চিন্তার শরিয়ত বয়াতীকে কারানির্যাতন সইতে হয়! প্রধানমন্ত্রী বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছেন, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ! অথচ নুরুল ইসলাম কাসেমীর মতো বিতর্কিত ওয়াজিরা প্রকাশ্যে ধর্মনিরপেক্ষতাকে অবজ্ঞা করে অন্য ধর্ম ও অন্য ধর্মের অনুসারীদের বিরুদ্ধে বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেশটাকে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন; অথচ পরিতাপের বিষয়, তাদের বিরুদ্ধে সরকারিভাবে কিংবা সামাজিকভাবে কোনও একশন নেওয়া হয় না!
প্রিয় পাঠক, নুরুল ইসলাম কাসেমী বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলের বক্তৃতায় ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব অপপ্রচার করেন! তার বক্তৃতায় হিন্দু সম্প্রদায় ও প্রতিবেশি দেশ ভারতকে সমার্থক হিসেবে বিবেচনা করেন! তার একটি ওয়াজ নিয়ে আমাকে কিছু বলতেই হচ্ছে! আমি যে ওয়াজটির কথা বলছি, সেই ওয়াজের অংশবিশেষ এই লেখার শেষে সংযুক্ত করে দিলাম! এটি দেখুন শুনুন! ভয়ঙ্কর সব মিথ্যা কথা সে ধর্মের দোহাই দিয়ে চালিয়ে দিচ্ছেন! মানুষ সেটা শুনছেন, কারো কোনও প্রতিক্রিয়া নেই! তিনি এই ওয়াজের অংশ বিশেষে যা বলেছেন, তার সার কথা তুলে ধরছি:

'দেশের কখন কী হয় বলা যায় না! দেশ ও সরকারের ডালে ডালে হিন্দুদের বসানো হয়েছে! সেনাবাহিনীতে কখনো হিন্দুদের নিয়োগ দেওয়া হতো না! এখন সেনাবাহিনীর বড় বড় পদে হিন্দুদের বসানো হয়েছে! ডিজিএফআই এনএসআই-তে কখনো হিন্দুদের নিয়োগ হতো না; এখন সেখানেও বড় বড় পদে হিন্দুরা! পুলিশেও একই অবস্থা! দেশের প্রত্যেক সেক্টরে হিন্দুরা ভালো ভালো পদ পেয়েছেন! শুধু কী তাই, ভারতের হিন্দুদের বাংলাদেশী সাজিয়ে সেনা ও পুলিশসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে! দেশের ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া প্রিন্ট মিডিয়া সব ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে! সকলেই সাবধান থাকবেন; কখন কোন বিপদ আসে বলা যায় না! যেকোনো সময় জবাই শুরু হয়ে যেতে পারে! লুঙ্গি খুলে খুলে দেখবে, আর মুসলমান হলেই জবাই!'

সুপ্রিয় পাঠক , বিতর্কিত ওয়াজি নুরুল ইসলাম কাসেমী প্রকাশ্য সমাবেশে কী মিথ্যা কী অসভ্য কথা অবলীলায় বলেন! কোনও প্রতিবাদ নেই, কোনও শাস্তির উদ্যোগ নেই! দেশ কী চলবে এভাবেই! বঙ্গবন্ধুর একাত্তরের বাংলাদেশ তো এই কাসেমীদের নয়!
আর কিছু না হোক, মিথ্যা ও উস্কানি মূলক বক্তব্যের জন্য তো শাস্তি হওয়া উচিত! সেক্যুলার চিন্তার ধারক বাহক ও মানবিক সমাজ গঠনের কারিগর শরিয়ত বয়াতী জেলে থাকবে, আর সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাণ্ডারি আল্লামা নুরুল ইসলাম কাসেমীরা দাপটে মিথ্যাচার চালিয়ে যাবেন, এটি মোটেই সুশাসনের ইঙ্গিত নয়! তবে কী উল্টো রথে একাত্তরের বাংলাদেশ?

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours