শ্বেতা ঘোষ, ফিচার রাইটার, নৈহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা:

'বসন্ত এসে গেছে' গানটা কেমন জানি খুব নাড়া দিচ্ছে। কিন্তু এই বাসন্তী বেলায় কিসের ইঙ্গিত এসেছে আমাদের ভাবনার অলিন্দে। নতুন প্রেম নাকি লটারি মিল গিয়া অথবা কুছ কুছ হোতা হ্যায়। কোনটা? কোনওটাই নয় দোস্ত। আসলে ভাষা দিবসের দিন দাম্পত্যের বসন্ত এসেছিল। ২৪তম ঋতু চক্রের। গুরু ফের নিশ্চয় প্রশ্ন কার দাম্পত্যের আবার ঝুড়ি খুলছেন।
ধীরে বন্ধু ধীরে। সব বলছি। শুক্রবার ২৪ তম বিবাহ বার্ষিকী পালন করলেন আয়ুব আনসারি। দুর্গাপুরের মুচিপাড়ার এই বাসিন্দার বিবিজানের নাম রেহেনা খাতুন।  য্যা বাবা! এটাও খবর। হাহাহা। হেহেহে। আরে বাবা এতো বেশি ভাগ ফ্যামিলির কমন ফিচার। দাদা খবরের সংকুলান হলে এরকম সংবাদ প্লিজ পরিবেশন করবেন না। উফ্ একটু থামবেন কি? আমায় পুরোটা আগে লিখতে দিন তারপর না হয় সমালোচনা করুন। এই আয়ুব আনসারি পেশায় আইনজীবী। রাজনীতির বাম মনষ্ক মানুষ হলেও বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের সঙ্গে তাঁর অকৃত্রিম সখ্যতা প্রশ্নাতীত। তাঁর মতে, রাজনৈতিক একটা বিশ্বাস আমার আছে। যা ব্যাক্তিগত বিশ্বাস। আর সকলের সঙ্গে সখ্যতা এমনকি নানা দলের বিশ্বাসী মানুষের বন্ধুত্ব আমার অন্তরের মেলামেশা। আমরা যে সবাই এই সমাজের মানুষ। সবাইকে ছেড়ে যাব কোথায় বলুন তো?
এহেন আইনজীবী শুধুমাত্র কথার ফুলঝুড়িতে বহির্জগৎ কাঁপান না বাতেলা সর্বস্ব হয়ে। আক্ষরিক অর্থে তিনি এলাকার সমাজসেবী হিসেবেও সুপরিচিত স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাছে। হ্যাঁ এই উকিলবাবুর ২৪ তম ফাগুন বিবাহতে তিনি দৃষ্টান্ত হবেন না এটা ভাবতেই কেমন লাগে। তাই শুক্রবার তিনি সোজা চলে গেলেন এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। না না। তিনি কিন্তু মিডিয়ার ক্যামেরা পারসেনদের সঙ্গে নিয়ে যাননি। অন্তত প্রচারের আলোর ফোকাস পাওয়ার আজকালকার এই লেটেস্ট ট্রেন্ডি থেকে তিনি দূরেই থেকেছেন। তাই এই বিষয়টা জানতেই ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেল আরকি।
একদম চুপিসারে তিনি গেলেন ব্লাড ব্যাঙ্কে। সঙ্গে দুই তিন জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন মাত্র। এরপর তিনি কি করলেন জানেন? ২৪ তম বিবাহ বার্ষিকীতে সেরে ফেললেন তাঁর জীবনের ২৬ তম রক্তদান পর্ব। হ্যাঁ হ্যাঁ একদম ঠিক পড়ছেন এই নিয়ে তিনি ২৬ বার রক্তবিলি করে ফেলেছেন। 
এই রক্তদান সম্পর্কে অপর সমাজসেবী কবি ঘোষ ও রক্তদাতার অর্ধাঙ্গীনি রেহেনা খাতুন বলেন, 'আয়ুব আনসারি মানুষটি এরকম। মানব সেবাধর্ম তাঁর কাছে একমাত্র এজেন্ডা। এই মানুষটাই ভাবতে পারে বিবাহ বার্ষিক পালন মানে রক্তদান।' আর যাকে নিয়ে এত কথা সেই আইনজীবীর বক্তব্য, 'আমার মনে হল আমার দাম্পত্যের এই বিশেষ দিনে আমার সামাজিক ভাবে কিছু করা নৈতিক কর্তব্য। তাই রক্তদান করলাম।'
আচ্ছা এবার বলুন এত প্রশ্ন যখন উঠেছিল পড়তে গিয়ে তখন পরিশেষে উত্তর নিশ্চয় মিলেছে। কি সংবাদটা লিখে ভুল করিনি তো? আশা করি নিশ্চয় বলবেন না, এটা গতানুগতিক খবর! তাই তো বন্ধু আমার?

Share To:

THE OFFNEWS

Post A Comment:

0 comments so far,add yours